Patna Hospital Murder

কী কাণ্ড! কী করে বুঝব যে এরা খুন করে এসেছে? বিহার-গ্যাং ধরা পড়তেই বলছেন কলকাতার গেস্ট হাউসের মালকিন

আনন্দপুরের সেই গেস্ট হাউসের মালকিন জানাচ্ছেন, ধৃতেরা সকলেই ঘর নেওয়ার সময় বৈধ নথিপত্র দেখিয়েছিলেন। তাঁদেরকে তিন তলার শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত দু’টি ঘর দেওয়া হয়েছিল।

Advertisement

সারমিন বেগম

শেষ আপডেট: ২০ জুলাই ২০২৫ ০০:৩১
Share:

এই গেস্ট হাউসের তিন তলায় দু’টি ঘর দেওয়া হয়েছিল অভিযুক্তদের। নিজস্ব চিত্র।

তাঁর গেস্ট হাউস থেকেই কয়েক ঘণ্টা আগে ধরা পড়েছেন পাঁচ জন। ধৃতেরা সকলেই পটনায় হাসপাতালে ঢুকে গ্যাংস্টারকে খুনের ঘটনায় জড়িত। খুনের পর সটান কলকাতায় পালিয়ে এসে উঠেছিলেন আনন্দপুরের অতিথি আবাসে। শনিবার রাতে বিশাল পুলিশ বাহিনী গিয়ে তাঁদের আটক করে। ঘটনার পর থেকেই গোটা এলাকা থমথমে। রীতিমতো আতঙ্কে সিঁটিয়ে রয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এত সবের মাঝে কী বলছেন সেই গেস্ট হাউসের মালকিন?

Advertisement

গেস্ট হাউসের মালকিন আনন্দবাজার ডট কমকে জানিয়েছেন, ওই পাঁচ জন শুক্রবার তাঁদের গেস্ট হাউসে উঠেছিলেন। রীতিমতো বৈধ পরিচয়পত্র দেখিয়েই ঘর নিয়েছিলেন তাঁরা। গেস্ট হাউসের তিন তলায় দু’টি ঘর দেওয়া হয়েছিল তাঁদের। পাঁচ জনের মধ্যে ছিলেন এক মহিলাও। তবে সে সময় তাঁদের হাবভাব দেখে মোটেও বোঝা যায়নি, সদ্য খুন করে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন তাঁরা! পাঁচ জনের দলটিকে সন্দেহজনক বলেও মনে হয়নি গেস্ট হাউসের কর্মীদের। মালকিনের কথায়, ‘‘কী করে বুঝব? কাউকে বাইরে থেকে দেখে কি বোঝা যায় কে অপরাধী আর কে অপরাধী নয়? বুঝতে পারলে কি আমরা ঘর দিতাম?’’

আনন্দপুর থানা থেকে ঢিল ছোড়া দূরত্বে থাকা সেই গেস্ট হাউসের মালকিন জানাচ্ছেন, অসুস্থ থাকায় তিনি নিজে গেস্ট হাউসে যেতে পারেননি। কিন্তু কর্মচারীদের থেকে খবর পেয়েছেন, ধৃতেরা ঘর নেওয়ার সময় বৈধ নথিপত্র দেখিয়েছিলেন। তাঁদেরকে তিন তলার শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত দু’টি ঘর দেওয়া হয়েছিল। এসি ঘরের ভাড়া ১,৫০০ টাকা। সেই টাকাও মিটিয়েছিলেন তাঁরা। কিন্তু সে সময় তাঁদের আচরণে কিছুই সন্দেহজনক বলে মনে হয়নি। মালকিনের কথায়, ‘‘এত দিন ধরে গেস্ট হাউস চালাচ্ছি। ২০১৮ থেকে আজ পর্যন্ত কখনও এ ধরনের ঘটনা ঘটেনি। সাধারণত, কে কে গেস্ট হাউসে উঠছেন, তার তথ্য পুলিশকে পাঠানো হয়। আমাদের তো এখানে কোনও ভুল নেই!’’

Advertisement

শনিবার সন্ধ্যায় পুলিশের কাছ থেকে ফোন পান গেস্ট হাউস মালকিন। সঙ্গে সঙ্গে গেস্ট হাউসে যান মহিলার স্বামী ও পুত্র। তত ক্ষণে গোটা এলাকা ছেয়ে গিয়েছে সশস্ত্র পুলিশে। পুলিশ আসার পর হুড়োহুড়িতে সন্দেহভাজনদের এক জন আবার পড়ে গিয়ে চোট পান। অ্যাম্বুল্যান্সে করে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁকে। বাকিদের আটক করে নিয়ে যায় পুলিশ।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, আনন্দপুরে ধৃতদের নাম সচিন সিংহ, হরিশ কুমার, তৌসিফ এবং ইউনুস খান। ধৃতদের মধ্যে রয়েছেন এক মহিলাও। তাঁর নাম এখনও জানা যায়নি। পুলিশ সূত্রে খবর, ঘটনার দিনের সিসিটিভি ফুটেজে একটি গাড়ি কলকাতা অভিমুখে আসতে দেখা গিয়েছিল। সেই গাড়ির নম্বরের সূত্র ধরে আনন্দপুর, ভাঙড়-সহ বিভিন্ন এলাকায় খোঁজাখুঁজি শুরু করেছিল পুলিশ। শেষমেশ শনিবার রাতে আনন্দপুরের গেস্ট হাউস থেকে পাঁচ জনকে আটক করা হয়। ফলে এই নিয়ে পটনা-কাণ্ডে ধৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ১১।

এলাকার বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা-৮টা নাগাদ বিশাল পুলিশবাহিনী এলাকায় আসে। এর কিছু ক্ষণ পর একটি অ্যাম্বুলেন্সও আসে। উপর থেকে স্টেচারে শুইয়ে এক জনকে নামানো হয়। অবশ্য তিনি বেঁচে ছিলেন না মারা গিয়েছেন বোঝা যাচ্ছিল না। পুলিশ প্রায় ঘণ্টাখানেকের মতো ছিল। তার মধ্যেই গোটা ঘটনাটি ঘটে যায়। আকস্মিক এই ঘটনায় এখনও আতঙ্কিত এলাকাবাসীরা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement