ভিসা নিয়েও ঢুকছে বাংলাদেশি ডাকাত

ডাকাতির ঘটনায় বারবার মিলছে বাংলাদেশি যোগ। গত এক বছরে ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলে অধিকাংশ বড় ডাকাতির কিনারা করতে গিয়ে পুলিশ দেখেছে, তাতে মূলত বাংলাদেশ থেকে আসা দুষ্কৃতীরাই জড়িত।

Advertisement

বিতান ভট্টাচার্য

শেষ আপডেট: ০৬ মার্চ ২০১৭ ০৩:৩৩
Share:

ছবি: সংগৃহীত

ডাকাতির ঘটনায় বারবার মিলছে বাংলাদেশি যোগ। গত এক বছরে ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলে অধিকাংশ বড় ডাকাতির কিনারা করতে গিয়ে পুলিশ দেখেছে, তাতে মূলত বাংলাদেশ থেকে আসা দুষ্কৃতীরাই জড়িত।

Advertisement

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ডাকাতেরা শিল্পাঞ্চলে এসে অপেক্ষাকৃত ফাঁকা জায়গায় কিছু দিনের জন্য এক কামরার ঘর ভাড়া নিয়ে থাকত। সম্প্রতি টিটাগড়ে এক ব্যবসায়ীর বাড়িতে ডাকাতির ঘটনার তদন্তে নেমে কমিশনারেটের পুলিশকর্তারা জানতে পারেন, ডাকাতির মালপত্র নিয়ে দুষ্কৃতীরা যে বাড়িতে গিয়েছিল, সেটি তারা কিছু দিন আগেই ভাড়া নিয়েছিল। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ৮০০-১০০০ টাকার এই এক কামরার ঘর ভাড়ায় রসিদ দেওয়ার ব্যবস্থা নেই। বাড়িওয়ালারাও আইনকানুনের তোয়াক্কা করেন না।

ফলত আশপাশের জেলার দাগি দুষ্কৃতীদের তালিকা তৈরি করেও কোনও ঘটনাতেই জড়িতদের গ্রেফতার করা যাচ্ছিল না। যতক্ষণে পুলিশ কিনারা করছিল, ততক্ষণে সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশ চলে গিয়েছে ডাকাতদল।

Advertisement

এ বার তাই শিল্পাঞ্চলের মধ্যে যে সব এলাকা পুলিশ-প্রশাসনের অপেক্ষাকৃত কম নজরে, সেই সব এলাকায় অল্প সময় ভাড়া থাকা লোকজনের উপরে বিশেষ নজরদারি শুরু করল ব্যারাকপুর কমিশনারেটের স্পেশ্যাল ব্রাঞ্চ ও প্রতিটি থানার পি সি পার্টির (সাদা পোশাকে থাকা পুলিশ) একটি দল।

সম্প্রতি ব্যারাকপুর কমিশনারেটের ক্রাইম কনফারেন্সে শিল্পাঞ্চলের ঘিঞ্জি এলাকাগুলির পাশাপাশি পঞ্চায়েত এলাকার মধ্যে অল্প সময়ের জন্য থাকা ভাড়াটেদের বিষয়ে খোঁজ নেওয়া ও তার থানা ভিত্তিক খতিয়ান তৈরির নির্দেশ দিয়েছেন নতুন পুলিশ কমিশনার সুব্রত মিত্র। তিনি বলেন, ‘‘নজরদারির জন্য আমরা কয়েকটি জায়গা নির্দিষ্ট ভাবে চিহ্নিত করেছি। ভাড়াটে সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহের কাজও শুরু হয়ে গিয়েছে।’’ ইতিমধ্যেই ব্যারাকপুরের ১৩টি থানা এলাকায় প্রায় ৩০০ বাড়িওয়ালার কাছ থেকে ভাড়াটে সংক্রান্ত তথ্য পুলিশ সংগ্রহ করেছে বলে জানা গিয়েছে।

পুলিশ আরও জানিয়েছে, বেলঘরিয়া, পলতা বা টিটাগড় — প্রতিটি ডাকাতির ঘটনাতেই দুষ্কৃতীদের সঙ্গে এক জন স্থানীয় ‘টিপার’ থাকছে। সে-ই খবরাখবর নিয়ে দল তৈরি করছে। দুষ্কৃতীরা আসছে বনগাঁ, গেদে বা বসিরহাট সীমান্ত পেরিয়ে। ব্যারাকপুর কমিশনারেটের এক কর্তা বলেন, ‘‘রীতিমতো ভিসা-পাসপোর্ট নিয়ে এ দেশে ঢুকে ডাকাতি করে ফিরে যাওয়ার নজিরও রয়েছে বেশ কিছু। কিন্তু তদন্তের পরে যখন বিষয়টি সামনে আসছে, ততক্ষণে দুষ্কৃতীরা ধরাছোঁয়ার বাইরে চলে যাচ্ছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement