এ ভাবেই রাখা থাকে গা়িড়। — স্নেহাশিস ভট্টাচার্য
সল্টলেকের বিজি ব্লক: বাড়ির সামনের রাস্তায় সার দিয়ে গাড়ি দাঁড় করানো। ওই রাস্তাতেই এক চিকিৎসকের চেম্বার। বাগবাজারের বাসিন্দা সুশোভন ভট্টাচার্য তাঁর ছেলেকে নিয়ে ওই চিকিৎসকের কাছে যান। তাঁর গাড়ি ওই রাস্তার উপরেই দাঁড় করান। চিকিৎসকের বাড়ি থেকে বেরিয়ে তিনি দেখেন গাড়ির সামনে পেছনে দু’টি গাড়ি দাঁড়িয়ে। সেই গাড়ি না সরালে তিনি গাড়ি বার করতে পারবেন না। তাই নিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে রীতিমত বচসা করে গাড়ি বের করতে হল সুশোভনবাবুকে।
সিডি ব্লক: ভিতরে রাস্তার দু’ধারে সার দিয়ে গাড়ি দাঁড় করানো। ফলে রাস্তা সঙ্কীর্ণ হয়ে গিয়েছে। এক মোটরসাইকেল আরোহী রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিলেন। উল্টো দিক থেকে একটি গাড়ি তীব্র গতিতে এসে ওই মোটরসাইকেলে ধাক্কা মারে। গুরুতর জখম হন মোটরসাইকেল আরোহী।
সিএ আইল্যান্ড: সিটি সেন্টারের দিকে রাস্তার অনেকটাই পার্কিং করা গাড়ির দখলে। সঙ্কীর্ণ রাস্তা দিয়ে একটি অটো যাচ্ছিল। সেই অটোকে ওভারটেক করতে গিয়ে বুলেভার্ডে ধাক্কা মারে একটি চার চাকার গাড়ি।
সল্টলেক জুড়ে কমবেশি ছবিটা প্রায় একই রকম। অভিযোগ, গাড়ির চাপে হাঁফিয়ে উঠেছে গোটা শহর। বিধাননগর পুরসভার অনুমোদিত ১৬টি পার্কিং লটও এখন আর পর্যাপ্ত নয় বলে জানাচ্ছেন বাসিন্দারা। গাড়ি পার্কিংয়ের সমস্যায় জেরবার বাসিন্দা এবং বহিরাগতরা।
বাসিন্দারা জানান, প্রতি দিন গাড়ির চাপ বাড়ছে। পরিকাঠামো সেই চাপ নিতে পারছে না। এই বক্তব্যের সঙ্গে সহমত পুলিশ এবং পুর-প্রশাসনের একাংশও। পুর-কর্তৃপক্ষ জানান, পার্কিং লটগুলিতে আরও গাড়ি রাখার ব্যবস্থা করা হবে।
কিন্তু বাসিন্দাদের মতে, পার্কিং লটগুলিতে আরও গাড়ি রাখার ব্যবস্থা করে সমস্যার সমাধান হবে না। সার্বিক ট্র্যাফিক নিয়ন্ত্রণের পরিকল্পনা দরকার। বাম আমলেই সল্টলেকে পার্কোম্যাটের পরিকল্পনা করা হয়েছিল। বর্তমান সরকারও একাধিক পার্কোম্যাট তৈরির পরিকল্পনার কথা জানিয়েছিল। কিন্তু কিছুই হয়নি।
বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, সল্টলেকে অনেক অফিস হয়েছে। কিন্তু অফিসের গাড়ি রাখার সুবন্দোবস্ত নেই। বাসিন্দাদের একটি সংগঠনের নেতা কুমারশঙ্কর সাধু বলেন, ‘‘অবিলম্বে নতুন পরিকল্পনা না করলে বিপদ অনিবার্য। সার্বিক পরিকল্পনার প্রয়োজন।’’
বিধাননগর পুরসভার মেয়র সব্যসাচী দত্ত বলেন, ‘‘গাড়ি পার্কিংয়ের সমস্যা নিয়ে নগরোন্নয়ন দফতর ও পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে একটি সুসংহত পরিকল্পনা করা হবে।’’