আলিপুরে অস্ত্র উদ্ধারের পর সাংবাদিক বৈঠক করেন কলকাতা পুলিশের ডিসি (দক্ষিণ) প্রিয়ব্রত রায়। — নিজস্ব চিত্র।
কলকাতার দুই জায়গা থেকে আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করল পুলিশ। স্ট্র্যান্ড রোড এবং আলিপুরের চিড়িয়াখানার কাছ থেকে অনেকগুলি অস্ত্র উদ্ধার হয়েছে। অস্ত্র উদ্ধারের ঘটনায় এখনও পর্যন্ত তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে খবর, আলিপুর চিড়িয়াখানার পাশে অরফানগঞ্জ এলাকায় তল্লাশি চালিয়ে ১১টি বেআইনি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার হয়েছে। এই সব অস্ত্র রাখার অভিযোগে রাজেশকুমার সাউ নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতারও করেছে পুলিশ। সূত্রের খবর, এই রাজেশ বিজেপি নেতা রাকেশ সিংহের পরিচিত। পুলিশ জানিয়েছে, রাকেশের নির্দেশেই অস্ত্র মজুত করা হয়েছিল। তিন মাস আগে ওই এলাকায় অস্ত্রগুলি আনা হয়।
কলকাতা পুলিশের ডিসি (দক্ষিণ) প্রিয়ব্রত রায় বলেন, ‘‘অরফানগঞ্জ এলাকায় মাটির তলায় অনেক অস্ত্র রাখা রয়েছে বলে আমরা জানতে পারি। তার পরেই থানা থেকে পুলিশের একটি দল পাঠানো হয়। সঙ্গে ছিল বম্ব স্কোয়াডও। যৌথ তল্লাশি চালানো হয়। মঙ্গলবার ভোরের দিকে মাটির তলায় পোঁতা ১১টি দেশি এবং উন্নত আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করি। এক জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।’’ যে এলাকা থেকে অস্ত্র উদ্ধার হয়েছে, সেখানে রাকেশের আধিপত্য রয়েছে বলে স্থানীয় সূত্রে খবর। প্রিয়ব্রত বলেন, ‘‘আমাদের কাছে যা তথ্য রয়েছে, তা থেকে জানা গিয়েছে অভিযুক্ত তো বটেই, এই অস্ত্রের সঙ্গে যুক্ত আরও অনেকে রাকেশের খুব ঘনিষ্ঠ।’’ পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, আগ্নেয়াস্ত্রগুলি মুঙ্গের থেকে আনা হয়ে থাকতে পারে।
শুধু আলিপুর নয়, স্ট্র্যান্ড রোড থেকেও অস্ত্র উদ্ধার করেছে কলকাতা পুলিশের স্পেশ্যাল টাস্ক ফোর্স (এসটিএফ)। সূত্রের খবর, ওই এলাকায় দুই পৃথক ব্যক্তির কাছ থেকে দু’টি ব্যাগ উদ্ধার করে তারা। সেই ব্যাগ থেকে তিনটি অত্যাধুনিক আগ্নেয়াস্ত্র পাওয়া গিয়েছে। এ ছাড়াও, বাজেয়াপ্ত হওয়া ব্যাগের মধ্যে ২০ রাউন্ড কার্তুজও পেয়েছে এসটিএফ।
গোপন সূত্রে খবর পেয়ে স্ট্র্যান্ড রোডে বাবুঘাটের কাছে তল্লাশি অভিযান চালানো হয়েছিল। প্রথমে আগ্নেয়াস্ত্রের ব্যাগ-সহ এক ব্যক্তিকে আটক করে এসটিএফ। পরে তাঁকে জেরা করে অপর অভিযুক্তের খোঁজ মেলে। সেই তথ্যের ভিত্তিতে তাঁকেও আটক করে পুলিশ। তাঁর কাছ থেকেও অত্যাধুনিক অস্ত্র উদ্ধার হয়েছে। পরে তাঁদের গ্রেফতার করা হয়। ধৃতেরা হলেন রবীন্দ্র প্রসাদ এবং জিতেন্দ্র প্রসাদ। সম্পর্কে এঁরা দু’ভাই।
কলকাতা জুড়ে চলছে উৎসবের মরসুম। নতুন বছর বরণ করতে এখন তোড়জোড় শহরে। নববর্ষের প্রাক্কালে কলকাতার দুই প্রান্ত থেকে এ ধরনের অস্ত্র উদ্ধার হওয়ায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। কোথা থেকে এত অস্ত্র কলকাতায় এল, কেন অস্ত্রগুলি আনা হয়েছিল, কোনও হামলার ছক ছিল কি না, তা এখনও স্পষ্ট নয়।