অবশেষে নাকাল করা গরম থেকে মুক্তি পাচ্ছেন চাঁদনি চক মেট্রো স্টেশনের যাত্রীরা। স্টেশনের সুড়ঙ্গে তাপমাত্রা কমানোর জন্য অবশ্য মেট্রোকে খরচ করতে হয়েছে প্রায় এক কোটি টাকা।
দীর্ঘ দিন ধরে এই স্টেশনের তাপমাত্রা কমানোর জন্য অভিযোগ জানিয়ে আসছিলেন যাত্রীরা। শেষ পর্যন্ত উপায়ান্তর না দেখে গত বছর থেকে চাঁদনি স্টেশনে তাপমাত্রা কমানোর কাজ শুরু করেন মেট্রোর কর্মীরা। কাজটি শেষ করতে লাগল প্রায় এক বছর। গত ক’দিন ধরে পরীক্ষামূলক ভাবে ওই মেশিন চালানোর পরে বৃহস্পতিবার ওই যন্ত্রটি আনুষ্ঠানিক ভাবে যাত্রীদের জন্য খুলে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন মেট্রো কতৃর্পক্ষ।
ঠিক কী ঘটেছিল চাঁদনিতে?
আরও পড়ুন: ভুতুড়ে সেই ১০ স্টেশন...
কলকাতা মেট্রোর বেশির ভাগ স্টেশনই (দমদম থেকে মহানায়ক উত্তমকুমার) মাটির নীচে সুড়ঙ্গের মধ্যে। ফলে ওই সুড়ঙ্গে যাতে তাপমাত্রা কখনওই অসহ্য না হয়, তার জন্য প্রথম থেকেই বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া আছে মেট্রোতে। এক দিকে যেমন নির্মল বাতাস ঢুকতে পারে, তেমনই ওই বাতাসের তাপমাত্রা মানুষের সহ্যক্ষমতার মধ্যে রাখা হয়। সাধারণত যে যন্ত্রগুলির মাধ্যমে সুড়ঙ্গে মেট্রো বাতাস সরবরাহের ব্যবস্থা করে সেই বিরাট আকৃতির বাতানুকূল যন্ত্রগুলি সব ক’টাই দীর্ঘ দিনের হয়ে যাওয়ায় সেগুলি একটার পর একটা খারাপ হয়ে পড়ছিল। আর তার জেরেই বেড়ে যাচ্ছিল সুড়ঙ্গের তাপমাত্রা। মেট্রোর কর্তারা জানিয়েছেন, মহাত্মা গাঁধী রোড, গিরিশ পার্ক, যতীনদাস পার্ক, কালীঘাট এবং রবীন্দ্র সরোবর স্টেশনের যন্ত্রগুলিও খারাপ হয়ে গিয়েছিল। সেগুলি পাল্টে ইতিমধ্যেই নতুন যন্ত্র লাগানো হয়েছে। বাকি ছিল চাঁদনি চক।
চাঁদনি মেট্রোর অবস্থা এক সময়ে এমন হয়েছিল যে শীতকালেও চোখে-মুখে তীব্র গরম হাওয়ার উপস্থিতি টের পাচ্ছিলেন যাত্রীরা। গরমকালে তো আর কথাই নেই। ট্রেনের দেরি থাকলে স্টেশনের বাইরে রাস্তায় অপেক্ষা করতেন যাত্রীরা। এহেন পরিস্থিতি গত পাঁচ-ছ’বছর চলার পরে শেষমেশ মেট্রো কতৃর্পক্ষ চাঁদনির ওই যন্ত্রটি আর মেরামত না করে নতুন মেশিন কেনার ব্যবস্থা করেন। সেই নতুন মেশিনই এ বার চালু হল।
মেট্রোর ইঞ্জিনিয়ারেরা জানিয়েছেন, শুধু চাঁদনি চকেই ছোট-বড় মিলিয়ে মোট তিনটি এই ধরনের যন্ত্র রয়েছে। যেটি নতুন লাগানো হল সেটি বড়। বাকি দু’টির মধ্যে আরও একটিরও ব্যবস্থা করা হচ্ছে। শীঘ্রই ওই যন্ত্রটি চালু করার ব্যবস্থা হবে। বর্তমানে চাঁদনি চক স্টেশনে সুড়ঙ্গের তাপমাত্রা দাঁড়িয়েছে ২৮ থেকে ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে। যা স্বাভাবিকের চেয়ে অনেকটা বেশি হলেও সহনীয়। আর একটি যন্ত্র চালু হয়ে গেলে ওই তাপমাত্রা আরও কমে যাবে।