কসবা ধর্ষণকাণ্ডে সাউথ ক্যালকাটা ল কলেজের সেই নিরাপত্তারক্ষীর জামিন মঞ্জুর করল আলিপুর আদালত। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।
কসবার ধর্ষণের ঘটনায় সাউথ ক্যালকাটা ল কলেজের সেই নিরাপত্তারক্ষীকে জামিন দিল আলিপুর আদালত। গ্রেফতারির ১০৮ দিনের মাথায় ২০ হাজার টাকার ব্যক্তিগত বন্ডে তাঁকে জামিন দিলেন বিচারক। যদিও পুলিশ তাঁর জামিনের বিরোধিতা করেছিল। তবে বিচারক ৫৫ বছর বয়সি ওই নিরাপত্তারক্ষীর জামিন মঞ্জুর করেন।
সোমবার আলিপুর আদালতে ওই নিরাপত্তারক্ষীর জামিনের আবেদন করেন তাঁর আইনজীবী দিব্যেন্দু ভট্টাচার্য। তিনি জানান, তাঁর মক্কেল কোনও ভাবেই ওই ধর্ষণকাণ্ডের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত ছিলেন না। নির্যাতিতা যে জবানবন্দি দিয়েছিলেন, সেখানেও ওই নিরাপত্তারক্ষীর সরাসরি ঘটনার সঙ্গে যুক্ত থাকার কোনও প্রমাণ মেলেনি। যদিও সরকারি আইনজীবী সেই যুক্তি মানতে নারাজ। তাঁর যুক্তি, ‘‘উনি ঘটনার কথা জানাতে পারতেন। অন্য কাউকে বিষয়টি জানিয়ে সতর্ক করতে পারতেন। কিন্তু তা তিনি করেননি। উল্টে তিনি কলেজের মূল ফটক বন্ধ করে দিয়েছিলেন এবং অন্য অভিযুক্তদের জন্য গার্ডরুম খুলে দিয়েছিলেন।’’ সওয়াল-জবাব শেষে নিরাপত্তারক্ষীকে জামিন দেন বিচারক। তিনি
সাউথ ক্যালকাটা ল কলেজে ধর্ষণের ঘটনায় রক্ষী ছাড়াও আরও তিন অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। গত ২৫ জুন সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা থেকে রাত ১০টা ৫০ মিনিটের মধ্যে কলেজ ক্যাম্পাসের মধ্যে ধর্ষণের ঘটনাটি ঘটেছিল বলে জানা গিয়েছে। নির্যাতিতা অভিযোগপত্রে মূল অভিযুক্তকে চিহ্নিত করেছিলেন ‘জে’ নামে। এ ছাড়া ‘এম’ এবং ‘পি’ নামের দু’জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়। নির্যাতিতা জানিয়েছিলেন, প্রথমে ইউনিয়ন রুমের ভিতর তাঁর সঙ্গে ধস্তাধস্তি করা হয়। পরে রক্ষীর ঘরে নিয়ে গিয়ে তাঁকে ধর্ষণ করেন ‘জে’। বাইরে পাহারায় ছিলেন বাকি দু’জন। ঘটনার সময়ে কলেজের ওই রক্ষীও সেখানে উপস্থিত ছিলেন। কিন্তু তিনি ছিলেন ‘অসহায়’। তাই নির্যাতিতাকে কোনও সাহায্য করতে পারেননি।
নির্যাতিতার জবানবন্দির ভিত্তিতে ঘটনার দু’দিন পর ওই রক্ষীকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। তাঁকে এবং অন্য অভিযুক্তদের ঘটনাস্থলে নিয়ে গিয়ে ঘটনার পুনর্নির্মাণও করেছিল পুলিশ। কসবার ধর্ষণকাণ্ডে প্রথমে ৯ সদস্যের একটি বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট) গঠন করেছিল কলকাতা পুলিশ। পরে ঘটনার তদন্তভার যায় কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের হাতে। পুলিশ ইতিমধ্যেই চার অভিযুক্তের বিরুদ্ধে চার্জশিট জমা দিয়েছে পুলিশ।
(ধর্ষণ বা শ্লীলতাহানির ঘটনায় যত ক্ষণ না অভিযুক্তকে আদালতে দোষী সাব্যস্ত করা হচ্ছে, তত ক্ষণ তাঁর নাম-পরিচয় প্রকাশে আইনি বাধা থাকে। সেই কারণে আনন্দবাজার ডট কম কসবার ধর্ষণকাণ্ডে তিন অভিযুক্তের নাম এবং ছবি প্রকাশে বিরত থাকছে)