নির্দেশিকা সার, অটো এখনও বেলাগামই

পুলিশের নির্দেশিকা আছে, আছে প্রশাসনের আশ্বাসও। কিন্তু শহরের অটো-দৌরাত্ম্যে খামতি নেই! সেই তালিকায় নবতম সংযোজন সোমবার রাতে যাদবপুরে অটোচালকের হাতে তরুণীর চড় খাওয়ার ঘটনা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৫ অগস্ট ২০১৮ ০২:৫৯
Share:

প্রতীকী ছবি।

পুলিশের নির্দেশিকা আছে, আছে প্রশাসনের আশ্বাসও। কিন্তু শহরের অটো-দৌরাত্ম্যে খামতি নেই! সেই তালিকায় নবতম সংযোজন সোমবার রাতে যাদবপুরে অটোচালকের হাতে তরুণীর চড় খাওয়ার ঘটনা। মহানগরের বিভিন্ন এলাকার যাত্রীরা বলছেন, ভাড়া বা গন্তব্য নিয়ে দুর্ব্যবহার তো ছিলই। এ বার ‘অতিরিক্ত পাওনা’ মহিলাদের গায়ে হাত তোলা।

Advertisement

সোমবার রাতের ঘটনায় অভিযুক্ত অটোচালক আশিস সাহাকে পুলিশ গ্রেফতার করে। পরে জামিন পান তিনি। পুলিশের একাংশ বলছে, গ্রেফতার-জামিন আইনি ব্যাপার কিন্তু অটোচালকদের একাংশ যে উর্দিকেও ডরায় না, সেটাই ফের প্রমাণ হল। যদিও লালবাজারের দাবি, বেপরোয়া অটোর বিরুদ্ধে লাগাতার অভিযোগ চলে। উর্দিধারীদের পাশাপাশি সাদা পোশাকেও ধরপাকড় শুরু হয়েছে। সোমবারও যাত্রী প্রতাখ্যানের অভিযোগে গড়িয়া-গোলপার্ক রুটের এক অটোচালককে তিন হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। গড়িয়া-গোলপার্ক রুটের শাসক দলের অটো ইউনিয়নের নেতা দেবরাজ ঘোষের দাবি, অভিযোগ এলেই তাঁরা ব্যবস্থা নেন।

নাগরিকদের অভিজ্ঞতা অবশ্য ভিন্ন। যেমন, উল্টোডাঙা এলাকায় ১৩টি রুটে হাজার তিনেক অটো চলে। অভিযোগ, অনেক অটোই স্ট্যান্ডে না দাঁড়িয়ে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে ঘুরে যাত্রী তোলে। স্থানীয়দের ভাষায় এরা ‘ফ্লাইং অটো’। অভিযোগ, এরা ২৫ টাকার ভাড়া কখনও ২০০ টাকাও নেয়। ফ্লাইং অটো নিয়ে উল্টোডাঙা অটোরিকশা অপারেটর্স ইউনিয়নের এক সদস্যের মন্তব্য, ‘‘এদের জ্বালায় ইউনিয়নের নেতারাও ভুগছেন। ওরা কাউকে মানে না।’’ মন্ত্রী সাধন পাণ্ডে বলছেন, ‘‘অটো-দৌরাত্ম্যের অভিযোগ জানাতে অভিযোগ বাক্স বসানো হবে।’’

Advertisement

শহরের বাসিন্দাদের অনেকে বলছেন, তাঁরা অটোর উপরে নির্ভরশীল। তারই সুযোগ নিচ্ছেন চালকেরা। সেই ছবিই দেখা গেল, দমদম-নাগেরবাজার বা

এয়ারপোর্ট-গোরাবাজার রুটে। সাতগাছির বাসিন্দা শর্মিষ্ঠা দেবনাথ বলেন, ‘‘যানজটের ঠেলায় এখন অটেচালকদের কথাই হল, যতদূর যেতে পারব যাব। প্রাইভেট রোড, বাগজোলা খাল থেকেই অটো

ঘুরিয়ে নিচ্ছে।’’

পুলিশের একাংশ জানাচ্ছে, শহরের সব অটো রুটের বেশির ভাগ চালক বা মালিক শাসক দলের শ্রমিক সংগঠন সদস্য হওয়ায় কড়া ব্যবস্থা নেওয়া যাচ্ছে না। আইএনটিটিইউসি অনুমোদিত দক্ষিণ কলকাতা জেলা অটো ড্রাইভার্স অ্যান্ড অপারেটর্স ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক গোপাল সুতার বলেন, “অটোচালকদের বলছি তাঁদের বিরুদ্ধে দুর্ব্যবহারের অভিযোগ উঠলে ইউনিয়ন পাশে দাঁড়াবে না। পুলিশ যা ব্যবস্থা নেবে তাই হবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন