নিষিদ্ধ খাটাল শহরের সর্বত্র, দক্ষিণের পরে উত্তর কলকাতাতেও মিলল সে ছবি।
চিৎপুর থানার লকগেট সেতুর নীচেই সওদাগর পট্টি। সেখানে খোলা জায়গায় সেতুর থামের সঙ্গে সারি দিয়ে বাঁধা গরু-মোষ। তার পাশ দিয়ে নাকে রুমাল চাপা দিয়ে যাতায়াত করছেন স্থানীয় বাসিন্দা, স্কুলপড়ুয়া এবং অফিসযাত্রীরা। কোথাও আবার খোলা মাঠে দাঁড় করিয়ে রাখা গরু, মোষ। রয়েছে সামনে টালির চালের ভিতরেও।
খাটাল মালিক মহম্মদ ইয়াসিন জানান, ফোর্ট উইলিয়াম, বড় বড় হোটেলে এবং মিষ্টির দোকানে তাঁরা দুধ সরবরাহ করেন। প্রতিটি খাটাল থেকে দৈনিক প্রায় কয়েকশো লিটার দুধ সরবরাহ করা হয়। খদ্দের আছে
নতুন বা পুরোনো গরু-মোষ-বাছুর কেনাবেচারও।
আমহার্স্ট স্ট্রিটের কৈলাস বসু স্ট্রিটের ভূতগলি। এক জনের বাড়ির ভিতরে রয়েছে প্রায় ১০-১২টি গরু-মোষ। ওই খাটাল মালিক জানালেন, স্থানীয় এলাকা ছাড়াও বাইরের বিভিন্ন জায়গায় এবং অনুষ্ঠান বাড়িতে দুধ সরবরাহ করেন। মোষের তুলনায় গরুর দুধের কাটতিই বেশি। টালা থানা এলাকার ওলাইচণ্ডী রোডে এক জনের বাড়ির পিছনেও দেখা গেল বেশ বড় একটি খাটাল। সেটি ওই পরিবারের সম্পত্তি বলেই জানালেন স্থানীয় বাসিন্দারা। একই ভাবে প্রায় প্রতিটি পরিবারে ছোট-বড় খাটাল রয়েছে মানিকতলার মুন্সিপাড়া লেনেও।
কিন্তু এ ভাবে নিষিদ্ধ খাটাল ব্যবসা চলে কী করে? রাধানাথ হালদার নামে টালার এক খাটাল ব্যবসায়ী বলেন, ‘‘আমাদের আটকে দিলে বহু লোকের ব্যবসা লাটে উঠে যাবে। তাই সব জেনেও কেউ আমাদের আটকায় না।’’ পুলিশ চাইলেও যে খাটাল তুলে দিতে পারে না, তা স্পষ্ট লালবাজারের এক পুলিশকর্তার কথায়। ওই কর্তা বলেন, ‘‘খাটালের দায়িত্ব সম্পূর্ণ পুরসভার এক্তিয়ারে। পুরসভা না চাইলে আমরা হস্তক্ষেপ করতে পারি না।’’
আর এই সমস্ত খাটাল নিয়ে কি বলছেন কলকাতার মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়? শহরে যে খাটাল রয়েছে, তা মেনে নিয়ে এ দিন তিনি বলেন, ‘‘পেট চালানোর জন্য কিছু লোক এই ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত। সাধারণ মানুষের তরফ থেকে কোনও অভিযোগ আমার কাছে আসেনি। কেউ অভিযোগ করলে নিশ্চয়ই তা দেখে নেব।’’