তৈরির পরে মনে হল ছোট! আরও গচ্চা দিয়ে বাড়বে ‘বিগ বেন’

উচ্চতা কম। তাই তৈরি হয়েও চালু হয়নি এ রাজ্যের তৃতীয় এবং কলকাতা পুর এলাকার দ্বিতীয় ‘বিগ বেন’!

Advertisement

দেবাশিস ঘড়াই

শেষ আপডেট: ০১ ডিসেম্বর ২০১৮ ০০:৩৯
Share:

জট: এই বিগ বেন ঘিরেই বিতর্ক। শুক্রবার, বেনিয়াটোলায়। ছবি: দেশকল্যাণ চৌধুরী

উচ্চতা কম। তাই তৈরি হয়েও চালু হয়নি এ রাজ্যের তৃতীয় এবং কলকাতা পুর এলাকার দ্বিতীয় ‘বিগ বেন’!

Advertisement

দৈর্ঘ্য না বাড়িয়ে তা উদ্বোধন করা হবে না, এমনটাই জানিয়ে দিয়েছেন সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের কাউন্সিলর। সহমত কলকাতা পুরসভাও। তাই ফের লক্ষাধিক টাকা খরচ করে বি কে পাল মোড়ের বিগ বেনের উচ্চতা বাড়ানোর প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছেন পুর কর্তৃপক্ষ। সে ফাইলও তৈরি হয়ে গিয়েছে। কিন্তু তৈরির সময়েই কেন উচ্চতার দিকে নজর দেওয়া হয়নি? এলাকা সৌন্দর্যায়নে এই বাড়তি টাকা খরচের বিতর্কে উঠছে এই প্রশ্নটাই।

পুরসভা সূত্রের খবর, বেনিয়াটোলায় বি কে পাল মোড়ে কাউন্সিলরের আবেদনে সাড়া দিয়ে পুজোর আগেই একটি বিগ বেন বসিয়েছিল পুরসভা। দক্ষিণ দমদম পুর এলাকার অন্তর্গত লেক টাউনে, রাজ্যের প্রথম বিগ বেন দেখার পরে কাউন্সিলরদের একাংশ সেই হুজুগে মেতে উঠেছেন বলে জানাচ্ছেন পুরকর্তারা। কলকাতা পুর এলাকার প্রথম বিগ বেনটি বসেছিল মুচিবাজারে। বি কে পাল মোড়ে লন্ডনের ক্লক টাওয়ারের ছোট সংস্করণ ১৫ ফুট উঁচু ফাইবারের বিগ বেন তৈরিতে প্রায় তিন লক্ষ টাকা খরচ করেছে পুরসভা।

Advertisement

আরও পড়ুন: চাষিদের আয় বেড়েছে তিন গুণ: মমতা

কিন্তু তৈরির পরে কাউন্সিলরের মনে হয়, উচ্চতাটা বড্ড কম হয়ে গিয়েছে। তা বাড়ানো প্রয়োজন। সেই মতোই তিনি আবেদন করেন পুরসভায়। পুরকর্তারাও সহমত হন। তাই দৈর্ঘ্য বাড়াতে দরপত্র আহ্বানের প্রস্তুতি শুরু করেছে পুরসভা। স্থানীয় কাউন্সিলর শিখা সাহা বলেন, ‘‘উচ্চতা অনেকটা ছোট হয়ে গিয়েছে। তাই উচ্চতা আরও দশ ফুট বাড়ানোর পরেই সেটার উদ্বোধন করা হবে।’’ পুরসভা সূত্রের খবর, ফাইবারের অংশ তৈরি করে টাওয়ারের উপরে জুড়ে দেওয়া হবে।

লন্ডনের ব্রিটিশ পার্লামেন্ট ভবন ওয়েস্টমিনিস্টারের উত্তরে অবস্থিত ৩১৬ ফুট উঁচু ক্লক টাওয়ারের ঘণ্টাটির নাম বিগ বেন। এর ওজন ১৩ টন। লোকমুখে ঘণ্টা-সহ ক্লকটিই ‘বিগ বেন’ নামে পরিচিত হয়ে গিয়েছে।

বি কে পালের বিগ বেনের শিল্পী মিন্টু পাল জানাচ্ছেন, উচ্চতা বাড়ানো হলে আরও দু’-আড়াই লক্ষ টাকা খরচ হতে পারে। ওই বিগ বেনে এমনিই অনেক সমস্যা রয়েছে। সেখানে যে ঘ়ড়ি লাগানো হয়েছিল, তা দু’দিন পরেই খারাপ হয়ে যায়। মিন্টুবাবুর কথায়, ‘‘ওই রাস্তা দিয়ে ঘন ঘন লরি যাতায়াত করে। তার কম্পনে সাধারণ ঘড়ি ঠিক থাকছে না। কী ধরনের ঘড়ি ওখানে বসানো হবে, তা নিয়ে আলোচনা চলছে। তবে দম দেওয়া ঘড়ি বসানো হতে পারে।’’

বিগ বেনের উচ্চতা বাড়ানোর সিদ্ধান্তে পুর প্রশাসনের একাংশের প্রশ্ন, এ ভাবে সৌন্দর্যায়নের নামে অহেতুক টাকা খরচের অর্থ কী? এই টাকা তো অন্য পুর পরিষেবার কাজে খরচ করা যায়। টাকা খরচের পাশাপাশি সময়ও তো নষ্ট হচ্ছে এখানে। পুরকর্তাদের দাবি, প্রথমে যখন বসানো হয়েছিল, তখন পর্যাপ্ত টাকা ছিল না। পুজোর আগে এলাকা সৌন্দর্যায়নের ‘চাপ’ ছিল। তাই তড়িঘড়ি তৈরি করা হয়েছিল। এখন টাকার সংস্থান হতেই ‘বড়’ হচ্ছে বিগ বেন। আর শিখাদেবীর যুক্তি, ‘‘শুধু বিগ বেনের জন্য তো নয়! বি কে পাল পার্কে আরও কিছু সৌন্দর্যায়ন হবে। সব মিলিয়েই ফাইল তৈরি হচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন