বাড়িতে দুষ্কৃতী ঢুকে সাধারণত চুরি বা ডাকাতির চেষ্টা করে। ছিনতাই হয় বাড়ির বাইরে। যা অপরাধ জগতের অলিখিত নিয়ম। কিন্তু রবিবার রাতে বড়তলার জয় মিত্র স্ট্রিটের একটি বাড়িতে ঢুকে এক দুষ্কৃতী মধ্যবয়স্ক এক মহিলার হার ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করল। আক্রান্ত মহিলার চিৎকার শুনে এক প্রতিবেশী দুষ্কৃতীকে ধরতে গেলে ছুরির কোপে জখম হয়েছেন। আঘাত লেগেছে মহিলার মাথাতেও।
ঘটনাটি যখন ঘটে, তখন রাত সাড়ে আটটা। শেষ পর্যন্ত ওই দুষ্কৃতীকে পাড়ার লোকজন ধরে ফেলেন। তবে পুলিশ ও বাসিন্দারা এটা ভেবে বিস্মিত যে, কতটা দুঃসাহস হলে কেউ বাড়িতে ঢুকে ছিনতাই করে! পুলিশ জানায়, পেশায় গাড়িচালক সুনীল সাউ নামে ওই দুষ্কৃতীর বাড়ি বেনিয়াপুকুরে।
পুলিশ জানায়, জয় মিত্র স্ট্রিটের ওই বাড়ির একতলায় থাকেন বছর পঞ্চাশের মঞ্জু সোনকার। মুম্বই যাওয়ার জন্য ট্রেন ধরবেন বলে তিনি রবিবার রাতে জিনিসপত্র গোছাচ্ছিলেন। বাড়ির সদর দরজা পেরিয়ে ঢুকে পাশাপাশি ঘর। মঞ্জুদেবী জানিয়েছেন, সদর দরজা ছিল ভেজানো। আচমকাই হুড়মুড়িয়ে দরজা ঠেলে ঘরে ঢুকে সুনীল তাঁর হার ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। চিৎকার করে ওঠেন ওই প্রৌঢ়া। তা শুনে পাশের বাড়ি থেকে ছুটে আসেন সুনীল গুপ্ত নামে এক জন।
স্থানীয় সূত্রে খবর, সুনীলবাবুই ওই দুষ্কৃতীকে জাপটে ধরেন। শুরু হয় ধস্তাধস্তি। অভিযোগ, হঠাৎ ছুরি বার করে সুনীলবাবুর হাতে কোপ মারে ওই যুবক। সুনীলবাবুর আঙুল কেটে রক্ত বেরোতে থাকে। মাথায় চোট লাগে মঞ্জুদেবীরও। সুনীলবাবুকে ধাক্কা মেরে পালাতে যায় দুষ্কৃতী।
যদিও শেষরক্ষা হয়নি। পুলিশ জানায়, দুষ্কৃতীকে তাড়া করেন মঞ্জুদেবীর অন্য প্রতিবেশীরা। ওই যুবক মদ্যপ থাকায় কিছুটা দৌড়ে গিয়ে পড়ে যায়। তখনই স্থানীয়েরা তাকে ধরে ফেলেন। সোমবার আদালতে হাজির করা হলে সুনীলকে পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক।
আক্রান্ত মঞ্জুদেবী রবিবার রাতেই ট্রেন ধরে মুম্বই রওনা হন। এ দিন ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘‘ঘরে ঢুকে কেউ হার ছিনতাইয়ের চেষ্টা করবে, ভাবতেই পারছি না।’’