ড্রাগ কন্ট্রোল বোর্ডের পরিদর্শন, তাই বাতিল রক্তদান

স্বাস্থ্য ভবন সূত্রে জানা গিয়েছে, লাইসেন্স পুনর্নবীকরণের জন্য এনআরএস হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্ক শুক্রবার ১৪ জুলাই কেন্দ্র ও রাজ্যের ড্রাগ কন্ট্রোল বোর্ড যৌথ ভাবে পরিদর্শন করে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

প্রতীকী ছবি। শেষ আপডেট: ১৭ জুলাই ২০১৭ ১৩:০৯
Share:

পরিদর্শনের পরীক্ষায় পাশ করতে হবে। তাই শিবির বাতিলের অভিযোগ উঠল এনআরএস হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্কের বিরুদ্ধে।

Advertisement

স্বাস্থ্য ভবন সূত্রে জানা গিয়েছে, লাইসেন্স পুনর্নবীকরণের জন্য এনআরএস হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্ক শুক্রবার ১৪ জুলাই কেন্দ্র ও রাজ্যের ড্রাগ কন্ট্রোল বোর্ড যৌথ ভাবে পরিদর্শন করে। অভিযোগ, পরিদর্শনের সময়ে কোনও রকম গোলমাল এড়াতে সপ্তাহ খানেক ধরে রক্তদান শিবির বন্ধ করে দিয়েছিলেন ওই ব্লাড ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ।

দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, পরিদর্শনের পরে ড্রাগ কন্ট্রোল বোর্ড পাশ মার্কস দিয়েছে ওই ব্লাড ব্যাঙ্ককে। কয়েক সপ্তাহ আগে কেন্দ্রীয় ব্লাড ব্যাঙ্কে পরিদর্শন করতে গিয়ে হতচকিত হয়ে গিয়েছিলেন পরিদর্শক দলের সদস্যেরা। বিরক্ত হয়ে তাঁরা স্বাস্থ্য ভবনে রিপোর্ট পাঠিয়েছিলেন। কিন্তু এনআরএস হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্কের ছবি সম্পূর্ণ ভিন্ন। টেকনিশিয়ান থেকে রক্ত সংরক্ষণের পরিকাঠামো, রক্তের ইউনিটের হিসেবের নথি— কোনও কিছু নিয়েই সমস্যা হয়নি। স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তা জানান, যৌথ পরিদর্শক দলের আসার আগেই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ রাজ্য ড্রাগ কন্ট্রোল বোর্ডকে ব্লাড ব্যাঙ্কের পরিকাঠামোর উন্নতি সম্পর্কে পরামর্শ দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেছিলেন। ১১ জুলাই, মঙ্গলবার সেই মতো রাজ্য ড্রাগ কন্ট্রোল বোর্ড তাঁদের পরামর্শ দেন।

Advertisement

কিন্তু রিপোর্টে পাশ নম্বর পেলেও রোগীর পরিবারের অভিযোগের হাত থেকে রেহাই পাননি কর্তৃপক্ষ। ব্লাড ব্যাঙ্ককে ঝাঁ চকচকে রাখতে এবং রক্তের ইউনিটের হিসেব ঠিক রাখার জন্য কেন্দ্রের প্রতিনিধি দলের পরিদর্শনের আগে রক্তদান শিবির বাতিল করা হয়েছে বলে জানান ব্লাড ব্যাঙ্কের কর্মীদের একাংশ। বেশি রক্ত সংগ্রহ করলে নতুন ভাবে হিসেব কষতে হবে, সংরক্ষণের ক্ষেত্রেও কাজ বাড়বে, তাই এমন সিদ্ধান্ত বলে অভিযোগ উঠছে।

আরও পড়ুন: চটজলদি খবর পেতে নয়া অ্যাপ কলকাতা পুলিশের

স্বাস্থ্য দফতরের একাংশ জানান, এনআরএস হাসপাতালে ফি দিন প্রায় দেড়শো ইউনিট হোল ব্লাড এবং বিভাজিত রক্তের প্রয়োজন হয়। সপ্তাহের কাজের দিনে দুই থেকে তিনটি আর সপ্তাহান্তে পাঁচটি রক্তদান শিবির করা হয় হাসপাতলের তরফে। তাতেও চাহিদার জোগান যথেষ্ট হয় না। সপ্তাহভর রক্তদান শিবির বাতিল করার জেরে ভুগতে হচ্ছে রোগীদের।

কর্মীদের একাংশ জানাচ্ছেন, ৬ জুলাইয়ের পরে ৯ এবং ১১ তারিখ ছাড়া শেষ সপ্তাহে কোনও রক্তদান শিবির করা হয়নি। ওই দু’টি শিবির থেকেও খুব বেশি সংগ্রহ হয়নি। যার জেরে রক্তের সঙ্কটে ভুগছে ব্লাড ব্যাঙ্ক। জোগানে এতটাই ভাটা পড়েছে যে, শনিবার শহরের একাধিক সরকারি হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্কে গাড়ি নিয়ে রক্ত সংগ্রহে বেরিয়েছিলেন এনআরএস কর্তৃপক্ষ। মেডিক্যাল কলেজ এবং ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ তাঁদের জোগান দিতে না পরলেও আরজিকর হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্কের থেকে সাহায্য মিলেছে।

রক্তদান শিবির যে বাতিল হয়েছে, তা স্বীকার করেছেন এনআরএস হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্কের অধিকর্তা দিলীপ পাণ্ডা। তবে দিলীপবাবুর দাবি, শিবির তাঁরা বাতিল করেননি। যাঁরা রক্তদান শিবিরের আয়োজন করেছিলেন, তাঁদের কিছু অসুবিধার জন্য শেষ সপ্তাহে কয়েকটি শিবির করা যায়নি। তবে তার জেরে রক্তের সঙ্কট হবে না বলে আশা করছেন তিনি। দিলীপবাবুর কথায়, ‘‘কর্তৃপক্ষ কোনও শিবির বাতিল করতে পারেন না। আয়োজকদের কিছু সমস্যা ছিল, তাই গত সপ্তাহে শিবির বাতিল হয়েছিল। কিন্তু তার জন্য কোনও সঙ্কট তৈরি হয়নি। রবিবার অনেকগুলো রক্তদান শিবির রয়েছে। যেটুকু সমস্যা আছে, আশা করছি তাও মিটে যাবে।’’

ঘটনাটি শুনে স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘‘বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন