Firecrackers

Kali Puja 2021: সবুজ বাজি নিয়ে ধোঁয়াশা, ঝিমিয়ে বাজার

যদিও দেশের সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশের প্রেক্ষিতে দক্ষিণ ২৪ পরগনার নুঙ্গি ও চম্পাহাটির বাজি ব্যবসায়ীদের মুখে হাসি ফুটেছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৩ নভেম্বর ২০২১ ০৫:৪২
Share:

অপেক্ষা: বাজি নিয়ে বহাল দোলাচল, ক্রেতারও তেমন দেখা নেই। নুঙ্গি বাজারে, মঙ্গলবার। —নিজস্ব চিত্র।

বাজির ধোঁয়া ছড়ানোর আগেই গ্রাস করেছে অনিশ্চয়তার ধোঁয়াশা। ক্রেতা তো বটেই, বিক্রেতা বা পুলিশকর্মীরাও জানেন না, পরিবেশবান্ধব বা সবুজ বাজির তকমা আসলে কোন বাজির ভাগ্যে জুটতে পারে। কারণ, পরিবেশবান্ধব বাজির নির্দিষ্ট কোনও তালিকাই নেই কারও হাতে! ফলে পুলিশ এখন কোন বাজি বাজেয়াপ্ত করবে, ধন্দ তা নিয়েই। আপাতত আতশবাজি বাজেয়াপ্ত করা ছেড়ে চকলেট বোমার মতো শব্দবাজি ধরতেই মন দিয়েছে তারা। সোমবার সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশিকায় পরিবেশবান্ধব, অর্থাৎ সবুজ বাজির বিক্রিতে ছাড় দেওয়ার পরেই এই দোলাচলের শুরু।

যদিও দেশের সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশের প্রেক্ষিতে দক্ষিণ ২৪ পরগনার নুঙ্গি ও‌ চম্পাহাটির বাজি ব্যবসায়ীদের মুখে হাসি ফুটেছে। যদিও তাঁদের কারও কারও আক্ষেপ রাত আটটা থেকে দশটা, মাত্র দু’ঘণ্টা বাজি পোড়ানোর অনুমোদন নিয়ে। কিন্তু সব কিছুকে ছাপিয়ে গিয়েছে পরিবেশবান্ধব বাজি নিয়ে ধন্দ। নিজেদের তৈরি আতশবাজি কতটা পরিবেশবান্ধব, তা নিয়ে নিশ্চিত নন ব্যবসায়ীরাই। তৎসত্ত্বেও মঙ্গলবার সকাল থেকেই দোকান সাজিয়ে বসেছেন তাঁরা।

Advertisement

কিন্তু বিকেল হলেও ক্রেতার ঢল নামেনি সে ভাবে। পাইকারি ও খুচরো ব্যবসায়ীদের কাছে খদ্দের এসেছেন হাতে গোনা। নুঙ্গির এক ব্যবসায়ী বলছেন, ‘‘সপ্তাহের কাজের দিন বলে খদ্দের এসে পৌঁছতে পারছেন না। এখানে দিনরাত বাজি বিক্রি হয়। বুধবার থেকে ক্রেতারা আসতে শুরু করবেন বলে আশা করছি।’’

এ দিন সকাল থেকেই পুলিশকর্তাদের নির্দেশে নুঙ্গি ও চম্পাহাটি বাজারে চলেছে টহলদারি। সোমবার পর্যন্ত শব্দবাজির পাশাপাশি আতশবাজিও বাজেয়াপ্ত করা হচ্ছিল বলে পুলিশ সূত্রের খবর। কিন্তু এ দিন সকাল থেকে শুধুই শব্দবাজির খোঁজে তল্লাশি অভিযান চলেছে। এক পুলিশকর্তার কথায়, ‘‘এক দিকে রুজি-রুটির প্রশ্নে ব্যবসায়ীদের বাজি বিক্রি করতে দিতে ব্যবসায়ীদের চাপ। অন্য দিকে, আদালত ও রাজ্য সরকারের নির্দিষ্ট নির্দেশিকা নেই। পরিবেশবান্ধব বাজির কোনও তালিকাই নেই। এক বছর আগে তৈরি বাজি কোনটা, সেটা বোঝার কোনও প্রমাণ নেই। সব মিলিয়ে আমরা অসহায়।’’

Advertisement

পরিবেশবান্ধব আতশবাজি ঠিক কী বস্তু, জানেন না প্রায় কোনও বাজি ব্যবসায়ীই। চরকি, ফুলঝুরি, রংমশাল, তুবড়ির গুরুত্বপূর্ণ উপাদান
বেরিয়াম সল্ট। কিন্তু পরিবেশ দূষণ ঘটানো ওই পদার্থ সবুজ আতশবাজিতে থাকবে না বলে সর্বোচ্চ আদালত তার নির্দেশে উল্লেখ করেছে। চম্পাহাটির হাড়ালের বাজি বাজারে দোকানে বসে এক ব্যবসায়ীর স্বীকারোক্তি, ‘‘আমি কারখানায় ছোট, বড় ও মাঝারি মাপের চরকি বানিয়েছি। কিন্তু তাতে বেরিয়াম সল্ট ব্যবহার হয়েছে। বেরিয়াম ছাড়া কী ভাবে চরকি তৈরি করব, জানি না। এত দিন জানতাম শব্দবাজি নিষিদ্ধ। এখন তো শুনছি, আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী এই সব বাজিও নিষিদ্ধ হল!’’

সবুজ বাজির ধোঁয়াশার মধ্যেই উঁকি মারছে অন্য আতঙ্ক। এক বছর আগে তৈরি করা বিপুল পরিমাণ মজুত বাজি এ বছর বিক্রি করা হচ্ছে। গত কয়েক মাস টানা বৃষ্টি হয়েছে। মজুত বাজি শুকোতে দেওয়ার তেমন সুযোগ ছিল না। সে ক্ষেত্রে ওই সব আতশবাজি কী অবস্থায় আছে, তা ব্যবসায়ীরাই নিশ্চিত ভাবে বলতে পারছেন না। প্রকাশ্যে অবশ্য এক ব্যবসায়ী বললেন, ‘‘এ সব নিয়ে দুশ্চিন্তার কোনও কারণ নেই।’’

যদিও বাজির আঁতুড়ঘরেই কানাঘুষো শোনা যাচ্ছে পুরনো বাজির নিরাপত্তা নিয়ে। মজুত বাজি বিক্রির জন্যই নাকি ব্যবসায়ীরা বলছেন, ‘‘কোনও ঝুঁকি নেই।’’ পরিস্থিতি আসলে কী, তা বলবে উৎসবের রাত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন