নজরদারিতেও লাগাম টানা যাচ্ছে না সংশোধনাগারে মোবাইল ব্যবহারে। চব্বিশ ঘণ্টার ব্যবধানে দুই কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারের ঘটনাপ্রবাহ সে দিকেই ইঙ্গিত করছে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মার্কিন তথ্যকেন্দ্রে হামলায় অভিযুক্ত আফতাব আনসারির সেল থেকে উদ্ধার হয়েছে বিভিন্ন সামগ্রী। শুক্রবার সকালে মোবাইল, চার্জার-সহ অন্য ‘বেআইনি’ সামগ্রী নিয়ে হাতেনাতে ধরা পড়েন প্রেসিডেন্সি কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারের উৎপাদনকেন্দ্র ইউনিটের কর্মী পার্থ ভৌমিক।
যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত আফতাব আলিপুর কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারের এক নম্বর সেলে রয়েছেন। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সেখান থেকে তল্লাশি চালিয়ে বেশ কিছু সিম কার্ড, দু’টি স্মার্টফোন মিলেছে। এমনকি, শেয়ার সংক্রান্ত খাতাও উদ্ধার করেছেন সংশোধনাগার কর্তৃপক্ষ। তাতে সন্দেহ তৈরি হয়েছে কারাকর্তাদের মধ্যে। তবে কি ওই সেল থেকে শেয়ারের ব্যবসা করছেন আফতাব। তা নিয়ে কাটাছেঁড়া চলছে কারা দফতরের কর্তাদের মধ্যে। কার ‘গাফিলতি’র কারণে আফতাবের সেলে মোবাইল পৌঁছল, তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এর আগে আফতাব আলিপুর সংশোধনাগারে বসে করাচিতে স্ত্রীর সঙ্গে দিনের পর দিন ফোনে কথা বলেছিলেন। তার পরে আফতাবের সেলে সিসিটিভি-র পাশাপাশি জোরালো আলোরও ব্যবস্থা করা হয়েছিল। ‘হাই সিকিওরিটি’র মধ্যে থাকা আফতাবের কাছে কী ভাবে এত কিছু পৌঁছল, তা নিয়েই প্রশ্ন উঠেছে। এ বিষয়ে অবশ্য কারা দফতরের কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি।
শুক্রবার সকাল সাড়ে সাতটা নাগাদ প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগারে ঢুকছিলেন সেখানকার উৎপাদনকেন্দ্রের কর্মী পার্থ ভৌমিক। অভিযোগ, কিছু দিন ধরেই তাঁকে নিয়ে সন্দেহ হচ্ছিল কারাকর্তাদের। এ দিন বেআইনি সামগ্রী নিয়ে ঢোকার সময়ে তাঁকে হাতেনাতে ধরেন ডিআইজি বিপ্লব দাস। পার্থের কাছ থেকে দু’টি মোবাইল, চার্জার, দু’টি ইয়ারফোন এবং এক প্যাকেট বিদেশি ব্র্যান্ডের দামি সিগারেট মেলে। কারা দফতর সূত্রের খবর, পাউরুটি তৈরির ইউনিটে প্রায়েই রান্নার আয়োজন হত পার্থের নেতৃত্বে। ইদানীং পরিবারের জন্য দামি জিনিসপত্রও কেনাকাটা শুরু করেছিলেন পার্থ। তবে এই দু’টি ঘটনায় এখনও পর্যন্ত পুলিশে কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি।
উল্লেখ্য, জুন মাসের গোড়ায় আলিপুর সংশোধনাগারে মোবাইল, বেআইনি সামগ্রী নিয়ে ঢোকার সময়ে ধরা পড়েছিলেন সেখানকার অস্থায়ী চিকিৎসক অমিতাভ চৌধুরী। তার পরে সব কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে নজরদারি বাড়ানো হয়েছিল। কিন্তু সে সব এড়িয়ে পরপর দু’দিন মোবাইল উদ্ধারের ঘটনায় ফের প্রশ্ন উঠছে সংশোধনাগারের নজরদারি নিয়ে। কারাকর্তাদের যদিও পাল্টা বক্তব্য, নজরদারি জোরদার আছে বলেই এ সব উদ্ধার করা যাচ্ছে।