এই ধরনের খবরের ক্ষেত্রে আসল ছবি প্রকাশে আইনি নিষেধাজ্ঞা থাকে। —প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।
কালীপুজোর প্রতিমা নিরঞ্জনের শোভাযাত্রায় বাজি ফাটানোকে কেন্দ্র করে অশান্তির জেরে ফের শ্লীলতাহানির অভিযোগ উঠল কলকাতায়। এ বার ঘটনাস্থল টালিগঞ্জ। শুক্রবার রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ টালিগঞ্জের একটি কালীপুজোর প্রতিমা নিরঞ্জনের সময়ে বাজি ফাটানোকে কেন্দ্র করে বচসা বাধে। বাজি ফাটানোর প্রতিবাদ করায় এক পরিবারকে মারধর এবং হেনস্থা করা হয়েছে বলে অভিযোগ। ‘প্রতিবাদী’ পরিবারের মহিলা সদস্যদের শ্লীলতাহানি করা হয়েছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। শুক্রবার রাতের ওই ঘটনায় ইতিমধ্যে দু’জনকে আটক করেছে পুলিশ।
অভিযোগকারীর দাবি, শুক্রবার রাতে ওই ঘটনার সময়ে বাড়িতে তাঁর মামার চার বছর বয়সি ছোট ছেলে ছিল। প্রতিমা নিরঞ্জনের সময়ে শব্দবাজি ফাটাচ্ছিলেন কয়েক জন স্থানীয় বাসিন্দা। চার বছরের ওই শিশুর সামনেই শব্দবাজি ফাটানো হচ্ছিল বলে অভিযোগ। টালিগঞ্জ থানায় জমা দেওয়া অভিযোগপত্রে ‘আক্রান্ত’ পরিবারের এক যুবকের দাবি, শব্দবাজি ফাটার ফলে ওই শিশু ভয় পেয়ে যাচ্ছিল। তাই তিনি শব্দবাজি ফাটানোর প্রতিবাদ করেন। অভিযোগ, বাজি ফাটানোর প্রতিবাদ করতেই তাঁর উপর চড়াও হন একদল যুবক। পরিবারের বাকি সদস্যদেরও মারধর এবং হেনস্থা করা হয় বলে অভিযোগ। বাঁশ এবং লাঠি দিয়ে তাঁদের উপর হামলা করা হয় বলে পুলিশকে জানিয়েছেন অভিযোগকারী।
অভিযোগকারী যুবকের দাবি, ওই সময়ে বাড়িতে তাঁর মা এবং পরিবারের অন্য মহিলা সদস্যেরা উপস্থিত ছিলেন। হামলাকারীরা তাঁদেরও শ্লীলতাহানি করেছেন বলে অভিযোগ করেছেন ওই যুবক। এমনকি তাঁদের বাড়িতে ঢুকেও জিনিসপত্র ভাঙচুর করা হয়েছে বলে অভিযোগ। ঘটনার পরে টালিগঞ্জ থানায় ফোন করে ‘আক্রান্ত’ পরিবার। লিখিত অভিযোগ জানানো হয় থানায়। কলকাতা দক্ষিণের সাংসদ মালা রায়কেও ঘটনার কথা জানান বলে দাবি অভিযোগকারীর।
ওই ঘটনা প্রসঙ্গে অভিযোগকারী যুবক আনন্দবাজার ডট কম-কে জানান, অভিযুক্তেরা তাঁদের প্রতিবেশী। একই পাড়ার বাসিন্দা সকলে। তাই হঠাৎ করে এ ভাবে তাঁদের উপর হামলা করা হবে, তা তাঁরা বুঝতেই পারেননি বলে দাবি অভিযোগকারী যুবকের। অভিযুক্তেরা প্রত্যেকেই মত্ত অবস্থায় ছিলেন বলে দাবি তাঁর। তিনি বলেন, “চেনাশোনা লোকই যে এই ভাবে আমার মা, কাকিদের উপর (হামলা) করেছে, আমাদেরকেও যে ভাবে (মারধর) করেছে… কী বলব!” অভিযোগকারীর কথায়, “আমরা বাড়ির তিন-চার জন। আর উল্টো দিকে ১২-১৫ জন ছিল। আমরা কী ভাবে যে নিজেদের রক্ষা করতে পেরেছি… এইটুকুই।” তাঁর দাবি, পরিবারের সদস্যেরা কোনও রকমে ঘরে পালিয়ে এসে, লুকিয়ে নিজেদের রক্ষা করেছেন। তিনি আরও জানান, ঘটনার খবর পেয়েই সাংসদ সেখানে পৌঁছে গিয়েছিলেন। পুলিশও পৌঁছে যায় ঘটনাস্থলে। সাংসদ ঘটনাস্থলে পৌঁছোনোর পরেই অভিযুক্তেরা কিছুটা শান্ত হয়েছেন বলে দাবি ‘আক্রান্ত’ পরিবারের।
গত বৃহস্পতিবার রাতেও কালীপুজোর প্রতিমা নিরঞ্জনে বাজি ফাটানোকে কেন্দ্র করে গোলমাল বাধে গড়িয়ায় নেতাজি নগর থানা এলাকায়। দম্পতিকে হেনস্থার অভিযোগ ওঠে পাড়ার মত্ত যুবকদের বিরুদ্ধে। দাবি, প্রতিবাদী মহিলাকে রাস্তায় ফেলে মারধর এবং শ্লীলতাহানি করা হয়েছে। ঘটনার পর দম্পতি থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।