—প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।
নির্ধারিত দিন ২৮ অগস্টেই হবে পরীক্ষা। জানিয়ে দিলেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী উপাচার্য শান্তা দত্ত দে। ওই দিন তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবস। অধ্যক্ষদের একাংশ ওই দিন গন্ডগোলের আশঙ্কা করছেন। পড়ুয়াদের একাংশের তরফেও পরীক্ষা পিছিয়ে দেওয়ার দাবি জানানো হয়েছে। সোমবারের পরে মঙ্গলবার এই দাবি জানিয়ে শান্তাকে চিঠি দিয়েছে অধ্যক্ষদের সংগঠন। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী উপাচার্য জানিয়েছেন, পড়ুয়াদের একাংশ যে কথা বলছে অধ্যক্ষদের একাংশও সেই সুরে বার্তা দিচ্ছেন, যা ‘অনভিপ্রেত’।
২৮ অগস্ট কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়েরও বিএ এলএলবি এবং বিকম চতুর্থ সেমিস্টারের পরীক্ষা। পড়ুয়া, অধ্যক্ষ, অধ্যাপক, শিক্ষাকর্মীদের একাংশের তরফ থেকে পরীক্ষার দিন পিছিয়ে দেওয়ার দাবি জানানো হয়েছে। শান্তাকে সোমবার চিঠি দিয়েছে তৃণমূল সমর্থিত অধ্যাপকদের সংগঠন ওয়েবকুপা। সোমবারের পর ফের পরীক্ষা পিছিয়ে দেওয়ার আবেদন জানিয়ে মঙ্গলবার শান্তাকে চিঠি দিয়েছে নিখিল বঙ্গ অধ্যক্ষ পরিষদ। তাদের দাবি, ২৮ অগস্ট পরীক্ষা হলে ছাত্রছাত্রীরা অসুবিধায় পড়বে।
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী উপাচার্য যদিও স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, পরীক্ষা হবে নির্ধারিত দিনেই। তিনি বলেন, ‘‘যে দাবি তোলা হচ্ছে, তা অনৈতিক। পড়ুয়াদের একাংশ যে কথা বলছে, অধ্যক্ষদের একাংশও সেই সুরে বার্তা দিচ্ছেন। যা অনভিপ্রেত।’’ এর পরেই নিখিল বঙ্গ অধ্যক্ষ পরিষদের তরফে দাবি করা হয়, তাঁদের ‘অসম্মান’ করেছেন উপাচার্য। তাদের কথায়, ‘‘সে দিন যে সকল ছাত্রছাত্রীরা পরীক্ষা দিতে আসবেন, তাঁরা যদি সময় মতো পরীক্ষা হলে পৌঁছোতে না পারেন, তা হলে কী হবে! অধ্যক্ষদের বিপদের মুখে ফেলে দিয়েছেন উপাচার্য।’’ নিখিল বঙ্গ অধ্যক্ষ পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মানস কবি বলেন, ‘‘এই পরিস্থিতিতে আমরা ভীত এবং সন্তস্ত্র। শিক্ষাকর্মীরা যদি কলেজে পৌঁছোতে না পারেন, তা হলে পরীক্ষা পরিচালনা করতে সমস্যায় পড়বেন অধ্যক্ষেরা।’’ অধ্যক্ষেরা আরও বলেন, ‘‘রাজনীতি না করে ছাত্রছাত্রী এবং শিক্ষক, শিক্ষাকর্মীদের কথা ভেবে পরীক্ষার দিন পরিবর্তন করা উচিত।’’
এর পরেই উপাচার্য শান্তা দত্ত বলেন, ‘‘সরকার এবং দলকে গুলিয়ে ফেললে হবে না। সরকার সকলের। সরকার শাসকের, বিরোধীদলের, ভিখারি এবং রাজারও। পরীক্ষা নির্দিষ্ট দিনই হবে। তা পিছিয়ে দেওয়া হবে না।’’
রবীন মুখার্জি কলেজের অধ্যক্ষ শ্রীকুমার রায় বলেন, ‘‘কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ১৫০টি কলেজ রয়েছে। যে ছাত্র ক্যানিং থেকে কলকাতায় পরীক্ষা দিতে আসবেন, তিনি সময় মতো পৌঁছোতে পারবেন না। আমাদের আশঙ্কা, এখানে একটা গন্ডগোল তৈরি হবে। আমরা পরীক্ষা পরিচালনা করি, উপাচার্য নন। আমাদের বিপদের মধ্যে ফেলা হল।’’ এজেসি বোস কলেজের অধ্যক্ষ সমীরণ মণ্ডল বলেন, ‘‘বিশ্ববিদ্যালয়ের উচিত পড়ুয়াদের কথা ভাবা। রাজনৈতিক স্বার্থ নয়। আমরা শিক্ষক। কোনও পরীক্ষার্থী যদি সময়ের অভাবে পরীক্ষায় বসতে না পারেন, সেটা আমরা কোনও ভাবেই মেনে নিতে পারি না। তাই পরীক্ষার দিন পরিবর্তন করা উচিত।’’
গত ১ অগস্ট ওই পরীক্ষার দিন পরিবর্তনের পরামর্শ দিয়ে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্যকে চিঠি দিয়েছিল উচ্চশিক্ষা দফতর। সে চিঠিতে জানানো হয়েছিল, ২৮ অগস্ট কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে ১২ বিষয়ের পরীক্ষা রয়েছে। কলকাতা সংলগ্ন এলাকায় মিছিল এবং সভার জন্য পরীক্ষার্থীদের অসুবিধা হতে পারে। শান্তা যদিও নিজের সিদ্ধান্ত অনড় রয়েছেন। মঙ্গলবার ফের জানিয়ে দিলেন, নির্ধারিত সময়ে পরীক্ষা হবে।