Kasba Rape Incident

শহরে বিজেপির তথ্যানুসন্ধানী দল, সুকান্ত নিয়ে যাবেন কসবায়, তবে এখনও মেলেনি অনুমতি!

কসবায় ছাত্রীকে গণধর্ষণের ঘটনায় তথ্যানুসন্ধানী দল গড়েছে বিজেপি। দলের সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নড্ডা চার সদস্যের ওই দল গড়ে দিয়েছেন। তাঁরা কসবায় ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যাবেন।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩০ জুন ২০২৫ ১২:০১
Share:

অগ্নিমিত্রা পাল-সহ বিজেপি নেতৃত্বের সঙ্গে বিপ্লব দেব। সোমবার। —নিজস্ব চিত্র।

কসবায় ছাত্রীকে গণধর্ষণের ঘটনায় তথ্যানুসন্ধানী দল গড়েছে বিজেপি। দলের সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নড্ডা চার সদস্যের ওই দল গড়ে দিয়েছেন। সোমবার বেলা সাড়ে ১২টার মধ্যে সেই দলের সদস্যেরা কলকাতায় পৌঁছে গিয়েছেন। প্রথমে আসেন বিজেপি সাংসদ তথা ত্রিপুরার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেব। দলের বাকি সদস্যদের মধ্যে আছেন দুই প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সত্যপাল সিংহ, মীনাক্ষী লেখী এবং রাজ্যসভার সাংসদ মননকুমার মিশ্র। তাঁরাও পৌঁছে গিয়েছেন। কলকাতা বিমানবন্দরে তাঁদের স্বাগত জানান বিজেপি নেত্রী অগ্নিমিত্রা পাল।

Advertisement

এই তথ্যানুসন্ধানী দলের সারা দিনের কর্মসূচি সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছেন অগ্নিমিত্রা। বলেছেন, ‘‘এখান থেকে ওঁদের প্রথমে হোটেলে নিয়ে যাব। সেখান থেকে ওঁরা লালবাজারে যাবেন। কলকাতার পুলিশ কমিশনারের অফিসে একটি অ্যাপয়েন্টমেন্ট চাওয়া হয়েছে। সিপির সঙ্গে দেখা করার আবেদন জানানো হয়েছে। এর পর ৩টে নাগাদ আমরা মুখ্যসচিবের সঙ্গে দেখা করতে চাই। তাঁর দফতরেও মেল করা হয়েছে। তার পর আমরা সাউথ ক্যালকাটা ল কলেজে যাব, যেখানে ঘটনাটি ঘটেছে। সেখান থেকে ওঁরা ৪টে-সাড়ে ৪টে নাগাদ সাংবাদিক বৈঠক করবেন।’’ বিজেপি সূত্রে খবর, বিমানবন্দর থেকে বিজেপির তথ্যানুসন্ধানী দলের সদস্যদের প্রথমে নিউ টাউনের একটি হোটেলে নিয়ে যাওয়া হবে। সেখানে গিয়ে তাঁদের সঙ্গে দেখা করবেন রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। তিনিই বিপ্লব, সত্যপালদের নিয়ে যাবেন কসবায়। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে তাঁরা রিপোর্ট তৈরি করবেন এবং তা জমা দেবেন নড্ডার কাছে। পশ্চিমবঙ্গে এসে বিজেপির অনুসন্ধান কমিটির যাতে ভাষাগত সমস্যা না হয়, অনুমান করা হচ্ছে সেই কারণেই বিপ্লবকে রাখা হয়েছে এই দলে।

