কিশোরকে ‘অপহরণ’, ধৃত প্রতিবেশী

সকাল সাড়ে ১০টার পর থেকে ছেলের আর খোঁজ নেই। স্কুলে যাওয়ার আগে সে এক প্রতিবেশীর বাড়িতে গিয়েছিল। তার পরে বেপাত্তা। রাতে ফোনও এল ৩০ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ চেয়ে। সপ্তম শ্রেণির ওই কিশোরের পরিজনেরা যখন খোঁজাখুঁজি করছেন, তখন সেই প্রতিবেশী সইফুদ্দিন সঙ্গে ছিলেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৩ এপ্রিল ২০১৭ ০১:৩০
Share:

সকাল সাড়ে ১০টার পর থেকে ছেলের আর খোঁজ নেই। স্কুলে যাওয়ার আগে সে এক প্রতিবেশীর বাড়িতে গিয়েছিল। তার পরে বেপাত্তা। রাতে ফোনও এল ৩০ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ চেয়ে। সপ্তম শ্রেণির ওই কিশোরের পরিজনেরা যখন খোঁজাখুঁজি করছেন, তখন সেই প্রতিবেশী সইফুদ্দিন সঙ্গে ছিলেন। দুশ্চিন্তামূলক প্রতিক্রিয়া তিনিও ব্যক্ত করছিলেন। পরে সইফুদ্দিনকেই ওই কিশোরকে অপহরণ ও খুনের চেষ্টায় মূল অভিযুক্ত হিসেবে শুক্রবার গ্রেফতার করে পুলিশ।

Advertisement

দক্ষিণ শহরতলির রবীন্দ্রনগরের বাসিন্দা ওই কিশোর রহিকুল ইসলাম মণ্ডলকে রাতেই রক্তাক্ত অবস্থায় বারুইপুর থেকে উদ্ধার করা হয়। সে হাসপাতালে ভর্তি। সইফুদ্দিনের শাগরেদ দুই যুবককে খুঁজছে পুলিশ।

রহিকুলের বাবা, পেশায় কাপড়ের ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলাম মণ্ডল জানান, তার ছেলে শুক্রবার সকালে সইফুদ্দিনের বাড়ি যাওয়ার পর থেকেই নিখোঁজ ছিল। আশপাশের এলাকায় খুঁজছিলেন রহিকুলের পরিজনেরা। রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ ৩০ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ চেয়ে ফোন আসে রফিকুলের বাড়িতে। এর পরে রবীন্দ্রনগর থানায় অপহরণের অভিযোগে দায়ের করা হয়। আশপাশের থানাগুলিকেও সতর্ক করে রবীন্দ্রনগর থানার পুলিশ।

Advertisement

এক পুলিশকর্তা জানান, নম্বরের সূত্রে ধরে জানা যায়, মুক্তিপণের ফোন যে নম্বর থেকে এসেছিল, সেই নম্বর থেকে ঠিক তার পরে সইফুদ্দিনকে ফোন করা হয়। এর পরে তদন্তের জন্য সইফুদ্দিনকে আটক করা হয়।

ইতিমধ্যেই বারুইপুর থানা থেকে খবর আসে, জখম অবস্থায় এক কিশোরকে উদ্ধার করা হয়েছে। রাত ১০টা নাগাদ বারুইপুরে রক্তাক্ত অবস্থায় সেই কিশোরকে রাস্তার ধার থেকে উদ্ধার করেন স্থানীয়েরা। তাঁরাই ওই কিশোরকে থানায় নিয়ে যান। রক্তাক্ত কিশোরকে প্রথমে বারুইপুর হাসপাতাল, পরে ন্যাশনাল মেডিক্যালে ভর্তি করা হয়। শুক্রবার রাত দেড়টা নাগাদ রফিকুল ওই হাসপাতালে যান ও পুলিশকে বলেন, ওই কিশোরই তাঁর ছেলে রহিকুল।

তদন্তে জানা গিয়েছে, শুক্রবার সইফুদ্দিনের বাড়িতে গেলে রহিকুলকে সে বেড়াতে নিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ট্রেনে ওঠায়। প্রতিবেশী কাকা বলেই সে কোনও আপত্তি তোলেনি। জয়নগর স্টেশনে নেমে দু’জনের কাছে তাকে রেখে চলে আসেন সইফুদ্দিন। ওই দুই যুবক রহিকুলকে মারধর করে একটি ফাঁকা জায়গায় ফেলে রাখে। সেখান থেকে পালিয়ে যায় রহিকুল। রক্তাক্ত অবস্থায় কয়েক জন স্থানীয়ের চোখে পড়ে যায় সে। হাসপাতাল সূত্রে খবর, রহিকুলের গলায় ও শরীরের বিভিন্ন অংশে ধারালো অস্ত্রের আঘাত রয়েছে। তার অবস্থা স্থিতিশীল।

রফিকুলের কথায়, ‘‘ছেলেকে যখন খুঁজছি, তখন সইফুদ্দিনও আমাদের সঙ্গে ছিল। ওর মতলব বুঝিনি! টাকার জন্য এমন করবে, তা ভাবতেও পারছি না।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement