নিউ টাউনে সিন্ডিকেটের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব যে কোনও ভাবেই বরদাস্ত করা যাবে না, এ কথা বার বার বলেছেন বিধাননগরের কর্তারা। এ নিয়ে পুলিশের সঙ্গে সিন্ডিকেটের সদস্যদের দফায় দফায় বৈঠকও হয়েছে। এমনকী বিধাননগর কমিশনারেটের পুলিশ কমিশনার জাভেদ শামিম আশ্বাস দিয়ে বলেছিলেন, ‘‘সিন্ডিকেট নিয়ে অভিযোগ করলে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
কিন্তু অভিযোগ, এত সব আশ্বাসের পরেও রাজারহাট কিন্তু রয়েছে সেই রাজারহাটেই। বৃহস্পতিবার সিন্ডিকেট নিয়ে রাজারহাটে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। এর জের গিয়ে পড়ে দমদম মিউনিসিপ্যাল হাসপাতালের ইমার্জেন্সিতে। এর ২৪ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই শুক্রবার ফের নিউ টাউনে জমিতে ইমারতি দ্রব্য ফেলা নিয়ে গোলমাল-হাতাহাতি হয় দুই সিন্ডিকেটের মধ্যে। প্রথম ঘটনায় ৯ জন এবং পরেরটিতে গ্রেফতার হন ২২জন।
কিন্তু শনিবার ফের রাজারহাটের দুই সিন্ডিকেটের গোষ্ঠীর মধ্যে লড়াইয়ে উত্তেজনা ছড়াল। অভিযোগ, শুক্রবার নিউ টাউনের অ্যাকশন এরিয়া টু-এর নবদিশা ও ড্রিমল্যান্ড নামে যে দুই সিন্ডিকেট ঝামেলায় জড়িয়েছিল, তারই কয়েকজন সদস্য ফের এ দিন নিজেদের মধ্যে বচসায় জড়িয়ে পড়েন। অভিযোগ, শুক্রবার হাতাহাতিতে যে দু’জন আহত হন, দু’দলেই তাঁদের ঘনিষ্ঠ কয়েকজন এ দিন ফের একে অপরের উপরে চড়াও হন। আরও অভিযোগ, নবদিশা সিন্ডিকেটের বেশিরভাগ সদস্য এলাকার বিধায়ক সব্যসাচী দত্তের এবং ড্রিমল্যান্ড সিন্ডিকেটের অধিকাংশ সদস্য সাংসদ কাকলী ঘোষ দস্তিদারের অনুগামী। যদিও এ দিনের ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে বিধায়ক সব্যসাচী দত্ত বলেন, ‘‘যারা বারবার অশান্তি ছড়াচ্ছে তারা দুষ্কৃতী। পুলিশকে এদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করছি।’’ অন্য দিকে, এ বিষয়ে সাংসদ কাকলী ঘোষ দস্তিদার বলেন, ‘‘পুলিশ খুব ভাল কাজ করছে। দুষ্কৃতীরা ধরা পড়েছে।’’
শনিবারও ঘটনার পরেই পুলিশ চার জনকে গ্রেফতার করে। এলাকায় শান্তি বজায় রাখতে পুলিশি টহল চলছে। বারবার অশান্তি ছড়ালেও বিধাননগর কমিশনারেটের দাবি, কড়া হাতে পুলিশ সিন্ডিকেট সমস্যার মোকাবিলা করছে। কমিশনারেটের এক শীর্ষ কর্তা বলেন, ‘‘শুক্রবার বিকেলে নিউ টাউনে গোলমালের ঘটনার পরে যারা পালিয়ে গিয়েছিলেন, তাদের মধ্যে ৯ জনকে রাতেই গ্রেফতার করা হয়। শনিবারের ঘটনায় গ্রেফতার হয়েছে ৪ জন।’’ কমিশনারেটের ওই কর্তা বলেন, ‘‘সিন্ডিকেটের কোনও দাদার দাদাগিরি চলবে না।’’