কলকাতায় নেমেই রাজ্যের শাসকদলকে আক্রমণ করেছেন বিপ্লব। তিনি বলেন, ‘‘মুখ্যসচিবের কাছ থেকে আমরা সময় চেয়েছি। এখনও সময় দেননি। ল কলেজে যাওয়ার অনুমতিও এখনও আমাদের দেওয়া হয়নি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হাথরসে টিম পাঠাতে পারেন, পহেলগাঁওয়ে টিম পাঠাতে পারেন। কিন্তু যখন বিজেপি বা অন্য কোনও দলের টিম আসবে, তাদের অনুমতি দেওয়া হবে না। এটা অগণতান্ত্রিক মানসিকতা। মেডিক্যাল কলেজ, ল কলেজ, সব জায়গায় একই ঘটনা ঘটছে। তাঁদের নেতাদের যে বয়ান, তা মেনে নেওয়া যায় না। বাংলায় মহিলারা সুরক্ষিত নন। আইনের ছাত্রী, যিনি আগামী দিনে অন্যের জন্য লড়াই করবেন, তাঁর সঙ্গে এই ধরনের ঘটনা ঘটল। এখানে নিরাপত্তা একদমই নেই। মহিলা মুখ্যমন্ত্রীকে ধিক্কার জানাই।’’ মীনাক্ষী বলেছেন, ‘‘মহিলা মুখ্যমন্ত্রীর রাজ্যে বার বার মহিলাদের সঙ্গে এই ধরনের ঘটনা ঘটছে। প্রশাসনের যদি আমাদের সঙ্গে দেখা করার সময় না হয়, তা হলে ওঁরা কী করছেন জানি না। আমরা বিষয়টি দেখতে চাই।’’ কসবায় বিজেপির দলকে যেতে দেওয়া হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন সত্যপাল। বলেছেন, ‘‘নড্ডাজির আদেশে আমরা এখানে এসেছি। আশা করছি, মমতা দিদির সরকার আমাদের ঘটনাস্থলে যেতে দেবে। আলোচনা করতে দেবে। কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলতে দেবে। আশা করছি, পুলিশ কমিশনারের সঙ্গে কথা বলতে পারব।’’

Advertisement

এর আগে কসবায় গিয়েছিল জাতীয় মহিলা কমিশনের একটি প্রতিনিধিদল। সেই দলের নেতৃত্বে ছিলেন কমিশনের সদস্যা অর্চনা মজুমদার। রবিবার সকালে কলেজে গিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন তাঁরা। তাঁদের পুলিশ বাধা দেয়নি। কিন্তু বিজেপি যে দল পাঠিয়েছে, তাকে কসবায় যেতে বাধা দিতে পারে পুলিশ। যদি তা হয়, তবে আবার উত্তেজনা বাড়তে পারে।

বিজেপির তথ্যানুসন্ধানী দলকে কটাক্ষ করেছে তৃণমূল। দলের মুখপাত্র অরূপ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘বিজেপি এ রাজ্যে দল পাঠিয়েছে। পাঠাতেই পারে। এই ধরনের দল আসে। তারা পাঁচতারা হোটেলে এলাহি খাওয়াদাওয়া করবেন এবং তার পর ফ্যাক্ট ফাইন্ড করতে বেরোবেন। দলে আছেন বিপ্লব দেব, যিনি নিজেই বাংলাদেশের নাগরিক বলে অভিযোগ। ত্রিপুরায় একাধিক খুন, ধর্ষণ, বিরোধীদের নির্যাতনের অভিযোগ ওঁর বিরুদ্ধে আছে। সত্যপাল সিংহ আছেন দলে। সেই ব্যক্তি যিনি হাথরসে ধর্ষিতার দেহ পুড়িয়ে ফেলার পর বলেছিলেন, ধর্ষণ থামানো সরকার বা পুলিশের কাজ নয়। মীনাক্ষী লেখী, প্রাক্তন মন্ত্রী। সংসদে যখন বিরোধী সাংসদ বক্তৃতা করছেন, তখন ইনি উঠে দাঁড়িয়ে বলেছিলেন, ‘চুপ রহো, ইডি আ যায়েগি’। ধর্ষণের মতো সংবেদনশীল বিষয়ে তথ্য অনুসন্ধান করতে এঁরা এসেছেন।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement