কলকাতা পুলিশের দুই আধিকারিকের বিরুদ্ধে গাড়ি দাঁড় করিয়ে টাকা নেওয়ার অভিযোগ। ছবি: ভিডিয়ো থেকে।
হাওড়া ব্রিজের উপর দাঁড় করিয়ে দেওয়া হয়েছে গাড়ি। সামনেই দাঁড়িয়ে সাদা উর্দি পরা এক পুলিশ আধিকারিক। আরও এক জন দূর থেকে এগিয়ে আসছেন। গাড়ির চালক হাতে কিছু টাকা নিয়ে বসে। তাঁর পাশ থেকে কেউ ভিডিয়ো করছেন। সম্প্রতি সমাজমাধ্যমে এই ভিডিয়ো ভাইরাল হয়ে গিয়েছে। ভিডিয়োটির ভিত্তিতে এ বার পদক্ষেপ করল লালবাজার। সাসপেন্ড করা হল দুই আধিকারিককে। তাঁদের মধ্যে এক জন কলকাতা পুলিশের এএসআই পদমর্যাদার অধিকারী। তাঁদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত শুরু হয়েছে। আদৌ তাঁরা ওই ঘটনার সঙ্গে জড়িত কি না, ভাইরাল ভিডিয়োর উৎস কোথায়, ঘটনার সত্যতা আছে কি না, খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
সমাজমাধ্যমে যে ভিডিয়োটি ছড়িয়ে পড়েছে, তাতে দেখা গিয়েছে, সাদা উর্দিধারী এক পুলিশ আধিকারিক হাতে লাঠি নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা গাড়িটির দিকে আসছেন। আঙুল উঁচিয়ে চালককে কিছু বলছেন। এই সময়ে এক জনকে বলতে শোনা যায়, ‘‘খুচরো নেই বলেই তো দিচ্ছি নাকি?’’ কিছু ক্ষণেই প্রথম জনের ডাকে গাড়িটির সামনে চলে আসেন আরও এক উর্দিধারী। যিনি কথা বলছিলেন, তিনি দ্বিতীয় উর্দিধারীকে দেখে বলে ওঠেন, ‘‘আমি পালাচ্ছি না স্যর। ১০ টাকা কম আছে। উনি ওরকম করছেন। আমার কাছে নেই তো কী করব!’’ দুই উর্দিধারী নিজেদের মধ্যে কথা বলেন। চালকের সঙ্গেও কথা বলেন। চালকের হাতে কিছু টাকা ছিল। কথা বলতে বলতেই সেই টাকা নিয়ে নেন উর্দিধারী। এর পর গাড়িটি চলতে শুরু করে। কাউকে বলতে শোনা যায়, ‘‘এমন করছে যেন রাস্তাই কিনে রেখে দিয়েছে।’’
গাড়ির ভিতর থেকেই যে কেউ এই ভিডিয়ো রেকর্ড করছিলেন, তা স্পষ্ট। তবে তাঁকে দেখা যায়নি। চালকের মুখও দেখা যায়নি। দেখা গিয়েছে কেবল তাঁর হাত এবং তাতে ধরে রাখা কিছু নোট। সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর এই ভিডিয়ো ঘিরে বিস্তর বিতর্ক হয়েছে। রাতের রাস্তায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন বহু মানুষ। তার পরেই পদক্ষেপ করা হল।
লালবাজার সূত্রে খবর, ভিডিয়োতে যে দু’জনকে দেখা গিয়েছে, তাঁদের এক জন এএসআই এবং এক জন কনস্টেবল। হাওড়া ব্রিজে কী ঘটেছিল, বিভাগীয় তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। দু’জনকেই সাসপেন্ড করা হয়েছে। যত দিন তদন্ত চলবে, তাঁরা সাসপেন্ড থাকবেন। তদন্তের রিপোর্ট লালবাজারের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হাতে যাবে। রিপোর্ট অনুযায়ী প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে।