নার্সিংহোমে শীর্ষা। শনিবার
মোটরবাইকে মেয়েকে নিয়ে বাজার থেকে বাড়ি ফিরছিলেন বাবা। সামনে দাঁড়িয়েছিল সাত বছরের শিশুটি। হঠাৎই পাঁচতলা নির্মীয়মাণ আবাসন থেকে ওই শিশুর মাথায় চাঙড় খসে পড়ে। গুরুতর আহত সেই শিশুটি বর্তমানে দক্ষিণ কলকাতার একটি নার্সিংহোমে ভর্তি। ঘটনাটি ঘটেছে শনিবার, চন্দ্রনাথ চ্যাটার্জি রোড ও কাঁসারিপাড়া রোডের মোড়ে। আহত শিশুর নাম শীর্ষা দাস। স্থানীয়দের অভিযোগ, কোনও ঢাকা না দিয়ে কাজ চলছিল আবাসনটিতে।
পুলিশ জানায়, কালীঘাটের কাঁসারিপাড়া রোডের বাসিন্দা আশিস দাস মেয়েকে নিয়ে ফিরছিলেন। সেই সময়েই নির্মীয়মাণ বাড়ির ছাদ থেকে চাঙড় খসে পড়ে শীর্ষার মাথা ফেটে যায়। ক্ষতিগ্রস্ত হয় মোটরবাইক। আশিসবাবু মেয়েকে নিয়ে এসএসকেএমে যান। শীর্ষার মাথায় আটটি সেলাই হয়েছে। বাড়ি ফিরে অসুস্থ বোধ করলে ফের তাকে একটি নার্সিংহোমে ভর্তি করা হয়।
পুর আইন অনুযায়ী, বহুতল তৈরির সময়ে তার চার দিক ঘিরে রাখার কথা। অভিযোগ, ৫৯ এ কাঁসারিপাড়া রোডের ওই আবাসনটি তৈরির সময় থেকেই চার দিক খোলা ছিল। স্থানীয়দের অভিযোগ, ‘‘দিনের পর দিন খোলা রেখেই বাড়ি তৈরির কাজ চলছে। আগেও চাঙড় খসেছিল। কিন্তু প্রোমোটার ব্যবস্থা নেননি।’’
স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলর পাপিয়া সিংহের স্বামী বাবলু সিংহের অভিযোগ, ‘‘ওই প্রোমোটার প্রথম থেকেই না ঢেকে কাজ করছেন। তাঁর শাস্তি হওয়া উচিত।’’ প্রোমোটার সুরজিৎ কুণ্ডুর সঙ্গে দেখা করতে তাঁর চন্দ্রনাথ চ্যাটার্জি রোডের অফিসে গেলেও দেখা পাওয়া যায়নি। ফোন করেও সাড়া মেলেনি সুরজিৎবাবুর।
পুলিশ জানায়, দুর্ঘটনার সময়ে আশিসবাবুর মাথায় হেলমেট থাকলেও শীর্ষার মাথায় হেলমেট ছিল না। এক পুলিশ আধিকারিক বলেন, ‘‘শিশুটির মাথায় হেলমেট থাকলে হয়ত দুর্ঘটনা এড়ানো যেত।’’ যদিও আশিসবাবুর দাবি, ‘‘ওর মাথায় হেলমেট কোথায় পাব? ওই নির্মীয়মাণ বাড়ির পাশ দিয়ে অনেকে হেঁটেও রাস্তা পারাপার করেন। তাঁদেরও তো একই বিপদ ঘটতে পারত।’’
এই ঘটনায় পুর আইন মেনে ওই প্রোমোটারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে কী? পুলিশ জানিয়েছে, পুরসভা অভিযোগ করলে প্রোমোটারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পুরসভা কী করবে এ ক্ষেত্রে? মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘কী হয়েছিল জানি না। খোঁজ নিয়ে দেখব।’’