অনিশ্চিত: এখনও পড়ে পোড়া জিনিসপত্র। শনিবার। নিজস্ব চিত্র
বাগড়ি মার্কেটের ক্ষতিগ্রস্ত অংশ ভেঙে ফেলা হবে কি না, অগ্নিকাণ্ডের দু’মাস পরেও সিদ্ধান্ত নিতে পারল না কলকাতা পুরসভা। কারণ, ভস্মীভূত সামগ্রী পুরোপুরি এখনও সরেনি। ফলে কাঠামো কতটা দুর্বল বা তার বর্তমান অবস্থা কী, সে সংক্রান্ত তথ্যও সংগ্রহ করা যায়নি বলে পুরসভা সূত্রের খবর।
অগ্নিকাণ্ডে মার্কেটের ক্ষতিগ্রস্ত অংশ ভেঙে ফেলা হবে কি না, সেই সিদ্ধান্তে পরামর্শ নিতে আইআইটি বিশেষজ্ঞদেরও দ্বারস্থ হয়েছিল পুরসভা। শহরে এসে মার্কেট পরিদর্শনের পরে বিশেষজ্ঞেরা কাঠামো সংক্রান্ত আরও কিছু তথ্য চেয়েছিলেন পুরসভার কাছে। তাও গত মাসের শুরুতেই। কিন্তু তার পরে দেড় মাস কেটে গেলেও সে কাজ করা যায়নি। তথ্য সংগ্রহ বা কাঠামো সংক্রান্ত মাপজোক করার জন্য ভিতরে ঢুকতে হবে পুর ইঞ্জিনিয়ারদের। অথচ ভস্মীভূত সামগ্রী না সরানোয় সে কাজই করা যাচ্ছে না বলে জানাচ্ছেন পুর আধিকারিকদের একাংশ।
প্রসঙ্গত, বাগড়ি মার্কেটের ভস্মীভূত সামগ্রী দ্রুত কী ভাবে সরানো যায়, সে সম্পর্কে নির্দিষ্ট পরিকল্পনা করার জন্য গত ২৯ অক্টোবর কেন্দ্রীয় পুরভবনে একটি বিশেষ বৈঠক হয়। সেই বৈঠকে ঠিক হয়েছিল, বাগড়ি মার্কেটের ব্যবসায়ীরা ভস্মীভূত সামগ্রী সরানোর ক্ষেত্রে পুরকর্মীদের সাহায্য করবেন। তাঁরাই ওই সামগ্রী জড়ো করে এক জায়গায় রাখবেন। সেখান থেকে পুরকর্মীরা তা সংগ্রহ করে লরিতে ধাপায় নিয়ে গিয়ে ফেলে আসবেন। কিন্তু ব্যবসায়ীরা যে গতিতে সে কাজ করছেন, তাতে দেরি হয়ে যাচ্ছে বলে জানাচ্ছেন পুর আধিকারিকদের একাংশ। গত ১৬ সেপ্টেম্বর বাগড়ি মার্কেটে আগুন লেগেছিল। ভস্মীভূত হয়ে যায় মার্কেটের একটি অংশ। পুরসভার এক পদস্থ আধিকারিকের কথায়, ‘‘বাগড়ি মার্কেটের ভিতরের বিমের পারস্পরিক দূরত্ব একই রয়েছে, না সেগুলির অবস্থানের কোনও পরিবর্তন হয়েছে, এমন অনেক তথ্যই তাঁরা চেয়েছিলেন। কিন্তু জঞ্জাল না সরানো হলে সে কাজ করা যাবে কী করে? আমাদের তো মাপজোক করার জন্য ভিতরে ঢুকতে হবে!’’
অক্টোবরের শেষের বৈঠকে ঠিক হয়েছিল, প্রতিদিন ১০টি গাড়ি করে জিনিসপত্র সরানো হবে সেখান থেকে। আইআইটি-র বিশেষজ্ঞেরা মার্কেটের কাঠামোর উপরে চাপ কমানোর জন্যও ওই সামগ্রী সরাতে বলেছিলেন। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, দিনে পাঁচ গাড়ির বেশি ভস্মীভূত সামগ্রী জড়োই হচ্ছে না বলে জানাচ্ছেন পুর কর্তৃপক্ষ। জঞ্জাল দফতরের মেয়র পারিষদ দেবব্রত মজুমদার বলেন, ‘‘ব্যবসায়ীরা যে ভাবে ময়লা তুলে আমাদের দেবেন, সে ভাবেই আমরা সেগুলি সরিয়ে দেব। সে কাজে কিছুটা সময় তো লাগছেই।’’