ফেরার হয়েও তোলা আদায় গোপালের

পুলিশের দাবি, তার খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। অথচ নাগালের বাইরে থেকেও গোপাল তিওয়ারি যে কলকাতায় তোলাবাজির কারবার দিব্যি চালু রেখেছে, তার শাগরেদ দিলীপ সোনকারই তা ফাঁস করে দিল! বৃহস্পতিবার রাতে জোড়াবাগানে ধরা পড়েছে দিলীপ। লালবাজারের খবর: জেরায় দিলীপ জানিয়েছে, গত এক মাসে তার মতো আরও কিছু শাগরেদের মাধ্যমে উত্তর-পশ্চিম ভারতের এক শহরে বসে মধ্য কলকাতার বেশ কিছু ব্যবসায়ীর কাছ থেকে তোলা তুলেছে গোপাল। তোলাবাজির টাকা শাগরেদরা হাওয়ালা মারফত ‘গুরু’র কাছে পাঠিয়েও দিয়েছে নিয়মিত। ‘‘দিলীপের মুখ থেকে এখন জানার চেষ্টা চলছে, গোপাল ঠিক কোথায় গা ঢাকা দিয়েছে।’’— বলেন কলকাতা পুলিশের এক গোয়েন্দা-কর্তা।

Advertisement

শিবাজী দে সরকার

শেষ আপডেট: ২৩ মে ২০১৫ ০০:২৩
Share:

পুলিশের দাবি, তার খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। অথচ নাগালের বাইরে থেকেও গোপাল তিওয়ারি যে কলকাতায় তোলাবাজির কারবার দিব্যি চালু রেখেছে, তার শাগরেদ দিলীপ সোনকারই তা ফাঁস করে দিল!

Advertisement

বৃহস্পতিবার রাতে জোড়াবাগানে ধরা পড়েছে দিলীপ। লালবাজারের খবর: জেরায় দিলীপ জানিয়েছে, গত এক মাসে তার মতো আরও কিছু শাগরেদের মাধ্যমে উত্তর-পশ্চিম ভারতের এক শহরে বসে মধ্য কলকাতার বেশ কিছু ব্যবসায়ীর কাছ থেকে তোলা তুলেছে গোপাল। তোলাবাজির টাকা শাগরেদরা হাওয়ালা মারফত ‘গুরু’র কাছে পাঠিয়েও দিয়েছে নিয়মিত। ‘‘দিলীপের মুখ থেকে এখন জানার চেষ্টা চলছে, গোপাল ঠিক কোথায় গা ঢাকা দিয়েছে।’’— বলেন কলকাতা পুলিশের এক গোয়েন্দা-কর্তা।

পুলিশ-সূত্রের দাবি, মধ্য কলকাতা, বিশেষত বড়বাজার তল্লাটে তোলাবাজি করাই গোপাল তিওয়ারির মূল পেশা। শুধু তা-ই নয়, যখনই যে দল সরকারে, তার নেতাদের কারও না-কারও সঙ্গে তার মাখামাখি দেখা গিয়েছে। কলকাতা পুলিশের অন্দরেও গোপালের যোগাযোগ আছে বলে অভিযোগ। বস্তুত পুলিশের নিচুতলার অনেকে বলছেন, গত ১৮ এপ্রিল গিরিশ পার্কে এক সাব ইনস্পেক্টরকে গুলি করার ঘটনায় অন্যতম অভিযুক্ত গোপাল যে পুলিশের চোখে ধুলো দিয়ে পালাতে পারল, তা গোয়েন্দা-পুলিশেরই একাংশের মদতে।

Advertisement

তবে এ বার দিলীপের সূত্রে গোপালের হদিস মিলতে পারে বলে পুলিশের আশা। কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা-প্রধান পল্লবকান্তি ঘোষ শুক্রবার বলেন, ‘‘আমরা প্রমাণ পেয়েছি, দিলীপ গোপালের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছিল।’’ গিরিশ পার্ক-কাণ্ডে অবশ্য দিলীপের নাম ওঠেনি। তাকে ধরা হয়েছে অস্ত্র-আইনে।

গোয়েন্দাদের অনুমান, এক মাসের বেশি সময় ধরে গা ঢাকা দিয়ে থাকতে থাকতে গোপালের পকেটে টান পড়েছে। তাই গিরিশ পার্ক-কাণ্ডের বাইরে থাকা দিলীপের মতো কিছু শাগরেদকে সে তোলাবাজির কাজে লাগায়। জানা গিয়েছে, বাইরে থেকে গোপাল নিজেই ব্যবসায়ীদের ফোন করে টাকা চাইত। রফা হয়ে গেলে দিলীপেরা গিয়ে টাকা নিয়ে আসত, যার কিছুটা দেওয়া হচ্ছিল গোপালের পরিবারের হাতে, বাকিটা হাওয়ালা-পথে সোজা গোপালের কাছে। তা দিলীপ-গোপাল যোগাযোগের কথা জানা গেল কী করে?

লালবাজারের দাবি: গোপালের হাঁড়ির খবর জোগাড়ের লক্ষ্যে বাছাই করা কিছু স্থানীয় চুনোপুঁটি দুষ্কৃতীকে মাঠে নামানো হয়েছিল। তারাই এসে জানিয়েছে, গোপালের হয়ে তোলাবাজি করছে দিলীপ।

প্রসঙ্গত, দিলীপের ভাই রামুয়া ওরফে অজয় সোনকার হল গিরিশ পার্ক-কাণ্ডে অন্যতম অভিযুক্ত। সে-ও ফেরার। গোপালের সঙ্গে রামুয়ার বিরুদ্ধেও আদালত গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে। পাশাপাশি লালবাজারের খবর, দশ বছর আগে বড়বাজারে গুলিচালনার মামলায় গোপাল তিওয়ারি সুপ্রিম কোর্টে যে শর্তাধীন জামিন পেয়েছিল, তা বাতিল করতে কলকাতা পুলিশ এখন কোমর বেঁধেছে। এ ব্যাপারে বৃহস্পতিবার লালবাজারের তরফে আবেদন দাখিল হয়েছে ব্যাঙ্কশাল কোর্টে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন