প্রকৃতি চিনতে সুন্দরবনে ‘উইন্টার ক্যাম্প’

বড়দিন থেকে শুরু হওয়া আবাসিক এই ক্যাম্প চলবে আজ, সোমবার পর্যন্ত। সুন্দরবনের প্রত্যন্ত এলাকায় একটি উচ্চমাধ্যমিক স্কুলে চলছে ক্যাম্পটি। যেখানে সিলেবাসের বাইরে বেরিয়ে ছোটরা ইচ্ছে মতো ছুটি কাটাচ্ছে।

Advertisement

চৈতালি বিশ্বাস

শেষ আপডেট: ৩১ ডিসেম্বর ২০১৮ ০১:৪৮
Share:

—প্রতীকী ছবি।

আন্তরিকতাকে ‘ইউএসপি’ করেই গ্রামের পড়ুয়াদের জন্য এ বার ‘উইন্টার ক্যাম্প’-এর আয়োজন করল কলকাতার এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। এ কাজে হাত মিলিয়েছেন হিঙ্গলগঞ্জের কনকনগর এস ডি ইনস্টিটিউশনের শিক্ষকেরাও।

Advertisement

বড়দিন থেকে শুরু হওয়া আবাসিক এই ক্যাম্প চলবে আজ, সোমবার পর্যন্ত। সুন্দরবনের প্রত্যন্ত এলাকায় একটি উচ্চমাধ্যমিক স্কুলে চলছে ক্যাম্পটি। যেখানে সিলেবাসের বাইরে বেরিয়ে ছোটরা ইচ্ছে মতো ছুটি কাটাচ্ছে। শীতের আমেজে সমবয়সিরা মিলে গল্প-আড্ডার পাশাপাশি মেতে থাকছে অচেনা খেলায়। স্কুলের প্রধান শিক্ষক পুলক রায়চৌধুরী জানালেন, মূলত পড়ুয়াদের বদ্ধ পরিবেশ থেকে বার করে আনাই এই ক্যাম্পের লক্ষ্য। তিনি বলেন, ‘‘সাধারণ মানুষের থেকে চাঁদা তুলে প্রায় এক লক্ষ টাকা উঠেছে। আয়োজক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাটি থেকে বাচ্চাদের জন্য প্রশিক্ষকেরা এসেছেন। এখানে কবাডি, ক্যারাটে, পরিবেশবিদ্যা, এরোবিক্সের মতো বিভিন্ন বিষয় শেখানো হচ্ছে। স্থানীয় পড়ুয়ারা ছাড়াও বর্ধমান, বারাসত, হুগলি থেকেও পড়ুয়ারা এসেছে।’’

স্কুল সূত্রের খবর, ‘উইন্টার ক্যাম্প’-এ সাড়ে ছ’শো-সাতশো পড়ুয়ার রাত্রিবাসের আয়োজন হয়েছে স্কুল ভবনেই। ক্যাম্পের পড়ুয়াদের সাত দিনের খাওয়ার জন্য ১৫ কুইন্টাল চাল দেওয়া হয়েছে স্থানীয় স্যান্ডেলের বিল গ্রাম পঞ্চায়েতের তরফে। এ ছাড়া স্থানীয়দের কেউ এক টিন তেল, কেউ বা এক বস্তা ডাল দিয়ে এগিয়ে এসেছেন। উদ্যোক্তারা জানাচ্ছেন, আর্থিক ভাবে পিছিয়ে থাকা পরিবারের পড়ুয়ারা এমনিতেও বড়দিনের ছুটি উপভোগ করা বা ক্যাম্পে যোগ দেওয়ার সুযোগ পায় না। তাদের আনন্দের সুযোগ করে দিতে এই আয়োজন। সাত দিনের থাকা-খাওয়া বাবদ ক্যাম্পে রেজিস্ট্রেশনের খরচ তিনশো টাকা। তবে যে সব বাচ্চার পরিবার ওই টাকা দিতে পারেনি, তারাও ক্যাম্পে থাকা-খাওয়ার সুবিধা পাচ্ছে।

Advertisement

পুলকবাবু জানাচ্ছেন, সর্বশিক্ষা মিশনের অন্তর্ভুক্ত কয়েক জন পড়ুয়াকে কলকাতা থেকে আনার ভাবনা থাকলেও তাদের রাত্রিবাসের অনুমতি না মেলায় সম্ভব হয়নি। কলকাতার একটি স্কুলের সপ্তম শ্রেণির পড়ুয়া অন্তরীপ সিদ্ধান্তও যোগ দিয়েছে ওই ক্যাম্পে। কসবার বোসপুকুরের বাসিন্দা অন্তরীপের বাবা সমীর সিদ্ধান্তকে প্রশ্ন করা হয়েছিল এত দূরে ছেলেকে ছাড়তে ভয় হয়নি? তিনি বলেন, ‘‘চিন্তা ছিল। তবু চেয়েছিলাম ছেলে যাক। প্রকৃতি-পরিবেশ চিনুক। ওদের এত বড় স্কুল, অথচ খেলার মাঠ নেই। তাই ওখানে গিয়ে নতুন বন্ধু আর নতুন নতুন খেলার সঙ্গে পরিচয় হলে মনের বিকাশও হবে।’’

নীল আকাশের নীচে সবুজের গালিচায় ছুটে বেড়ানো রঙিন প্রজাপতিরা কিন্তু বাড়ি থেকে দূরে থেকেও উচ্ছল। কারণ ওরা যে ‘সব পেয়েছির দেশে’!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন