পরীক্ষা করাতে গিয়ে অসুস্থ তরুণ, তদন্ত পিজিতে

পরিবারের দাবি, ওই জুনিয়র চিকিৎসককে দেবমাল্যের হঠাৎ অজ্ঞান হয়ে যাওয়া নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি জানিয়েছিলেন, শারীরিক পরীক্ষার জন্য দেবমাল্যের শরীর থেকে রক্ত নেওয়া হয়েছিল।

Advertisement

তানিয়া বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ১৪ ডিসেম্বর ২০১৭ ০২:৫৪
Share:

ফাইল চিত্র।

চিকিৎসকের কাছে গিয়ে শারীরিক পরীক্ষা করানোর সময়ে হঠাৎ অজ্ঞান হয়ে গিয়েছিলেন ভবানীপুরের এক তরুণ। এসএসকেএম হাসপাতালের ইউএসজি রুমে ওই ঘটনার পরে সেই তরুণের পরিবারের অভিযোগ, সামান্য কিছু পরীক্ষা করাতে গিয়ে কেন ওই তরুণ অজ্ঞান হয়ে পড়লেন, তার বিশ্বাসযোগ্য কোনও উত্তর দিতে পারেননি কর্তব্যরত চিকিৎসক। তাঁরা এই ঘটনার লিখিত অভিযোগ করেছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, ওই তরুণের অজ্ঞান হয়ে যাওয়া তাঁদের কাছেও ‘রহস্যজনক’। তাই ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।

Advertisement

ওই তরুণের পরিবারের লিখিত অভিযোগ থেকে জানা গিয়েছে, এসএসকেএম হাসপাতালের রেডিওলজি বিভাগের এক জুনিয়র চিকিৎসক ১২ নভেম্বর সন্ধ্যায় যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ওই ছাত্রকে ইউএসজি রুমে নিয়ে যান। ঘণ্টাখানেক পরে তাঁর মাকে ওই চিকিৎসক জানান, ছেলে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। ইউএসজি রুমে ঢুকে তাঁর মা দেখেন, ছেলে অচৈতন্য হয়ে পড়ে আছেন। এর পরে হাসপাতালের কর্মী ও জুনিয়র চিকিৎসকদের
সাহায্যে তাঁকে জরুরি বিভাগে নিয়ে যাওয়া হয়। জ্ঞান ফেরানোর ওষুধ দেওয়া হয়। পরের দিন, অর্থাৎ সোমবার জ্ঞান ফেরে দেবমাল্য দত্তচৌধুরী নামে ওই তরুণের।

দেবমাল্যের মা মিঠুদেবীর অভিযোগ, এসএসকেএম হাসপাতালের ইউএসজি রুমে তাঁর ছেলের সঙ্গে অনৈতিক কিছু করেছেন কর্তব্যরত জুনিয়র ডাক্তার। এই অভিযোগ সম্পর্কে হাসপাতালের এক শীর্ষ কর্তা জানান, রেডিওলজি বিভাগের জুনিয়র ডাক্তারের বিরুদ্ধে অভিযোগের তদন্ত চলছে। দেবমাল্যের কিছু শারীরিক পরীক্ষা করানো হয়েছে। সেই রিপোর্ট হাতে পেলে তবেই বোঝা যাবে, ওই সন্ধ্যায় তাঁর সঙ্গে কী ঘটেছিল।

Advertisement

হাসপাতালকে দেওয়া লিখিত অভিযোগপত্র থেকে জানা গিয়েছে, কয়েক মাস ধরে পিঠের যন্ত্রণায় ভুগছেন দেবমাল্য। গত ৭ নভেম্বর এসএসকেএম হাসপাতালের অস্থি বিভাগে দেখাতে যান তিনি। শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার পরে চিকিৎসক জানান, তাঁকে রিউম্যাটোলজি বিভাগে দেখাতে হবে। প্রয়োজনীয় ডাক্তারি পরীক্ষার পরে তাঁকে চিকিৎসক এমআরআই করানোর পরামর্শ দিয়েছিলেন। হাসপাতাল থেকে ফোন করে ওই তরুণের পরিবারকে জানানো হয়েছিল, ১৫ নভেম্বর তাঁর এমআরআই-এর দিন নির্ধারিত হয়েছে। কিন্তু ১২ নভেম্বর, রবিবার হাসপাতালের এক জুনিয়র চিকিৎসক ফোন করে জানান, দিন পরিবর্তিত হয়েছে। রবিবার সন্ধ্যাতেই তাঁকে হাসপাতালে যেতে হবে।

পরিবারের দাবি, ওই জুনিয়র চিকিৎসককে দেবমাল্যের হঠাৎ অজ্ঞান হয়ে যাওয়া নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি জানিয়েছিলেন, শারীরিক পরীক্ষার জন্য দেবমাল্যের শরীর থেকে রক্ত নেওয়া হয়েছিল। তখনই তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। মিঠুদেবীর কথায়, ‘‘সুস্থ ছেলে সামান্য একটা পরীক্ষা করাতে গিয়ে অজ্ঞান হয়ে গেল! কী ভাবে হল, সেটাও তো ঠিক মতো বলতে পারছেন না। নিশ্চয়ই ওর সঙ্গে খারাপ কিছু ঘটেছে। তদন্ত হলে সবটা প্রমাণ হবে।’’ ওই তরুণের অভিযোগ, ইউএসজি রুমে নিয়ে যাওয়ার পরে তাঁকে একটি ইঞ্জেকশন দিয়েছিলেন অভিযুক্ত জুনিয়র চিকিৎসক। তার পরে কী হয়েছিল, তাঁর মনে নেই।

এসএসকেএম হাসপাতালের অধিকর্তা অজয়কুমার রায় বলেন, ‘‘তদন্ত চলছে। প্রমাণ মিললে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ রেডিওলজি বিভাগের প্রধান উৎপলেন্দু দাস এ বিষয়ে মন্তব্য করতে চাননি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন