পুর বাজেটে নারদ নারদ

উপলক্ষ ছিল, পুর বাজেট। কিন্তু তা ছাপিয়ে শনিবার বড় হয়ে উঠল নারদ-কাণ্ড। লক্ষ্য, মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়। মেয়র বাজেট-বক্তৃতা শুরু করতেই রে রে করে ওয়েলে নেমে আসেন বিরোধী কাউন্সিলরেরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৯ মার্চ ২০১৭ ০১:২৪
Share:

তুলকালাম: পুরসভার অধিবেশন কক্ষে তখন যুযুধান দুই পক্ষ। শনিবার। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক

উপলক্ষ ছিল, পুর বাজেট। কিন্তু তা ছাপিয়ে শনিবার বড় হয়ে উঠল নারদ-কাণ্ড। লক্ষ্য, মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়।

Advertisement

মেয়র বাজেট-বক্তৃতা শুরু করতেই রে রে করে ওয়েলে নেমে আসেন বিরোধী কাউন্সিলরেরা। হাতে প্ল্যাকার্ড— ‘নারদ ঘুষ-কাণ্ডে কলঙ্কিত মেয়রকে পদত্যাগ করতে হবে’। পাল্লা দিতে তেড়ে আসেন শাসকদলের কাউন্সিলরেরাও। দু’পক্ষে শুরু হয় ধস্তাধস্তি, হাতাহাতি। অধিবেশন প্রায় পণ্ড হওয়ার উপক্রম। সেই চেঁচামেচির মধ্যেই মেয়র গড়গড় করে বাজেটের বই পড়ার চেষ্টা চালান। তবে বেশিক্ষণ টানতে পারেননি। ২৭ পাতার বাজেটের পুরোটা না পড়েই ইতি টেনে বেরিয়ে যান তিনি।

এ দিন বেলা একটায় বাজেট-অধিবেশন শুরু হয়। প্রথমে চেয়ারপার্সন মালা রায় রাজ্যে সদ্য প্রয়াত বিশিষ্টজনেদের শ্রদ্ধায় শোকপ্রস্তাব পাঠ করেন। এক মিনিট নীরবতা পালনও হয়। এর পরেই চেয়ারপার্সন ঘোষণা করেন, ‘এ বার বাজেট পেশ করবেন মহানাগরিক’। মেয়র মাইক স্ট্যান্ডের দিকে যাওয়ার আগেই বিজেপি-র মীনাদেবী পুরোহিত বলতে থাকেন, ‘‘ঘুষ-কাণ্ডে কলঙ্কিত মেয়রকে পদত্যাগ করতে হবে’’। সঙ্গে গলা মেলান সিপিএমের রত্না রায়মজুমদার, কংগ্রেসের প্রকাশ উপাধ্যায়-সহ সমস্ত বিরোধী কাউন্সিলর। এমনটা যে হতে পারে, তা আঁচ করেননি মেয়র-সহ শাসক দলের কেউই। মুহূর্তেই
চরম বিশৃঙ্খলা শুরু হয় অধিবেশনকক্ষে। তৃণমূলের বৈশ্বানর চট্টোপাধ্যায় প্রথমেই প্রতিবাদ শুরু করেন। মেয়রের বক্তৃতায় বাধা সহ্য করতে পারেননি উত্তর কলকাতার ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সুনন্দা সরকার। একে একে আসন ছেড়ে বিরোধীদের তাক করে এগিয়ে যান অসীম বসু, তপন দাশগুপ্ত, শান্তনু সেন, জসিমুদ্দিনেরা। চলে ধাক্কাধাক্কি। অধিবেশনের বক্তব্য রেকর্ড করতে যাঁরা বসেছিলেন, সকলেই জায়গা ছেড়ে ভয়ে পালিয়ে যান। নিজের জায়গা থেকে সরে যান পুর সচিব হরিহরপ্রসাদ মণ্ডলও। হতবাক কক্ষে হাজির থাকা ১২ জন মেয়র পারিষদও। অধিবেশনকক্ষ তখন বিরোধীদের চিৎকারে তোলপাড়।

Advertisement

আরও পড়ুন: চাহিদা কমছে হলুদ ট্যাক্সির

পরে মেয়রের ঘরের সামনে গিয়েও বিক্ষোভ দেখান বিরোধীরা। তাঁদের অভিযোগ, পুরসভার ইতিহাসে এই প্রথম বাজেটের বই বিরোধীদের হাতে না দিয়েই তা পড়া শুরু করে দেন মেয়র। যা শুনে মেয়র শোভনবাবু বলেছেন, ওঁরা বাজেট শুনতে চাননি, আসনেও ছিলেন না। ওঁদের তা দেওয়া হবে কী ভাবে?’’ না পেলে বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হবে বলেও টিপ্পনি করেন মেয়র। নারদ নিয়ে তাঁর বিরুদ্ধে তোলা অভিযোগ প্রসঙ্গে মেয়র বলেন, ‘‘১৪ মাস আগে তোলা ওই অভিযোগের জবাব মিলেছে ভোটের ফলে। মানুষের কাছে দায়বদ্ধ আমরা। মানুষের উন্নয়নেই এই বাজেট। বিরোধীরা কে কী বলল, তাতে কিছু আসে যায় না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন