Rose Valley

অফিস থেকে শ্রীকান্ত মোহতাকে আটক করে নিয়ে গেল সিবিআই

সিবিআই আধিকারিকদের অভিযোগ, কসবা থানার পুলিশ গোয়েন্দাদের পরিচয় জানার পরও তাঁদের কাজে বাধা দেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৪ জানুয়ারি ২০১৯ ১৫:১৭
Share:

শ্রীকান্ত মোহতা।—ফাইল চিত্র।

রোজভ্যালি-কাণ্ডে শ্রী ভেঙ্কটেশ ফিল্মস (এসভিএফ) কর্ণধার শ্রীকান্ত মোহতাকে তাঁর অফিস থেকে আটক করে সিবিআই দফতরে জেরা করতে নিয়ে গেলেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা। বৃহস্পতিবার বেলা ৩টে নাগাদ তাঁকে কসবার অফিস থেকে আটক করেন সিবিআই আধিকারিকরা। এর আগে, বেলা সাড়ে ১১টা নাগাদ শ্রীকান্তের অফিসে পৌঁছন সিবিআই গোয়েন্দারা। সেখানে তাঁরা এসভিএফের অফিসে ঢুকতে গেলে শ্রীকান্তর ব্যক্তিগত দেহরক্ষীরা গোয়েন্দাদের বাধা দেন বলে অভিযোগ। সিবিআই আধিকারিকদের দাবি, কসবা থানার পুলিশও তাঁদের কাজে বাধা দেন।

Advertisement

কসবার একটি অভিজাত মলের ১৯ তলায় এসভিএফ-এর অফিস। এ দিন সকাল সাড়ে ১১টা নাগাদ রোজভ্যালি-কাণ্ডের তদন্তকারী আধিকারিক-সহ সিবিআই গোয়েন্দাদের একটি দল সেখানে পৌঁছয়। সিবিআইয়ের একটি সূত্রের দাবি, সেই সময় নিজের দফতরেই ছিলেন শ্রীকান্ত মোহতা। গোয়েন্দারা তাঁর দফতরে ঢুকতে চাইলে শ্রীকান্তের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা রক্ষীরা তাঁদের বাধা দেন। কিছুক্ষণের মধ্যেই সেখানে হাজির হয় কসবা থানার একটি বড় বাহিনী।

সিবিআই আধিকারিকদের অভিযোগ, কসবা থানার পুলিশ গোয়েন্দাদের পরিচয় জানার পরও তাঁদের কাজে বাধা দেন। এ নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে উত্তপ্ত বাদানুবাদও হয় বলে ওই সূত্রটি জানিয়েছে। সিবিআই আধিকারিকরা তল্লাশি চালানো এবং জেরা করার জন্য আদালতের যে অনুমতিপত্র, সেটাও পুলিশ কর্মীদের দেখান। তার পর বেলা প্রায় একটা নাগাদ ঘটনাস্থল থেকে চলে যায় পুলিশ।

Advertisement

আরও পড়ুন: ঋণ দুর্নীতির জের, মুম্বইয়ে ভিডিয়োকনের দফতর-সহ তিন জায়গায় সিবিআই হানা​

অন্য দিকে পুলিশ সূত্রে খবর, শ্রীকান্ত মোহতা নিজে থানায় ফোন করেছিলেন। ফোনে তিনি পুলিশকে জানিয়েছিলেন, কয়েক জন অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তি তাঁর অফিসে জোর করে ঢোকার চেষ্টা করছে। তিনি পুলিশের হস্তক্ষেপ চেয়েছিলেন। সেই কারণেই পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়েছিল। এ বিষয়ে শ্রীকান্তের অফিস থেকে লিখিত অভিযোগ থানায় জমা পড়েছে বলে দাবি পুলিশের।

যদিও সিবিআই আধিকারিকদের প্রশ্ন, পুলিশের বয়ান যদি সত্যি হবে তাহলে পরিচয়পত্র দেখার পরও কেন সিবিআইকে কাজে বাধা দিল তারা? এক শীর্ষ পুলিশ কর্তা বলেন, ‘‘পরিচয় জানার পর আমরা সিবিআই আধিকারিকদের জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল, তাঁরা থানায় কোনও খবর দিয়েছিলেন কি না? পুলিশের পরিভাষায় যাকে বলে রিক্যুইজিশন। তখন সিবিআই আধিকারিকরা বলেন,এমন কোনও রিক্যুইজিশন তাঁরা দেননি। আমরা তাঁদের সেই চিঠি দিতে বলি। বেলা দুটোর সময় তাঁরা সেই চিঠি দিয়েছেন। চিঠি পেয়েই আমরা বাহিনী মোতায়েন করেছি যাতে, তাঁদের কেউ কাজে বাধা না দেয়।”

এর আগেও একবার সিবিআই জেরা করেছে প্রযোজক শ্রীকান্ত মোহতাকে। এসভিএফ-এর কর্ণধার শ্রীকান্ত মোহতাকে এর আগেও রোজভ্যালি-কাণ্ডে সল্টলেকের সিজিও কমপ্লেক্সে এক দফা জেরা করেন সিবিআই গোয়েন্দারা।

আরও পড়ুন: চিনের চোখরাঙানি রুখতে দাওয়াই! আন্দামানে আরও একটি এয়ার বেস চালু করল ভারত​

সিজিও কমপ্লেক্সে শ্রীকান্ত মোহতা।—নিজস্ব চিত্র।

বৃহস্পতিবার ফের জেরা করতে সিবিআইয়ের গোয়েন্দারা সোজা পৌঁছে যান কসবায় শ্রীকান্তের অফিসে। সিবিআই সূত্রে খবর, এর আগে দু’বার তাঁকে নোটিস পাঠানো হয়। সেই নোটিস পেয়েও তিনি আসেননি। এক বার আইনজীবীকে দিয়ে কিছু নথি পাঠিয়েছিলেন। সেই নথি পরীক্ষা করার পর ফের যখন শ্রীকান্তকে ডাকা হয়েছিল, তিনি তার পর নানা কারণ দেখিয়ে নোটিস অগ্রাহ্য করেছেন। ঠিক সেই কারণেই এ দিন দুপুরে সিবিআই তদন্তকারীরা নিজেরাই পৌঁছে যান তাঁর অফিসে— এমনটাই দাবি কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের।

সিবিআই সূত্রে খবর, রোজভ্যালি কর্ণধার গৌতম কুণ্ডু জেরার সময় শ্রীকান্ত মোহতার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছিলেন। তাঁর অভিযোগ ছিল, শ্রীকান্ত মোহতার সঙ্গে তাঁর চুক্তি অনুযায়ী এসভিএফ প্রযোজিত ছবি দেখানো হবে গৌতমের চ্যানেলে। সেই চুক্তি মোতাবেক মোটা টাকাও নিয়েছিলেন শ্রীকান্ত। চুক্তি অনুযায়ী সদ্য মুক্তি প্রাপ্ত এবং বক্স অফিসে হিট ছবিও রোজভ্যালির চ্যানেলকে দেওয়ার কথা ছিল শ্রীকান্ত মোহতার। কিন্তু গৌতমের অভিযোগ, শ্রীকান্ত মোহতা পুরনো এবং ফ্লপ ছবি ছাড়া অন্য কোনও ছবি দেখাতে দেননি। এ ভাবে মোটা টাকা প্রতারণা করেছেন তিনি। সেই অভিযোগের তদন্ত করতেই ডেকে পাঠানো হয়েছিল শ্রীকান্ত মোহতাকে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন