দিল্লিতে মোদীর শপথ, জয়ধ্বনি উঠবে পুরসভায়

সদস্য সংখ্যার বিচারে অন্য রাজনৈতিক দলগুলির শ্রমিক সংগঠনের থেকে অনেকটাই পিছিয়ে থাকা ‘কেএমসি শ্রমিক কর্মচারী সঙ্ঘ’ লোকসভা ভোটে নরেন্দ্র মোদীর সাফল্যের পরে সংগঠন মজবুত করতে নতুন ভাবে ঝাঁপিয়ে পড়েছে।

Advertisement

দেবাশিস ঘড়াই

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৮ মে ২০১৯ ০২:৩৭
Share:

কলকাতা পুরসভা— ফাইল চিত্র।

প্রধানমন্ত্রীর পদে শপথ নেবেন নরেন্দ্র মোদী। তৈরি হবে নতুন মন্ত্রিসভা। আর তারই জয়োৎসব পালন হবে কলকাতা পুরসভায়! যেখানে মোদীর নামে জয়ধ্বনি, লাড্ডু বিতরণ, ব্যানারে মোদীর জয়গান-সহ সব কিছুই থাকবে। বাদ যাবে না কোনও আয়োজন। পুরো অনুষ্ঠানের উদ্যোক্তা হল বিজেপি প্রভাবিত ‘কেএমসি শ্রমিক কর্মচারী সঙ্ঘ’।

Advertisement

বৃহস্পতিবারের ওই অনুষ্ঠানের চূড়ান্ত রূপরেখা তৈরি করতে একাধিক বার বৈঠকেও বসেছেন সংগঠনের কর্তারা। সদস্য সংখ্যার বিচারে অন্য রাজনৈতিক দলগুলির শ্রমিক সংগঠনের থেকে অনেকটাই পিছিয়ে থাকা ‘কেএমসি শ্রমিক কর্মচারী সঙ্ঘ’ লোকসভা ভোটে নরেন্দ্র মোদীর সাফল্যের পরে সংগঠন মজবুত করতে নতুন ভাবে ঝাঁপিয়ে পড়েছে। নিজেদের উপস্থিতি বোঝানোর পরিকল্পনা করেছে নানা অনুষ্ঠান-সভার মাধ্যমে। তারই প্রাথমিক ধাপ সে দিনের অনুষ্ঠান।

সংগঠন সূত্রের খবর, কোথায় সে অনুষ্ঠান হবে তা নিয়ে আপাতত আলোচনা চলছে। কেন্দ্রীয় পুর ভবন চত্বর না ‘কাউন্সিলর্স রুমে’ ওই অনুষ্ঠান করা হবে, তা নিয়ে আলোচনা চলছে। কেন্দ্রীয় পুর ভবন চত্বরে সাধারণত ইউনিয়নগুলির অনুষ্ঠান হয়ে থাকে। কিন্তু ওই চত্বরে রোদ এবং পার্কিংয়ে রাখা গাড়ির ভিড়ের কারণে সংগঠনের নেতাদের একাংশ চাইছেন, অনুষ্ঠানটি ‘কাউন্সিলর্স রুমে’ করতে। ফলে আপাতত অনুষ্ঠানের স্থান নিয়ে আলোচনা চলছে। বিজেপির পতাকা এবং ব্যানার শোভিত অনুষ্ঠানে বক্তৃতার আয়োজন করা হবে। মোদীর নামে জয়ধ্বনির পাশাপাশি, লাড্ডু বিতরণও করা হবে। বর্তমানে বক্তার তালিকা ঠিক করা হচ্ছে। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক অশোক সিংহ বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রীর পদে নরেন্দ্র মোদীর শপথগ্রহণকে উদ্‌যাপন করতে চাইছি আমরা। তাই এই আয়োজন।’’

Advertisement

কখন সে অনুষ্ঠান করা যায়, তা নিয়েও আলোচনা চলছে। সংগঠনের একাংশের বক্তব্য, পুর ভবন চত্বরে হলে দুপুর ১টা থেকে দেড়টার মধ্যে ওই অনুষ্ঠান করতে হবে। কারণ, ইউনিয়নগুলির কোনও কর্মসূচি থাকলে ওই সময়টাই হল অনুমোদিত সময়। আর ‘কাউন্সিলর্স রুমে’ হলে আরও একটু দীর্ঘায়িত হবে অনুষ্ঠান পর্ব। তবে যাই হোক না কেন, পুর ভবনে সে দিন অনুষ্ঠান হবেই বলে জানাচ্ছেন সংগঠনের নেতারা।

সংগঠনের তরফে এ-ও জানা যাচ্ছে যে, বৃহস্পতিবারের অনুষ্ঠানটা হল দীর্ঘমেয়াদি এক পরিকল্পনার প্রাথমিক ধাপ মাত্র। এর পরে সংগঠনের তরফে আরও কর্মসূচি পালনের পরিকল্পনা করা হয়েছে। আরও বড় করে এই জয়কে উদ্‌যাপন করার কথা ভাবা হচ্ছে। সে ক্ষেত্রে বিজেপির তরফে রাজ্য থেকে যাঁরা সাংসদ হয়েছেন, তাঁদেরকেও আহ্বান করার কথা ভাবা হচ্ছে। অশোকবাবুর কথায়, ‘‘আরও বড় অনুষ্ঠান করার কথা ভাবা হয়েছে। কিন্তু সেটা পরের ধাপ। আপাতত আমাদের পাখির চোখ বৃহস্পতিবারের অনুষ্ঠান।’’ বিজেপি কাউন্সিলর মীনাদেবী পুরোহিত জানান, দলগত ভাবে তাঁরাও নতুন ভাবে ঝাঁপাতে চাইছেন। মীনাদেবীর কথায়, ‘‘সংগঠনকে আরও মজবুত করব আমরা। মোদী আমাদের যে পথ দেখিয়েছেন, সে পথেই মানুষের কাজ আরও বেশি করব আমরা।’’

প্রসঙ্গত, বর্তমানে ওই সংগঠনের সদস্য সংখ্যা তৃণমূল সমর্থিত শ্রমিক কর্মচারী সংগঠন বা বাম সমর্থিত সংগঠনের থেকে অনেকটাই কম। কিন্তু সংশ্লিষ্ট সংগঠনের নেতাদের দাবি, ভোটের ফল বেরোনোর পরেই যোগাযোগের হিড়িক পড়েছে। এর ফলে আগামী দিনে সংগঠনের চরিত্রই পাল্টে যেতে পারে বলে মনে করছেন তাঁরা। যে দাবিকে সরাসরি উড়িয়ে দিতে পারছেন না অনেকেই। তৃণমূলের এক কাউন্সিলরের কথায়, ‘‘সুযোগ বুঝে দল বদলানোর সংখ্যা তো নেহাৎ কম নয়। তেমন কেউ যোগাযোগ করতে পারেন। তবে এমন খবর আমাদের জানা নেই।’’ এক বাম কাউন্সিলরের কথায়, ‘‘মতাদর্শগত রাজনীতি যাঁরা করেন, তাঁরা দল পাল্টান না। যাঁরা সুবিধাবাদী, তাঁরাই দল পাল্টানোর কথা ভাবেন।’’

তবে বিতর্ক যাই থাকুক না কেন, জোড়া-ফুলের কেন্দ্রীয় পুর ভবনে এখন পদ্মও হরদম ফুটবে, বৃহস্পতিবারের অনুষ্ঠান তারই ইঙ্গিত। রসিকতা করে এমনটাই বলছেন অনেকে!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন