এই ধরনের খবরের ক্ষেত্রে আসল ছবি প্রকাশে আইনি বাধা থাকে। —প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।
এক বন্ধুর চিকিৎসার জন্য এসএসকেএম হাসপাতালে গিয়েছিলেন কিশোরীকে ধর্ষণে অভিযুক্ত যুবক। ডাক্তারের মতো পোশাক পরেছিলেন বিশেষ কারণে। জেরার মুখে তদন্তকারীদের এমনটাই তিনি জানিয়েছেন বলে খবর। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, তদন্তকারীরা ইতিমধ্যে অভিযুক্তের ওই বন্ধুকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন। তাঁর বয়ানও রেকর্ড করা হয়েছে।
গত বুধবার দুপুরে এক কিশোরীকে এসএসকেএম হাসপাতালের ট্রমা কেয়ার সেন্টারের পিছন দিকের শৌচালয়ে নিয়ে গিয়ে যৌন হেনস্থা করা হয়। অভিযুক্তের বিরুদ্ধে পকসো আইনে ধর্ষণের মামলা রুজু করেছে পুলিশ। অভিযোগ, তিনি ডাক্তার সেজে কিশোরীর কাছে গিয়েছিলেন। ভুল বুঝিয়ে তাকে শৌচালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। যুবকের পরনে ছিল হাসপাতালের চিকিৎসকদের মতো পোশাক। কেন ওই পোশাক পরেছিলেন? জেরায় অভিযুক্তের দাবি, বন্ধুর চিকিৎসায় যাতে সুবিধা হয়, তা নিশ্চিত করতে ওই পোশাক পরেছিলেন। এই ধরনের পোশাক পরা থাকলে হাসপাতালের সর্বত্র বিশেষ সুবিধা পাওয়া যায়। যে সমস্ত জায়গায় সাধারণ মানুষের প্রবেশের অনুমতি নেই, সেখানে ডাক্তারের পোশাকে অনায়াসে ঢুকে পড়া যায়। আবার, ‘ডাক্তার’ বললে চিকিৎসাও দ্রুত হয়।
অভিযুক্ত শম্ভুনাথ পণ্ডিত হাসপাতালের প্রাক্তন অস্থায়ী কর্মী। সেই সূত্রে এসএসকেএম-এও তাঁর যাতায়াত ছিল। মা এবং দাদুর সঙ্গে এসএসকেএম-এর বহির্বিভাগে চিকিৎসার জন্য গিয়েছিল নির্যাতিতা কিশোরী। তার প্রয়োজন ছিল মনোরোগ বিভাগে। ট্রমা কেয়ারের সামনে তাদের বসিয়ে কিশোরীর মা গিয়েছিলেন অন্যত্র। অভিযোগ, সেই সময়ে কিশোরীকে ভুলিয়ে শৌচালয়ের দিকে নিয়ে যান যুবক। কিছু ক্ষণ পর কিশোরীর চিৎকারে সেখানে লোকজন জড়ো হয়ে যায়। পুলিশ অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে।
কেন ওই কিশোরীকেই নিশানা করা হল? আগে থেকে কি তাকে চিনতেন অভিযুক্ত? অন্য কোনও আক্রোশ ছিল? পুলিশ সূত্রের খবর, জেরার মুখে ধৃত এই সম্ভাবনা উড়িয়ে দিয়েছেন। আগে থেকে কিশোরীকে চিনতেন না বলে জানিয়েছেন তিনি। অন্য দিকে, হাসপাতাল সূত্রে খবর, ঘটনার পর পরিবারের সদস্যদের প্রশ্নের উত্তরে কিশোরী দাবি করেছে, যুবককে ‘ভাল মানুষ’ মনে করে সে তার সঙ্গে গিয়েছিল। এমন কিছু ঘটবে, বুঝতে পারেনি। ঘটনাস্থলের এবং হাসপাতাল চত্বরের একাধিক সিসি ক্যামেরার ফুটেজ পুলিশ সংগ্রহ করেছে। সেখানে যুবকের সঙ্গে কিশোরীকে শৌচালয়ের দিকে যেতে দেখা গিয়েছে। ধৃতকে পকসো আদালতে হাজির করিয়েছিল পুলিশ। ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত পুলিশি হেফাজতে পাঠানো হয়েছে তাঁকে। এই মামলায় নির্যাতিতার গোপন জবানবন্দি নিতে চান তদন্তকারীরা। সঙ্গে ডিএনএ পরীক্ষার অনুমতি চেয়েও আদালতে আবেদন জানানো হয়েছে।