Raja Ram Mohan Roy

Raja Ram Mohan Roy: জন্মের সার্ধদ্বিশতবর্ষে রাজা রামমোহনের বহুত্ববাদের উদ্‌যাপন

এ দিন সেখানে বাংলা নবজাগরণের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের নিয়ে নানা সময়ে প্রকাশিত হওয়া ডাকটিকিটের প্রদর্শনীও করা হয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৩ মে ২০২২ ০৫:০৫
Share:

স্মরণ: রাজা রামমোহন রায়ের জন্মের সার্ধদ্বিশতবর্ষে প্রকাশ হল স্মারক গ্রন্থ। রয়েছেন (বাঁ দিক থেকে) অনিতা অগ্নিহোত্রী, সুরঞ্জন দাস, নীরজ কুমার, সন্দীপন সেন, সুবীর গঙ্গোপাধ্যায় এবং অলকেন্দু মুখোপাধ্যায়। রবিবার, রামমোহন লাইব্রেরিতে। ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী

তাঁর বয়স নব্বই পেরিয়ে গিয়েছে। হেঁটে মঞ্চে ওঠার মতো শারীরিক অবস্থা নেই। বাইরের সিঁড়িতে করা গেলেও মঞ্চ পর্যন্ত র‌্যাম্প তৈরি করাও সম্ভব হয়নি। কিন্তু তাতে কী! রাজা রামমোহন রায়কে নিয়ে হওয়া আলোচনাসভায় যোগ দেওয়ার সুযোগ তিনি হাতছাড়া করতে চান না। তিনি কলকাতা এবং বম্বে হাইকোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি। তিনি আশুতোষ মুখোপাধ্যায়ের নাতি এবং শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের ভাইপোচিত্ততোষ মুখোপাধ্যায়।

Advertisement

হুইলচেয়ারে বসে মঞ্চের সামনে পর্যন্ত পৌঁছে কাঁপা-কাঁপা গলায় বললেন, ‘‘আড়ম্বর তো কতই দেখি। অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানই মনের অনেক কাছাকাছি হয়। এমন ঐতিহাসিক জায়গায় এমন অনুষ্ঠান ছাড়া যায়!’’ মঞ্চে যাঁরা ছিলেন, তাঁরা নেমে এসে সংবর্ধনা দিলেন চিত্ততোষবাবুকে।

রবিবার রাজা রামমোহন রায়ের জন্মের সার্ধদ্বিশতবর্ষ উপলক্ষে রামমোহন লাইব্রেরি অ্যান্ড ফ্রি রিডিং রুম আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তৈরি হল এমনই নানা দৃশ্য। চিত্ততোষবাবু ছাড়াও এ দিনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সুরঞ্জন দাস, কলকাতা রিজিয়নের পোস্টমাস্টার জেনারেল নীরজ কুমার, লেখক অনিতা অগ্নিহোত্রী প্রমুখ।

Advertisement

স্বাগত ভাষণে সুরঞ্জনবাবু বলেন, ‘‘জাতপাতের ঊর্ধ্বে উঠে মানুষের জন্য কাজ করে যাওয়াই মূল কথা। বহুত্ববাদ এবং সহনশীলতাই যে আমাদের মূল পাথেয় হওয়া উচিত, তা বহু দিন আগেই দেখিয়ে গিয়েছেন রামমোহন।’’ নীরজবাবু বলেন, ‘‘কী ভাবে এক জন মানুষ এতটা আধুনিক হতে পারেন, সেটাই আমায় ভাবায়।’’ স্মারক বক্তৃতা দিতে গিয়ে অনিতাদেবী বলেন, ‘‘হিন্দুত্বের গোঁড়ামি গ্রাস করছে ভারতের নানা প্রান্তকে। এর বিরুদ্ধে লড়াই শিখিয়ে গিয়েছেন রামমোহন।’’ নিজের বক্তব্য রাখতে গিয়ে চিত্ততোষবাবুর মন্তব্য, ‘‘রামমোহন সেই মানুষ, যিনি আগত ভবিষ্যৎকে দেখেছিলেন।’’

এ দিন সেখানে বাংলা নবজাগরণের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের নিয়ে নানা সময়ে প্রকাশিত হওয়া ডাকটিকিটের প্রদর্শনীও করা হয়। ডাক বিভাগের তরফে প্রকাশ করা হয় একটি বিশেষ কভার। এ ছাড়াও একটি স্মারক গ্রন্থ প্রকাশ করা হয়েছে ১১৮ বছরের পুরনো রামমোহন লাইব্রেরি অ্যান্ড ফ্রিরিডিং রুমের পক্ষ থেকে। এই সময়ের মধ্যে প্রকাশিত তাদেরস্মরণিকায় রামমোহন রায়কে নিয়ে যে সমস্ত যুগপোযোগী লেখাপ্রকাশিত হয়েছে, তার সবই এই স্মারক গ্রন্থে রাখা হয়েছে। সেই সঙ্গে রামমোহন রায়ের কিছু অজানা দিক নিয়ে লেখা প্রবন্ধও স্থান পেয়েছে এতে। ক্যানসার চিকিৎসক তথা অনুষ্ঠানের সঞ্চালক সুবীর গঙ্গোপাধ্যায় বললেন, ‘‘এমন অনুষ্ঠান আরও হওয়া দরকার।কিন্তু রামমোহনের নামাঙ্কিত এই লাইব্রেরি এবং হলের অবস্থাখুব খারাপ। রাজ্য বা কেন্দ্রীয় সরকার বিমুখ হয়ে থাকলে একেবাঁচানো অসম্ভব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন