গতি নিয়ন্ত্রণ করতে প্রশাসন স্পিড ব্রেকার, গার্ড রেল দিয়েছে ইতিমধ্যেই। আছে সিসিটিভি, পুলিশি নজরদারিও। নিয়ম ভাঙলে কড়া পদক্ষেপের ব্যবস্থাও হয়েছে। তবু সল্টলেক, নিউ টাউন, বাগুইআটি-সহ বিধাননগর কমিশনারেট এলাকায় দুর্ঘটনায় রাশ টানা যাচ্ছে না। এ বার দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে সমীক্ষা করে কয়েকটি আরও কিছু ব্যবস্থা নিতে চলেছে বিধাননগর পুলিশ।
সল্টলেক, নিউ টাউন, ভিআইপি রোডে পথচারী, সাইকেল ও রিকশার জন্য ‘ডেডিকেটেড করিডর’-এর ভাবনা, স্থায়ী গার্ডরেল, ফুটপাথে রেলিং, যত্রতত্র পার্কিং বন্ধ করতেও দ্রুত পদক্ষেপ করতে চলেছে পুলিশ।
পরিকাঠামো বাড়ানো সত্ত্বেও কেন ঘটছে দুর্ঘটনা? এর কারণ বেশ কয়েকটি বলে জানাচ্ছে পুলিশ। যেমন, সল্টলেকের এএ ব্লক থেকে কেষ্টপুর খাল বরাবর ডিএল ব্লক, বা সেখান থেকে ইস্টার্ন ড্রেনেজ চ্যানেল বরাবর বাইপাস পর্যন্ত রাস্তা। সেখানে কিছু হাম্প, স্পিড ব্রেকার, গার্ড রেল আছে। যদিও তা পর্যাপ্ত নয়। সিসিটিভি অপ্রতুল। পুলিশি নজরদারি তুলনায় কম। ফলে উভয়মুখী এই দুই রাস্তায় চালকদের একাংশ তীব্র বেগে গাড়ি চালান। বিভিন্ন ব্লকের গলিও মিশেছে এই রাস্তায়। যখন-তখন গাড়ি এসে পড়ে খালপাড়ের রাস্তায়। সেই সঙ্গে যত্রতত্র পার্কিং, ফুটপাথহীন রাস্তা, সমস্যা আরও বাড়িয়ে তুলেছে। দুর্ঘটনাও ঘটেছে বেশ কয়েক বার।
চালকদের ভূমিকাও দুর্ঘটনার জন্যে অনেকটাই দায়ী বলে জানাচ্ছে সমীক্ষা। সল্টলেকে চালু হওয়া বাসের অধিকাংশই অফিসপাড়া হয়ে পাঁচ নম্বর সেক্টর, নিউ টাউনে যায়। যাত্রী টানার প্রতিযোগিতা ভয়াবহ। এই প্রতিযোগিতা অটো কিংবা শাটলের ক্ষেত্রে অনেকটাই শৃঙ্খলে বাঁধা। কিন্তু দু’টি ক্ষেত্রেই বেপরোয়া গাড়ি চালানোর অভিযোগ থাকে যাত্রীদের।
পার্কিংয়ের জেরে সল্টলেকের রাস্তার আয়তন কমে যাওয়াও আর এক সমস্যা। পুলিশ কর্তাদের কথায়, অনেক ক্ষেত্রেই পথচারী রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করতে বাধ্য হচ্ছেন। বাস, গাড়ি চলাচলের রাস্তা দিয়েই রিকশা, সাইকেল যাচ্ছে। বাড়ছে দুর্ঘটনাও।
মূল সড়ক রাজারহাট এক্সপ্রেসওয়ে, ভিআইপি রোডের পরিকাঠামো অনেকটাই বেড়েছে। বেড়েছে পুলিশি নজরদারিও। তবুও দুর্ঘটনার নিরিখে পিছিয়ে নেই নিউ টাউন, বাগুইআটি, রাজারহাট। পুলিশকর্তারা বলছেন, দুর্ঘটনা কমাতেই পরিকাঠামোর সংস্কার চলছে। হচ্ছে সমীক্ষাও। তারই ভিত্তিতে নতুন কিছু পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। পৃথক ‘সাইকেল বে’ থেকে শুরু করে আধুনিক প্রযুক্তির স্পিড ব্রেকার, স্থায়ী গার্ড রেল, ফুটপাথে রেলিং বসানোর পরিকল্পনাও হয়েছে। সংশ্লিষ্ট দফতরগুলির সঙ্গে আলোচনা করে পদক্ষেপ করতে চলেছে পুলিশ।