অঙ্গ প্রতিস্থাপনের পরে মৃত্যু হল দু’জন গ্রহীতারই। শনিবার ভোরে, এসএসকেএম হাসপাতালে।
এসএসকেএম সূত্রের খবর, শুক্রবার প্রায় সাড়ে ছ’ঘণ্টা ধরে অস্ত্রোপচার করে কিডনি প্রতিস্থাপন হয় মধুমিতা বিশ্বাসের (২৬)। সে দিনই লিভার প্রতিস্থাপিত হয় মেদিনীপুরের শচীন্দ্রনাথ মিশ্রের (৫৪)। কিন্তু শনিবার ভোর ৩টে ২০ মিনিটে মারা যান শচীন্দ্রনাথবাবু। সাড়ে তিনটে নাগাদ মৃত্যু হয় মধুমিতার।
এ দিন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানান, প্রতিস্থাপনের নিয়ম মেনে অঙ্গদাতা পাওয়ার পরেই গ্রহীতাদের জানানো হয়েছিল। হাসপাতালে ভর্তি করে দু’জনের প্রয়োজনীয় শারীরিক পরীক্ষাও হয়েছিল। রিপোর্ট পাওয়ার পরে চিকিৎসকেরা প্রতিস্থাপনের জন্য অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। এসএসকেএমের অধিকর্তা অজয়কুমার রায়ের কথায়, ‘‘দু’টি প্রতিস্থাপনই নিয়ম মেনে হয়েছে। এখানে প্রতি মাসে একাধিক বার এ ধরনের অস্ত্রোপচার হয়। অধিকাংশই সফল হয়। এই দু’জনের দেহেও সফল ভাবে অঙ্গ প্রতিস্থাপিত হয়েছিল। তার পরেও কেন এমন হল, তা নিয়ে বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলোচনা হবে।’’
হাসপাতাল সূত্রের খবর, বুধবার কল্যাণী সরকার (৫৭) নামে এক মহিলা স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে বাইপাসের এক বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হন। বৃহস্পতিবার চিকিৎসকেরা তাঁর ‘ব্রেন ডেথ’ ঘোষণার আর্জি জানান স্বাস্থ্য দফতরে। পরিবারের সম্মতি নিয়ে স্বাস্থ্য দফতরের নিযুক্ত নোডাল অফিসার কল্যাণী সরকারের ‘ব্রেন ডেথ’ ঘোষণা করেন। শুরু হয় অঙ্গ প্রতিস্থাপনের অনুমতির প্রক্রিয়া। সরকারের কাছে জমা পড়া আবেদনের তালিকা দেখে স্থির হয় গ্রহীতাদের নাম। শুক্রবার বিকেলে গ্রিন করিডর করে অঙ্গ পৌঁছয় এসএসকেএমে।
শুক্রবার অন্য একটি কিডনি প্রতিস্থাপিত হয় ওই বেসরকারি হাসপাতালে। প্রতিস্থাপনের পরে রোগীর অবস্থা স্থিতিশীল বলে জানান ওই হাসপাতালের চিকিৎসকেরা।
মধুমিতাদেবী এবং শচীন্দ্রনাথবাবুর মৃত্যু প্রসঙ্গে স্বাস্থ্য দফতরের অতিরিক্ত স্বাস্থ্য অধিকর্তা অদিতিকিশোর সরকার বলেন, ‘‘দফতরের কর্মীরা এত কাজ করলেন জীবন বাঁচানোর জন্য। তাও মৃত্যুর সংবাদ খুব দুঃখজনক। কিন্তু দফতরের এই উদ্যোগ চলবে।’’