শেষ বার রবিনসন স্ট্রিটের বাড়িতে। —ফাইল চিত্র।
রবিনসন স্ট্রিট কঙ্কাল কাণ্ডের মূল অভিযুক্ত পার্থ দের অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে। তিনি আত্মহত্যা করেছেন বলেই পুলিশের প্রাথমিক অনুমান। ফ্ল্যাটের বাথরুম থেকে মঙ্গলবার সকালে তাঁর অর্ধদগ্ধ দেহ উদ্ধার হয়েছে। ওয়াটগঞ্জ এলাকার যে অভিজাত আবাসনে সম্প্রতি পার্থ দে থাকছিলেন, সেই আবাসনের অন্য বাসিন্দাদের পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করছে। ২০১৫ সালে রবিনসন স্ট্রিটে পার্থ দে’র বাড়ি থেকে তাঁর বাবার অগ্নিদগ্ধ মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছিল। উদ্ধার হয়েছিল পার্থ’র দিদি দেবযানীর কঙ্কালও। এর পর প্রথমে হাজতে এবং পরে পাভলভ মানসিক হাসপাতালে দীর্ঘদিন কাটিয়ে পার্থ আবার স্বাভাবিক জীবনে ফিরেছিলেন। কিন্তু ওয়াটগঞ্জের ফ্ল্যাটে মঙ্গলবার তাঁর অস্বাভাবিক মৃত্যু ঘটল।
ওয়াটগঞ্জের আবাসনে পার্থ দে’র ফ্ল্যাটের সামনে তদন্তকারীরা। —নিজস্ব চিত্র।
মঙ্গলবার সকালে পার্থ দে’র ফ্ল্যাট থেকে ধোঁয়া বেরতে দেখা যাচ্ছিল। পুলিশে খবর যায়। ঘটনাস্থলে পৌঁছে পুলিশ দেখতে পায়, ফ্ল্যাটের ভিতরে আগুন জ্বলছে, অনেক জিনিপত্রই পুড়ে গিয়েছে। পার্থদে’র নিথর দেহ বাথরুমের মেঝেতে লুটিয়ে পড়ে ছিল। দেহ আংশিক দগ্ধ। ফ্ল্যাট থেকে পেট্রলের বোতলও পেয়েছে পুলিশ। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, পার্থ আত্মহত্যাই করেছেন। ফ্ল্যাটে আগুন লাগানোর পর তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত হন বলেও পুলিশ মনে করছে। তবে মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে ময়না তদন্তের আগে কোনও চূড়ান্ত মন্তব্য করতে পুলিশ রাজি হয়নি।
আরও পড়ুন: কোথায় গেল শিশু পাচারের বিপুল সম্পদ
পার্থ দে-কে আদালতই মানসিক হাসপাতালে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছিল। দিদি দেবযানীর মৃত্যুর খবর পার্থরা গোপন রেখেছিলেন। ঘরের মধ্যেই দেবযানীর দেহ পচে নষ্ট হয়ে কঙ্কালে পরিণত হয়। পরে পার্থর বাবা অরবিন্দ দে পুড়ে মারা যান। সে খবরও পার্থ গোপনই রেখেছিলেন। কিন্তু শেক্সপীয়র সরণি থানার পুলিশ অরবিন্দ দে’র অগ্নিদগ্ধ এবং বিকৃত দেহ উদ্ধার করার পর ঘটনা প্রকাশ্যে আসে। পার্থকে গের্ফতার করা হয়। কিন্তু পার্থ দে’র মানসিক অবস্থা স্থিতিশীল নয় বলে জানিয়ে তাঁকে পাভলভ মানসিক হাসপাতালে পাঠানোর নির্দেশ দেয় আদালত। পাভলভে দীর্ঘ চিকিৎসার পর সুস্থ হয়ে তিনি ছাড়া পেয়েছিলেন। তার পর তিনি মাদার হাউজে থাকছিলেন। মুক্তির পর কিছু দিন মাদার হাউজে ছিলেন। তার পরে চলে যান ওয়াটগঞ্জের আবাসনে।