প্রচারের ছায়ায় ফুট-ব্রিজ। ছবি:শৌভিক দে।
কোথাও ঢেকেছে ফুটপাথ। কোথাও ফুটব্রিজ। কোথাও রাস্তার পাশে বাঁশের খুঁটি পুঁতে থরে থরে সাজানো বিভিন্ন আকারের হোর্ডিং ও ব্যানার। পুজো শেষেও নাগেরবাজার থেকে দমদম স্টেশন পর্যন্ত দমদম রোডের দখল কিন্তু চলে গিয়েছে পুজো কমিটি ও ক্লাবগুলোর হাতে। ঘটছে ছোটখাটো অঘটনও। তুলনায় কম হলেও সমস্যা রয়েছে যশোহর রোড, লেকটাউন ও বাঙুর এলাকায়। এই ছবি নতুন নয়। তবে তা বাড়ছে বলে মানছেন স্থানীয়েরা।
সম্প্রতি বাচ্চাকে নিয়ে যাচ্ছিলেন সোমা কুণ্ডু। দমদম স্টেশনের কাছে একটি মাঝারি মাপের ব্যানার খুলে পড়ে ছেলের সামনে। হাতে সামান্য চোটও পায়। বড় অঘটন ঘটতে পারত বলে মানছেন স্থানীয়েরাও। দক্ষিণ দমদম পুর এলাকার এক প্রাক্তন পুর প্রতিনিধি জানান, দশ-পনেরো বছর আগেও সমস্যা এতটা ছিল না। পুরসভার তরফে উৎসব সংক্রান্ত ব্যানার-ফেস্টুন লাগাতে কোনও টাকা লাগে না। এটাই বাড়বাড়ন্তের কারণ। ক্রমবর্ধমান পুজো, বিভিন্ন মেলা, অনুষ্ঠান তো আছেই। বাসিন্দাদের অভিযোগ, কমার্শিয়াল ব্যানার, ফেস্টুন থেকে মোটা টাকা আয় করে পুরসভা। অথচ প্রচারে সুবিধে পাইয়ে দিতে কোটি কোটি টাকা রাজস্ব ক্ষতি হচ্ছে। তা ছাড়া দৃশ্যদূষণের সঙ্গে সঙ্গে বিঘ্নিত হচ্ছে নিরাপত্তাও।
ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, ফেস্টুন আর ব্যানারের জন্য ব্যবসায় করতেও সমস্যা হয়। দোকানের নাম ঢেকে দিনের পর দিন টাঙানো থাকে এগুলো। তিন-চার মাস ছাড়া প্রায় সারা বছর হোর্ডিং লেগেই থাকে। হনুমান মন্দির এলাকার বাসিন্দা সন্তোষকুমার সাহা বলেন, “বাগজোলা খালের উপরে নতুন তৈরি ফুটব্রিজ যেন এ সবের জন্যই তৈরি হয়েছে। ফুটব্রিজ দিয়ে কেউ হেঁটে গেলেও দেখতে পাওয়া যায় না। কেউ ওখানে কোনও খারাপ কাজ করলে চোখে পড়বে না।”
প্রাক্তন হয়ে যাওয়া দক্ষিণ দমদম পুরসভার মেয়র পারিষদ (জঞ্জাল) প্রবীর পাল বলেন, “আমার কাছেও অনেকে অভিযোগ জানিয়েছেন। সমস্যা ক্রমশ বাড়ছে। এ নিয়ে নির্দিষ্ট নিয়ম থাকলে মনে হয় সব দিক রক্ষা পায়। এখন পুরবোর্ড নেই। প্রশাসন বিষয়টা বুঝবে।”
পূর্বতন দক্ষিণ দমদম পুরসভার প্রাক্তন উপ প্রধান ও বিধায়ক সুজিত বসু বলেন, “পুরসভা সামাজিক শুভেচ্ছা বার্তার ক্ষেত্রে টাকা ধার্য করে না। সময় মতো ব্যানার হোর্ডিং খুলে নেওয়া হয়। ফলে কোনও সমস্যা হওয়ার কথা নয়।”
বর্তমানে দক্ষিণ দমদম পুর এলাকার প্রশাসনিক দায়িত্বে রয়েছেন ব্যরাকপুরের এসডিও পূর্ণেন্দুকুমার মাঝি। তিনি বলেন, “এ বিষয়ে কিছু জানি না। খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।”