ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল এবং ভারতীয় জাদুঘরের নিরাপত্তার দায়িত্ব তুলে দেওয়া হচ্ছে সেন্ট্রাল ইন্ডাস্ট্রিয়াল সিকিউরিটি ফোর্স (সিআইএসএফ)-এর হাতে।
ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালের অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ অফিসার নীতীশকুমার দাস রবিবার জানিয়েছেন, আগামী ১৫ জানুয়ারি ভিক্টোরিয়ার নিরাপত্তার দায়িত্ব তুলে দেওয়া হচ্ছে সিআইএসএফ-এর হাতে। এত দিন ভিক্টোরিয়ার নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিল কলকাতা পুলিশ এবং বেসরকারি এক সংস্থা। সিআইএসএফ আসার পরে কলকাতা পুলিশ আর থাকবে না। বেসরকারি ওই সংস্থার নিরাপত্তাকর্মীদেও ধীরে ধীরে সরিয়ে দেওয়া হবে।
রাজ্যে সিআইএসএফ-এর দায়িত্বে থাকা আইজি অজিতনারায়ণ মহাপাত্র জানিয়েছেন, জাদুঘরের নিরাপত্তার দায়িত্ব নিতে কমপক্ষে আরও ৬ মাস সময় লাগবে। তবে, দু’টি জায়গাতেই নিরাপত্তা জোরদার করতে এই সিদ্ধান্ত বছর চারেক আগে নেওয়া হয়েছে বলে সিআইএসএফ সূত্রে জানা গিয়েছে। অজিতবাবু জানিয়েছেন, এই দুই জায়গার নিরাপত্তার দায়িত্ব তাঁদের হাতে তুলে দেওয়া নিয়ে বছর দু’য়েক আগে সুপ্রিম কোর্টও নির্দেশ দিয়েছিল। তাঁর কথায়, ‘‘ইতিমধ্যেই দেরি হয়ে গিয়েছে।’’
বন্দর, বিমানবন্দর-সহ কেন্দ্রের অধীনে থাকা জাতীয় সৌধ ও অন্য গুরুত্বপূর্ণ স্থানের নিরাপত্তার দায়িত্ব সামলায় এই আধা সামরিক বাহিনী। এই মুহূর্তে কলকাতা বন্দর, বিমানবন্দর ছাড়াও দামোদর ভ্যালি কর্পোরেশন, টাঁকশাল, গার্ডেনরিচে জাহাজ তৈরির কারখানার নিরাপত্তার দায়িত্বে সিআইএসএফ রয়েছে। সেই তালিকায় এ বার যোগ হতে চলেছে ভিক্টোরিয়া এবং জাদুঘর।
সিআইএসএফ সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রধানত এই দুই স্থানে পাহারারত জওয়ানদের থাকার জায়গা নিয়ে সমস্যা দেখা দেয়। নীতীশবাবুর কথায়, ‘‘ভিক্টোরিয়ার ক্ষেত্রে সেই সমস্যা এখনও মেটেনি। পাহারারত জওয়ানদের থাকার ব্যবস্থা করা যায়নি। তবে, এই অবস্থাতেই সিআইএসএফ নিরাপত্তার দায়িত্ব নিয়ে রাজি হয়ে গিয়েছে।’’
অজিতবাবু জানিয়েছেন, ভিক্টোরিয়ার নিরাপত্তার জন্য কমপক্ষে এক কোম্পানি (১০০ জন) বাহিনী লাগবে। বাহিনীর ৮০ শতাংশের থাকার ব্যবস্থা হয়েছে। বাকি ২০ শতাংশের থাকার জায়গা এক মাসের মধ্যে তৈরি হয়ে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। সিআইএসএফ-এর এক কর্তার কথায়, ‘‘ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল এবং জাদুঘর — শহরের এই দু’টি জায়গাতেই প্রচুর দুর্মূল্য ও দুষ্প্রাপ্য ঐতিহাসিক বস্তু রয়েছে। রয়েছে দামি দামি পেন্টিং, শিল্পকলার নিদর্শন।’’
তাজমহল, দিল্লির ন্যাশনাল মিউজিয়ামের মতো হেরিটেজ ভবনগুলির নিরাপত্তাও তুলে দেওয়া হয়েছে সিআইএসএফ-এর হাতে। এমনকী, কলকাতা ছাড়া অন্য শহরের মেট্রো রেলের নিরাপত্তার দায়িত্বেও রয়েছে সিআইএসএফ।