দুমড়েমুচড়ে: দুর্ঘটনাগ্রস্ত গাড়িটি। রবিবার, প্রগতি ময়দান থানা চত্বরে। নিজস্ব চিত্র
দোমড়ানো-মোচড়ানো গাড়িটার উইন্ড স্ক্রিন ভাঙা। ইঞ্জিন অনেকটা ভিতরে ঢুকে এসেছে। ঘটনার তীব্রতায় এয়ার ব্যাগও খুলে ফেটে গিয়েছে। তার মধ্যেই নজরে পড়ে উৎসব ফেরত সওয়ারিদের নানা সম্বল। চালকের পাশের আসনে পড়ে রয়েছে ‘স্নো-স্প্রে’র খালি কৌটো, চাপচাপ রক্ত মাখা সান্তা-টুপি!
বর্ষবরণের আগে শনিবার গভীর রাতে ফের দুর্ঘটনা ঘটল ই এম বাইপাসে। দ্রুতগতিতে থাকা গাড়ি ধাক্কা মারে মেট্রো প্রকল্পের কাজের জন্য ব্যবহৃত লোহার রেলিংয়ে। তবে কোনওমতে রক্ষা পেয়েছেন গাড়ির চালক রূপক সাহা এবং সওয়ারি আনসার আলি। পুলিশ জানায়, তাঁদের বয়স যথাক্রমে ৩০ এবং ২৪ বছর। দু’জনকেই বাইপাসের ধারের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। রবিবার দুপুরে তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। গাড়ির এয়ার ব্যাগ তাঁদের বাঁচিয়ে দিয়েছে বলেই মত চিকিৎসকদের।
পুলিশের অনুমান, শনিবার রাতে কোনও পার্টি থেকে ফিরছিলেন রূপকেরা। গাড়িটি সায়েন্স সিটির দিক থেকে গড়িয়ার দিকে যাচ্ছিল। রাত ২টো ৪০ মিনিট নাগাদ সেটি পঞ্চান্নগ্রামের কাছে লোহার রেলিংয়ে ধাক্কা মেরে উল্টে যায়। ওই জায়গায় মেট্রোর কাজের জন্য লোহার রেলিং দিয়ে রাস্তার মাঝের কিছু অংশ ঘেরা রয়েছে। কর্তব্যরত ট্র্যাফিক পুলিশেরাই রূপকদের উদ্ধার করেন। পুলিশ জানায়, উল্টে যাওয়া গাড়ি সোজা করে গ্যাস কাটার দিয়ে কেটে সওয়ারিদের বার করা হয়।
এ দিনের ঘটনায় ফের রাতের শহরের যান নিয়ন্ত্রণ নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। কয়েক দিন আগেই খবরের শিরোনাম হয়েছিল, বাইপাসে গাড়ির লাগামহীন গতি। অভিযোগ, বাইপাসের একাধিক জায়গায় গতি মাপার যন্ত্র বসানো থাকলেও তা মানেন না প্রায় কেউই। একাংশের বক্তব্য ছিল, যেহেতু সামান্য জরিমানা দিয়েই বেপরোয়া গাড়িচালকেরা পার পেয়ে যান, তাই গতি নিয়ন্ত্রণের নিয়মকে পাত্তা দেন না। রূপকদের গাড়ির গতিও অত্যন্ত বেশি ছিল বলে অনুমান পুলিশের। চালক মত্ত ছিলেন কি না, তা দেখা হচ্ছে।
এ দিনের ঘটনা মনে করিয়ে দিয়েছে পরমা আইল্যান্ডের কাছের আর একটি দুর্ঘটনার কথাও। পার্টি ফেরত এক ফ্যাশন ডিজাইনারের গা়ড়ি এক ব্যক্তিকে পিষে দেন বলে অভিযোগ। জানা যায়, ছেলের বিয়ের আয়োজনের ব্যবস্থার জন্য বাড়তি ‘ডিউটি’ করতে রবিবার কর্মস্থলে যাচ্ছিলেন ওই ব্যক্তি।