এই বাড়িতেই কাজ চলাকালীন বিস্ফোরণ ঘটে। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক।
রাজ্য খাদ্য দফতরের জমিতে বিস্ফোরণে গুরুতর ভাবে আহত হল এক শ্রমিক। মঙ্গলবার ঘটনাটি ঘটেছে কাশীপুর থানার গোপাল চট্টোপাধ্যায় রোডে কাশীপুর ফুড ডিপার্টমেন্টের একটি পরিত্যক্ত বাড়িতে।
পুলিশ সূত্রে খবর, কাশীপুরে ওই জমিতে ফুড কর্পোরেশন অব ইন্ডিয়ার অফিস ছিল। রাজ্য খাদ্য দফতরের কাছে তারা ওই জমি ভাড়া নেয়। দেড় মাস আগে ফুড কর্পোরেশন অব ইন্ডিয়া ওই জায়গা ছেড়ে দেয়। তার পর থেকে প্রায় ৭৪টি গুদাম এবং কিছু বাড়ি অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে ছিল। তার মধ্যেই একটি বাড়িতে সম্প্রতি রেশন অফিস খোলার সিদ্ধান্ত নেয় রাজ্য খাদ্য দফতর। সেই মতো কাজ চলছিল। শ্রমিকরা বাড়ির পুরনো অংশ ভেঙে সিমেন্টের চাঙড়গুলো একটা লোহার কড়াইতে করে নিয়ে গিয়ে ফেলে দিয়ে আসছিলেন বাইরে। বেলা দশটা নাগাদ কাজ চলাকালীন দুর্ঘটনাটি ঘটে।
হায়াত আলি নামে এক শ্রমিক জানান, বেলা দশটার সময়ে মুর্শিদাবাদের ঘুল্লার বাসিন্দা শ্রমিক জানাই শেখ (৩০) একটা লোহার কড়াই ভর্তি করে চাঙড় ফেলতে যাচ্ছিলেন বাইরে। হঠাৎই তাঁর হাত থেকে চাঙড়ের কয়েকটা টুকরো মাটিতে পড়ে যায়। চাঙড়ের টুকরোগুলো মাটিতে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভীষণ শব্দ আর ধোঁয়ায় ঘর ভরে যায়। ভয় পেয়ে শ্রমিকরা ছুটে বেরিয়ে আসেন ঘরের বাইরে। কিন্তু, জানাই শেখের আর্ত চিৎকার শুনে হায়াত আলি কয়েকজনকে নিয়ে ওই ধোঁয়ার মধ্যেই ঘরের ভিতরে যান। গিয়ে দেখেন, মাটিতে পড়ে ছটফট করছেন জানাই। তাঁর দু’ চোখের কোল ফেটে গিয়ে রক্ত ঝরছে। আর, তাঁর ডান হাতের কবজি থেকে নীচের অংশটা বাদ গিয়েছে বিস্ফোরণে। ধোঁয়ায় কালো হয়ে গিয়েছে জানাই শেখের মুখ।
হায়াত এবং তাঁর সঙ্গীরা ধরাধরি করে জানাইকে বাইরে নিয়ে আসেন। তাঁরাই জানাইকে ভর্তি করেন আর জি কর হাসপাতালে। কাশীপুর থানায় খবর গেলে পুলিশ সব দিক খতিয়ে দেখে জানাইকে পিজি হাসপাতালে স্থানান্তরিত করে।
দুর্ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন কাশীপুরের ওই ফুড ডিপার্টমেন্টের ইন-চার্জ অলক ভট্টাচার্য। অলকবাবু বলেন, “এত বড় একটা জায়গা, কিন্তু রেশন অফিস ছাড়া আর কোথাও কোনও নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেই!”
কী ভাবে রাজ্য খাদ্য দফতরের ওই বাড়ির মধ্যো বোমা এল, তা নিয়ে এখনও ধন্দে রয়েছে কাশীপুর থানার পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, তারা ঘটনাটির তদন্ত করছে।