Haridebpur Incident

হরিদেবপুরের হোমে দৃষ্টিহীন নাবালিকাদের নির্যাতন, মালিক-সহ দু’জনকে গ্রেফতার করল পুলিশ

হরিদেবপুরের ওই হোমে মূলত দৃষ্টিহীনদের বাস। থাকার পাশাপাশি হোমে তাঁদের শিক্ষাদানের ব্যবস্থাও রয়েছে। অভিযোগ, এই হোমের দু’জন নাবালিকা নির্যাতনের শিকার হয়েছে।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ২১:৫৩
Share:

—প্রতীকী চিত্র।

হরিদেবপুরে দৃষ্টিহীনদের একটি হোমে দুই নাবালিকাকে নির্যাতনের অভিযোগ। এই ঘটনায় বৃহস্পতিবার রাতে হোমের প্রিন্সিপাল এবং সেক্রেটারিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। নাবালিকাদের নিরাপদে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

Advertisement

হরিদেবপুরের ওই হোমটিতে মূলত দৃষ্টিহীনদের বাস। থাকার পাশাপাশি হোমে তাঁদের শিক্ষাদানের ব্যবস্থাও রয়েছে। অভিযোগ, এই হোমের কয়েক জন নাবালিকা নির্যাতনের শিকার হয়েছে। পুলিশের কাছে ধর্ষণ এবং শ্লীলতাহানির অভিযোগ জানিয়েছে হোমের দুই নাবালিকা। ২০১০ সাল থেকে নির্যাতন চলছে বলে অভিযোগ। এফআইআরে প্রিন্সিপাল এবং সেক্রেটারির নাম করা হয়েছে। তাঁদের গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ধৃক সেক্রেটারির নাম জীবেশ দত্ত। প্রিন্সিপাল মহিলা হওয়ায় তাঁর নাম প্রকাশ করেনি পুলিশ। প্রিন্সিপালের বিরুদ্ধে মূল অভিযোগ, তিনি নির্যাতনের খবর পাওয়া সত্ত্বেও কোনও পদক্ষেপ করেননি।ঘটনার সঙ্গে আরও কয়েক জন জড়িত থাকতে পারেন বলে মনে করা হচ্ছে। ধৃতদের বিরুদ্ধে পকসো আইনে মামলা রুজু করা হয়েছে।

হোমটিতে নাবালিকাদের উপর নির্যাতন চলছে, এই মর্মে প্রথমে রাজ্যের শিশু সুরক্ষা কমিশনের কাছে অভিযোগ জমা পড়েছিল। তার পর বিষয়টিতে হস্তক্ষেপ করে পুলিশ। বৃহস্পতিবার হোমে তল্লাশি চালাতে যায় তারা। রাঁধুনি-সহ কয়েক জন কর্মীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তার পরে দু’জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। হোমের দু’টি ঘর থেকে মোট ৪০ জনকে অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

Advertisement

হোমের এই ঘরেই থাকে অভিযোগকারী নাবালিকারা। —নিজস্ব চিত্র।

পুলিশ জানিয়েছে, হোমের একটি ঘর থেকে ৩২ জন মেয়েকে সরানো হয়েছে। অন্য একটি ঘর থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে আট জন কিশোরীকে। এই আট জনের ঘর থেকেই দু’জন নির্যাতনের অভিযোগ জানিয়েছে। এই ঘরের আবাসিকদের বয়স বাকিদের চেয়ে তুলনামূলক বেশি। ঘরটিতে ১৫-ঊর্ধ্ব কিশোরীদের রাখা হত বলে খবর। ঘরটির দায়িত্বে যিনি ছিলেন, তিনিও দৃষ্টিহীন। তিনি জানিয়েছেন, রাতের খাওয়াদাওয়া হয়ে গেলে ৯টার মধ্যেই মেয়েদের ঘরে ঢুকিয়ে বাইরে থেকে দরজা বন্ধ করে দেওয়া হত। অন্য ঘরটিতে ছোট ছোট শিশুদের রাখা হত বলে জানিয়েছে পুলিশ।

হরিদেবপুরের হোম শুধু নাবালিকা নয়, ৩৮ জন দৃষ্টিহীন বালকেরও ঠিকানা। এখানে মূলত ঝাড়খণ্ড, গিরিডি থেকে বাচ্চারা আসে। দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে হোমটিতে কাজ করেন, এমন এক কর্মী বলেন, ‘‘এখানে এ সব হতে পারে বলে বিশ্বাসই হচ্ছে না। আমাদের এর আগে কেউ কিছু বলেনি। সবাই এখানে হেসেখেলে বেড়ায়। সম্প্রতি শিক্ষক দিবস উপলক্ষেও খাওয়াদাওয়া হইহুল্লোড় হল।’’

হোমের অন্য এক শিক্ষিকা বলেছেন, ‘‘পুরোটাই তদন্তসাপেক্ষ। এখানে আগে কখনও এমন কিছু শুনিনি। পুলিশ আসার পর জানতে পারলাম।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন