পান আর গুটখায় প্রথম দিনেই ‘বর্ণময়’ স্কাইওয়াক

এক হাজার টাকা জরিমানা করা হবে। এ বিষয়ে মানুষকে সতর্ক করতে বোর্ডও লাগানো হবে।’’ কিন্তু মানুষ সচেতন না হলে স্কাইওয়াক কত দিন পরিষ্কার থাকবে, সেই প্রশ্ন কিন্তু প্রথম দিনই উঠে গেল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৭ নভেম্বর ২০১৮ ০১:৫০
Share:

উদ্বোধনের পরের দিন, মঙ্গলবার স্কাইওয়াক খুলে দেওয়া হল সাধারণ মানুষের জন্য। ছবি: সজল চট্টোপাধ্যায়

উদ্বোধনের পরে ২৪ ঘণ্টাও কাটেনি। ঝকঝকে স্কাইওয়াকের সিঁড়ি মঙ্গলবার চিত্রিত হয়ে গেল পান আর গুটখার পিকের লাল দাগে। যদিও কর্তৃপক্ষের নজরে আসার সঙ্গে সঙ্গেই তা পরিষ্কার করে ফেলা হয়েছে। কেউ যাতে স্কাইওয়াক নোংরা না করেন, তার জন্য মাইকে বারবার প্রচারও চালানো হয়েছে। দক্ষিণেশ্বর মন্দিরের অছি ও সম্পাদক কুশল চৌধুরী বলেন, ‘‘আমরা সঙ্গে সঙ্গে পরিষ্কার করে দিয়েছি। স্কাইওয়াকে প্রচুর সিসি ক্যামেরা রয়েছে। ধরা পড়লেই

Advertisement

এক হাজার টাকা জরিমানা করা হবে। এ বিষয়ে মানুষকে সতর্ক করতে বোর্ডও লাগানো হবে।’’ কিন্তু মানুষ সচেতন না হলে স্কাইওয়াক কত দিন পরিষ্কার থাকবে, সেই প্রশ্ন কিন্তু প্রথম দিনই উঠে গেল।

কালীপুজোর দিন প্রতি বছরই দক্ষিণেশ্বর মন্দিরে প্রবল ভিড় হয়। এ দিনও ভিড় ছিল অন্যান্য বারের মতোই। কিন্তু মন্দিরের সামনে ভিড়ে ঠাসা সরু রাস্তার পরিচিত ছবি দেখা যায়নি। সকাল থেকেই দর্শনার্থীরা স্কাইওয়াক ধরে সুষ্ঠু ভাবে পৌঁছে গিয়েছেন মন্দিরের সিংহদুয়ার পর্যন্ত। স্কাইওয়াক চালু হওয়ার পরে নীচের রাস্তা দিয়ে হাঁটা নিষিদ্ধ করে দিয়েছে প্রশাসন। তাই মানুষকে বাধ্য হয়েই স্কাইওয়াক দিয়ে হাঁটতে হচ্ছে।

Advertisement

আরও পড়ুন: ‘মায়ের কথা কি অমান্য করা যায়?’, এ বার রাজভোগ-বার্তা কেষ্টর

স্কাইওয়াকের দৈর্ঘ্য ৩৪০ মিটার। প্রস্থ ১০ মিটার। দক্ষিণেশ্বর স্টেশন থেকে শুরু হয়ে এটি শেষ হয়েছে মন্দিরের সিংহদুয়ারের সামনে। ব্যারাকপুর কমিশনারেট ও বেলঘরিয়ার পুলিশ ছাড়াও দক্ষিণেশ্বরের ২০ জন নিজস্ব নিরাপত্তারক্ষী এ দিন ছিলেন সেখানে। সকাল থেকেই স্কাইওয়াকে ছিল মানুষের ঢল। মন্দিরে যাওয়ার পথে কেউ দাঁড়িয়ে নিজস্বী তুলেছেন তো কেউ স্কাইওয়াক থেকে তুলেছেন মন্দিরের ছবি। সোদপুর থেকে মন্দির দর্শন করতে আসা মিতা আচার্য বললেন, ‘‘প্রতি বছরই কালীপুজোর দিন দক্ষিণেশ্বরে আসি। এ বারও এসেছি। এ বার স্কাইওয়াকও অন্যতম প্রধান আকর্ষণ।’’ যাদবপুরের

সুনন্দা করের কথায়, ‘‘তিন বছর ধরে কাগজে পড়েছি। টিভিতে দেখেছি। আজ নিজের চোখে দেখলাম স্কাইওয়াক। খুব সুন্দর।’’

স্কাইওয়াকের মাঝখানে রয়েছে ১৩৭টি স্টল। সাত দিনের মধ্যে ওই স্টলগুলির হস্তান্তর হয়ে যাবে বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। স্কাইওয়াকে ওঠার জন্য রয়েছে ২০টি লিফট। তার মধ্যে চালু করা হয়েছে ৬টি। রয়েছে পর্যাপ্ত চলমান সিঁড়ি ও সাধারণ সিঁড়িও। রয়েছে প্রচুর সিসিটিভি ক্যামেরা। গেটের সামনে রাখা হয়েছে পথ নির্দেশিকা। বয়স্ক মানুষদের জন্য স্কাইওয়াকে রয়েছে বসার আসনও। রয়েছে পুলিশের ক্যাম্প, দমকলের ক্যাম্প, এমনকি ট্র্যাভেল ডেস্কও। সব দেখে দক্ষিণেশ্বর মন্দিরে আসা ৮২ বছরের চিকিৎসক দুর্গেশ ঘোষের মন্তব্য, ‘‘খুব সুন্দর ব্যবস্থা। কিন্তু একে সুন্দর রাখার দায়িত্ব কিন্তু আমাদের মতো সাধারণ দর্শনার্থীদেরও।’’

দুর্গেশবাবুর সঙ্গে একমত দক্ষিণেশ্বর মন্দিরের অছি ও সম্পাদক কুশল চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘‘স্কাইওয়াক আমাদের সকলের গর্ব। একে পরিষ্কার রাখতে হলে মানুষকেও কিন্তু সচেতন হতে হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন