Advertisement
E-Paper

চিনের চোখরাঙানি রুখতে দাওয়াই! আন্দামানে আরও একটি এয়ার বেস চালু করল ভারত

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২৪ জানুয়ারি ২০১৯ ১৪:০৯
গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ

চিনের সামরিক গতিবিধির উপর নজরদারি আরও বাড়াচ্ছে ভারত। আন্দামানের অদূরে আরও একটি এয়ার বেস চালু করল ভারতীয় নৌবাহিনী। দ্বীপ রাজ্যে এটি চতুর্থ এবং নেভির নিয়ন্ত্রণাধীন তৃতীয়এয়ার বেস। চিন তো বটেই, কার্যত গোটা দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার স্ট্র্যাটেজিক পয়েন্ট মলাক্কা প্রণালীর উপর নজর রাখার ক্ষেত্রে আরও সক্রিয় ভূমিকা নেবে এই এয়ার বেস, এমনটাই মনে করছেন কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।

নয়া এই এয়ার বেসের নাম দেওয়া হয়েছে ‘কোহাসা’। পোর্ট ব্লেয়ার থেকে প্রায় ৩০০ কিলোমিটার উত্তরে ১০০০ মিটারের রানওয়ে তৈরি হয়েছে। নজরদারি হেলিকপ্টার, ডোর্নিয়ার গোত্রের ছোট বিমান আপাতত এখান থেকে উড়তে পারবে। এছাড়া থাকছে বিমান মেরামতি, জ্বালানি ভর্তির মতো বন্দোবস্ত। তবে পরে ধাপে ধাপে প্রখমে রানওয়ের দৈর্ঘ বাড়িয়ে ৩০০০ মিটার করা হবে। তারপর আরও বাড়িয়ে করা হবে ৯০০০ মিটার। কাজ পুরোপুরি শেষ হলে যুদ্ধবিমান-সহ সব ধরনের বিমান এখানে ওঠানামা করতে পারবে। পাশাপাশি প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে আটকে পড়া পর্যটক ও সাধারণ মানুষকে উদ্ধারেও গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট হয়ে উঠবে এই কোহাসা।

দেশের প্রতিরক্ষা এবং সামরিক দিক থেকে কৌশলগত ভাবে মলাক্কা প্রণালী অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট। একটি উদাহরণ দিলেই বোঝা যাবে। ভারত মহাসাগরে সারা বছর গড়ে প্রায় ১ লক্ষ ২০ হাজার জাহাজ চলাচল করে। তার মধ্যে শুধু এই মলাক্কা প্রণালী দিয়েই যাতায়াত করে প্রায় ৭০ হাজার জাহাজ। ফলে এই প্রণালীর উপর ভারতের কড়া নজরদারি থাকে ভারতীয় সেনার। নয়া এই এয়ার বেসের ফলে সেটা আরও বাড়বে বলেই মত প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞদের। আবার কোহাসা এয়ার বেসটি দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার দেশগুলির ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলবে বলেও মনে করা হচ্ছে। কারণ এখান থেকে মায়ানমার এবং তাইল্যান্ড মাত্র ৫০০ কিলোমিটার দূরে।

আরও পডু়ন: প্রধানমন্ত্রী পদে রাহুলকেই সমর্থন, চার দিনেই পছন্দ বদল কুমারস্বামীর

প্রতিবেশী দেশগুলিতে চিনের সামরিক আনাগোনা নিয়ে বরাবরই সতর্ক থাকতে হয় ভারতকে। ২০১৪ সালে যেমন কলম্বো বন্দরে চিনের একটি সাবমেরিন নোঙর করে। তা নিয়ে নয়াদিল্লির উদ্বেগ এতটাই বেড়ে যায় যে শ্রীলঙ্কা সরকারের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তার উপর সম্প্রতি শ্রীলঙ্কা ও পাকিস্তানের উপকূল বরাবর বাণিজ্যিক বিমানবন্দর তৈরি করছে চিন। তাতে নয়াদিল্লির উদ্বেগ আরও বেড়েছে। কারণ ওই বন্দরগুলি চিনা ড্রাগনদের নৌবাহিনীর এক একটি ঘাঁটি হিসেবে গড়ে উঠতে পারে। কোহাসা থেকে এই উপকূল বরাবর সারমিক ও বাণিজ্যিক জাহাজের গতিবিধির উপর নজরদারি চালানো আরও সুবিধা হবে বলেই মনে করা হচ্ছে।

আরও পডু়ন: মোদীকে কুপোকাত করতে রাহুলের ব্রহ্মাস্ত্র, মোদী-যোগীর গড়ে অভিষেক প্রিয়ঙ্কার

বৃহস্পতিবারই কোহাসা এয়ার বেসের আনুষ্ঠানিক সূচনা করেন ভারতীয় নৌবাহিনীর প্রধান অ্যাডমিরাল সুনীল লনবা। বর্তমানে পোর্ট ব্লেয়ার এয়ার বেস এবং ক্যাম্পবেল উপকূলের আইএনএস বাজ নৌবাহিনীর নিয়ন্ত্রণাধীন। এছাড়া বায়ু সেনার হাতে রয়েছে কার নিকোবর এয়ার বেস। তার সঙ্গে কোহাসা যুক্ত হয়ে গোটা দ্বীপ রাজ্যের উপকূল আরও সুরক্ষিত হল বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। প্রাক্তন নৌবাহিনীর কমোডোর অনিল জয় সিংহ বলেন, ‘‘দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ায় ক্রমাগত প্রভাব বাডা়নোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে চিন। ভারতেরও সেটা অজানা নয়। আর ড্রাগনদের এই গতিবিধির উপর নিয়ন্ত্রণ রাখার অন্যতম উপায় হচ্ছে মলাক্কা প্রণালীর উপর সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ রাখা। সেই উদ্দেশ্যেই নয়া সংযোজন কোহাসা।’’

(এই প্রতিবেদনটি প্রথম প্রকাশের সময় ভুলবশত ১০০০ কিলোমিটারের রানওয়ে লেখা হয়েছিল। আসলে রানওয়েটির দৈর্ঘ্য ১০০০ মিটার বা ১ কিলোমিটার। এই অনিচ্ছাকৃত ভুলের জন্য আমরা দুঃখিত।)

Andaman And Nicobar Indian Navy Strait of Malacca Air Base
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy