পিজি-তে গ্রেফতার ১

দালাল-চক্রে আয়া যোগ

সরকারি হাসপাতালের আয়াদের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ বারবারই উঠেছে। এ বার এসএসকেএম হাসপাতালের দালাল চক্রের সঙ্গেও আয়ার যোগসূত্র পেল পুলিশ। এক রোগীর পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার এক আয়াকে গ্রেফতারও করেছে ভবানীপুর থানার পুলিশ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৪ নভেম্বর ২০১৬ ০১:১৫
Share:

সরকারি হাসপাতালের আয়াদের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ বারবারই উঠেছে। এ বার এসএসকেএম হাসপাতালের দালাল চক্রের সঙ্গেও আয়ার যোগসূত্র পেল পুলিশ। এক রোগীর পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার এক আয়াকে গ্রেফতারও করেছে ভবানীপুর থানার পুলিশ।

Advertisement

পুলিশ জানায়, ওই আয়ার নাম কল্পনা দাস। তার বাড়ি বেহালার বি এল শাহ রোডে। আজ, শুক্রবার ধৃতকে আদালতে পেশ করা হবে। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, ওই আয়ার সঙ্গে হাসপাতালের একদল চিকিৎসক এবং নিচুতলার বেশ কয়েক জন কর্মী জড়িত। কয়েক দিন আগেই আরজিকর হাসপাতালে আয়াদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছিল এক প্রসূতিকে মারধরের।

পুলিশ সূত্রের খবর, মাস ছয়েক আগে বাঁ হাতে আঘাত পেয়েছিলেন বেহালার বি এল শাহ রোডের বাসিন্দা বাপি কর। ওই হাসপাতালের অর্থোপেডিক বিভাগে তাঁর হাতের অস্ত্রোপচার হয়। এ দিন ওই বিভাগে বাপি যান সেই হাতের অবস্থা কী রকম রয়েছে, তা চিকিৎসকদের দেখাতে। পুলিশের কাছে বাপির অভিযোগ, মাস ছয়েক আগে তার হাত ভাঙার পরে কল্পনা তাঁকে ওই হাসপাতালে চিকিৎসিকদের কাছে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসার ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন। বাপির আরও অভিযোগ, ওই চিকিৎসার জন্য কল্পনা তাঁর কাছ থেকে সেই সময়ে তিন হাজার টাকা নিয়েছিলেন। বৃহস্পতিবার ফের চিকিৎসকের সঙ্গে দেখা করার প্রয়োজন হলে তিনি হাসপাতালে পৌঁছে কল্পনার সঙ্গে দেখা করেন। পুলিশ জানায়, কল্পনা এবং বাপি দূর সম্পর্কের আত্মীয়। এ দিন কল্পনা চিকিৎসককে দেখানোর জন্য ছ’হাজার টাকা চান বাপির কাছে। ফের টাকা চাওয়ায় বেঁকে বসেন বাপি। তিনি সরাসরি চিকিৎসকদের সঙ্গে দেখা করতে চান। কিন্তু বাপির অভিযোগ, ওই চিকিৎসক বাপির সঙ্গে দেখা করতে অস্বীকার করেন। এর পরে বাপি কল্পনাকে নিয়ে সোজা হাসপাতাল সুপারের কাছে যান অভিযোগ জানাতে। সেখান থেকে খবর যায় পুলিশের কাছে। বাপির অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনাস্থল থেকেই গ্রেফতার করা হয় কল্পনাকে।

Advertisement

পুলিশ জানায়, রাজ্যের ওই সরকারি সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে পরপর বেশ কয়েকটি ঘটনায় দালাল চক্রের নাম উঠে আসার পরেই মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে দালালদের বিরুদ্ধে লাগাতার অভিযান চালায় পুলিশ। তাতে হাসপাতাল থেকে গ্রেফতার করা হয় সাত জন দালাকে। পুলিশি অভিযানের পরেই এলাকা থেকে গা ঢাকা দিয়েছিল দালাল চক্রের সদস্যেরা। কিন্তু পুজোর পরেই আবার হাসপাতালে ফিরতে শুরু করেছে তারা। গত সপ্তাহেই গ্রেফতার করা হয় মুর্শিদাবাদের বাসিন্দা এক দালালকে। কিন্তু এ বারই প্রথম এক আয়াকে গ্রেফতার করা হল দালাল চক্রের সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগে।

প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশের দাবি, হাসপাতালের চিকিৎসক থেকে শুরু করে কর্মীদের একাংশের মদতেই ওই দালাল চক্রের সদস্যদের রমরমা।ওই আয়া ছাড়াও চক্রে বেশ কয়েক জন চিকিৎসক ও অন্য কর্মীদের নাম উঠে এসেছে তদন্তে। পুলিশ জানিয়েছে, তদন্তে উঠে আসা সব নাম-সহ বিস্তারিত তথ্য জানানো হয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন