স্কুলগাড়ির দরজা খুলে পড়ে গেল শিশু

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, স্কুলগাড়ি থেকে ছিটকে পড়া ওই ছাত্রের নাম শ্লোক চন্দক। সে একটি স্কুলের নার্সারির ছাত্র।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৬ অক্টোবর ২০১৮ ০২:০৪
Share:

প্রতীকী ছবি

হঠাৎ জোরে ব্রেক কষায় খুলে গেল স্কুলগাড়ির দরজা। সেই খোলা দরজা দিয়ে ছিটকে রাস্তায় পড়ল নার্সারির পড়ুয়া, বছর চারেকের এক শিশু। অথচ, গোটা ঘটনাটি খেয়ালই করলেন না স্কুলগাড়ির চালক। শেষে পথচলতি লোকজন ও পুলিশের তৎপরতায় কোনও মতে রক্ষা পায় ওই খুদে পড়ুয়া। শুক্রবার দুপুর একটা নাগাদ দরগা রোডের এই দুর্ঘটনায় শিশুটি বেঁচে গেলেও ফের প্রশ্ন উঠেছে এ শহরে স্কুলগাড়ির নিরাপত্তা নিয়ে।

Advertisement

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, স্কুলগাড়ি থেকে ছিটকে পড়া ওই ছাত্রের নাম শ্লোক চন্দক। সে একটি স্কুলের নার্সারির ছাত্র। স্কুল ছুটির পরে স্কুলগাড়িতে চেপে শ্লোক লেক টাউনের এস কে দেব রোডে নিজেদের বাড়িতে ফিরছিল। ওই রাস্তায় কর্মরত দুই ট্র্যাফিককর্মী, রাজবিজয় বন্দ্যোপাধ্যায় ও সুমন মুখোপাধ্যায় জানান, কাজের ফাঁকে হঠাৎ তাঁরা দেখেন, স্কুলের পোশাক পরা একটি শিশু রাস্তায় উপুড় হয়ে পড়ে আছে আর চিৎকার করে কাঁদছে। তার আশপাশ দিয়ে গাড়ি চলে যাচ্ছে। কয়েক জন পথচারীও তাকে দেখে আতঙ্কে চিৎকার করছেন। ওই দুই ট্র্যাফিককর্মী সঙ্গে সঙ্গে শিশুটিকে রাস্তা থেকে উদ্ধার করে পার্ক সার্কাস ট্র্যাফিক গার্ডে নিয়ে যান। সেখানকার ওসি বাবর আলি শ্লোকের স্কুলের পরিচয়পত্র দেকে তার মাকে খবর দেন।

শ্লোকের মা নিধি জানান, থানায় এসে তিনি দেখেন, ভয়ে কুঁকড়ে আছে তাঁর ছেলে। মাঝেমধ্যেই কেঁদে উঠছে। পুলিশ অফিসারেরা তাকে টফি ও টিভিতে কার্টুন চ্যানেল দেখিয়ে শান্ত করার চেষ্টা করছেন। নিধি বলেন, ‘‘শ্লোক জানায়, তার এক বন্ধুর জন্মদিন ছিল। সেই উপলক্ষে গাড়ির ভিতরে সবাইকে চকলেট দিচ্ছিল সেই বন্ধুটি। হঠাৎ জোরে ব্রেক কষায় গাড়ির দরজা খুলে যায়। টাল সামলাতে না পেরে ও পড়ে যায়।’’ নিধি জানান, বাড়ি ফিরেও অনেক ক্ষণ শ্লোকের আতঙ্ক কাটেনি। বন্ধুদের সঙ্গে বিকেলে খেলতেও যায়নি সে।

Advertisement

জানা গিয়েছে, ১২টি আসনের ওই স্কুলগাড়িতে ১৫ জন পড়ুয়াকে বসানো হয়েছিল। অভিযোগ উঠেছে, ওই গাড়িতে গাদাগাদি করে শিশুদের নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করে ওই স্কুলগাড়ির চালক পুলিশকে জানিয়েছেন, ১২ জনের আসন হলেও সবাই যে হেতু শিশু, তাই ১৫ জনকে

অনায়াসেই নেওয়া যায়। কোনও গাদাগাদি হয়নি। ওই গাড়িতে শিশুদের দেখভাল করার জন্য এক মহিলাও ছিলেন। তাঁর নজর এড়িয়ে শ্লোক কী ভাবে পড়ে গেল, সেই প্রশ্ন উঠেছে। পুলিশ জানিয়েছে, গাড়ির দরজা ভাঙা ছিল না। কিন্তু শ্লোকের মায়ের প্রশ্ন, ‘‘গাড়ির দরজা কেন লক করা ছিল না? শ্লোক পড়ে যাওয়ার পরেও কী ভাবে গাড়ি ওদের নজর এড়িয়ে অত দূর চলে গেল?’’

গাড়িচালক সোমনাথ বিশ্বাসকে ফোন করা হলেও সেটি বন্ধ ছিল। পুলিশ জানিয়েছে, ওই স্কুলগাড়ি ও চালককে আটক করে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। ওই গাড়ির পড়ুয়াদের অন্য একটি গাড়িতে বাড়ি পাঠানো হয়। নিধি অবশ্য ওই স্কুলগাড়ি চালকের বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ দায়ের করেননি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন