নেই সচেতনতা, বেপরোয়া বাইক চালিয়ে মৃত্যু

পুলিশ সূত্রের খবর, সোমবার রাত সাড়ে বারোটা নাগাদ পার্ক সার্কাসের ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে এক আত্মীয়কে দেখে মোটরবাইক চালিয়ে কসবার নস্করপাড়ায় বাড়ি ফিরছিলেন পেশায় ব্যবসায়ী গোপাল মণ্ডল (৪২)।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০৩:০৪
Share:

এখানেই রেলিংয়ে ধাক্কা মারে বাইকটি। মঙ্গলবার। —নিজস্ব চিত্র।

বেপরোয়া গাড়ি চালানোর বিরুদ্ধে যতই প্রচার চালানো হোক না কেন এক শ্রেণির চালকের তাতে বিন্দুমাত্র হুঁশ ফিরছে না। সোমবার রাতে বন্ডেল গেট উড়ালপুলে এক মোটরবাইক চালকের মৃত্যুর ঘটনায় ফের তা প্রমাণ হল।

Advertisement

অথচ শহরে দুর্ঘটনা ঠেকাতে রাস্তা জুড়ে পোস্টার, ফেস্টুনে ‘সেফ ড্রাইভ, সেভ লাইফ’-এর প্রচারের বিরাম নেই। বেপরোয়া গাড়ি দুর্ঘটনা ঠেকাতে কলকাতা পুলিশের তরফে নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হচ্ছে। তৈরি হচ্ছে ‘থিম সং’। কিন্তু গাড়ি চালকদের একাংশ যে এ হেন প্রচারে বিন্দুমাত্র সতর্ক হচ্ছেন না সেটাই বারবার প্রমাণিত হচ্ছে।

পুলিশ সূত্রের খবর, সোমবার রাত সাড়ে বারোটা নাগাদ পার্ক সার্কাসের ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে এক আত্মীয়কে দেখে মোটরবাইক চালিয়ে কসবার নস্করপাড়ায় বাড়ি ফিরছিলেন পেশায় ব্যবসায়ী গোপাল মণ্ডল (৪২)। পিছনে বসেছিলেন তাঁর বন্ধু স্বপন দত্ত। তাঁদের দু’জনের মাথাতেই হেলমেট ছিল না বলে পুলিশ জানিয়েছে। পুলিশ সূত্রের খবর, পিকনিক গার্ডেনের দিকে বন্ডেল গেট উড়ালপুলের দিকে নামার মুখে মোটরবাইকটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বাঁ দিকের রেলিংয়ে ধাক্কা মারে। এক পুলিশ আধিকারিক জানান, মোটরবাইকটির গতি এতটাই বেশি ছিল যে চালক ও আরোহী ছিটকে গিয়ে ব্রিজের ধারে রেলিংয়ে গিয়ে পড়েন। বেশি আঘাত পান চালক। তাঁর পেট থেকে রক্তক্ষরণ শুরু হয়। স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছে খবর পেয়ে কসবা থানার পুলিশ আহতের উদ্ধার করে বাইপাসের কাছে একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যায়। মঙ্গলবার সকালে গোপাল মণ্ডল মারা যান। স্বপন দত্ত চিকিৎসাধীন।

Advertisement

এ দিকে সচেতনতামূলক প্রচার সত্ত্বেও বেপরোয়া গাড়ি চালানোর অভ্যাস যে ঠেকানো যাচ্ছে না তা স্বীকার করে নিয়ে লালবাজারের এক কর্তা বললেন, ‘‘শুধুমাত্র জরিমানা বা এক রাত লকআপে রেখে কোনও কাজ হবে না। এর জন্য কঠোর শাস্তি দরকার।’’ ‘সেফ ড্রাইভ সেভ লাইফ’ কমর্সূচির সুফল যে তেমন মিলছে না তা প্রকারান্তরে স্বীকার করে লালবাজারের কর্তাদের কেউ কেউ বলছেন, ‘‘শহরের বেশির ভাগ রাস্তায় গাড়ির সর্বোচ্চ গতি কত তা লেখা থাকলেও অধিকাংশ চালক তা মানেন না।’’ সে ক্ষেত্রে চালক না মানলে পুলিশের তো ব্যবস্থা নেওয়া দরকার। কিন্তু পুলিশি নজরদারির অভাব দেখা যাচ্ছে।

শহরের বিভিন্ন উড়ালপুলে বেপরোয়া গতিতে মোটরবাইক চালানো ঠেকাতে মুখ্যমন্ত্রী শহরের উড়ালপুলগুলির দু’দিকে পুলিশি নজরদারি বাড়াতে নির্দেশ দিয়েছিলেন। অভিযোগ, বাস্তবে তা হচ্ছে না। সোমবার রাতে বন্ডেল গেট উড়ালপুলের দু’দিকেও কোনও পুলিশও ছিল না।
বন্ডেল গেট উড়ালপুল থেকে পিকনিক গার্ডেনের দিকে নামার মুখে একটি পুলিশের কিয়স্ক রয়েছে। কিন্তু রাত এগারোটার পর শহরের সব পুলিশ কিয়স্কও বন্ধ থাকে।
সোমবার রাতে পিকনিক গার্ডেনের কিয়স্কটিও বন্ধ ছিল। এ প্রসঙ্গে অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল বলেন, ‘‘সব উড়ালপুলে পুলিশি নজরদারি করা সম্ভব নয়। তা সত্ত্বেও গত বছরের তুলনায় ২৫ শতাংশ দুর্ঘটনা কমেছে। দুর্ঘটনা ঠেকাতে চালকদের আরও বেশি করে সতর্ক হতে হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন