এক দিনেই সাফসুতরো গঙ্গার ঘাট

রবিবার, একাদশীর দিন বাজেকদমতলা ঘাট, জাজেস ঘাট ও নিমতলা ঘাট ছাড়া শহরের অধিকাংশ ঘাটের ছবিটা ছিল ভিন্ন। বাগবাজার ঘাটে ডাঁই হয়ে পড়েছিল প্রতিমার কাঠামো। একই ছবি দেখা গিয়েছিল কুমোরটুলি বা আহিরীটোলা ঘাটেও। তিনটি ঘাট ছাড়া ওই ঘাটগুলিতে রবিবার কলকাতা পুলিশ ও পুরসভার নজরদারিও তেমন চোখে পড়েনি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৩ অক্টোবর ২০১৭ ০১:৩১
Share:

—নিজস্ব চিত্র।

বিসর্জনের পরে চব্বিশ ঘণ্টাও কাটল না। আমূল বদলে গেল গঙ্গার বিভিন্ন ঘাটের ছবিটা।

Advertisement

রবিবার, একাদশীর দিন বাজেকদমতলা ঘাট, জাজেস ঘাট ও নিমতলা ঘাট ছাড়া শহরের অধিকাংশ ঘাটের ছবিটা ছিল ভিন্ন। বাগবাজার ঘাটে ডাঁই হয়ে পড়েছিল প্রতিমার কাঠামো। একই ছবি দেখা গিয়েছিল কুমোরটুলি বা আহিরীটোলা ঘাটেও। তিনটি ঘাট ছাড়া ওই ঘাটগুলিতে রবিবার কলকাতা পুলিশ ও পুরসভার নজরদারিও তেমন চোখে পড়েনি। যদিও পুর প্রশাসনের ব্যাখ্যায়, কাজ সম্পন্ন করায় মানুষের সঙ্গে যন্ত্রের দ্রুততার ফারাক তো থাকবেই। বাজেকদমতলা, নিমতলায় কাঠামো সরানোর কাজে ক্রেন ব্যবহার হয়ে থাকে। কিন্তু অন্য অনেক ঘাটে তা রাখারই জায়গা নেই। তাই সে সব ঘাটে মানুষকে কাঠামো সরাতে হয়। মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন, সে কারণেই এই দেরি। মেয়র পারিষদ দেবাশিস কুমার জানিয়েছেন, বাজেকদমতলা, গ্বালিয়র এবং নিমতলার মতো ঘাটগুলিতে প্রতিমা নিরঞ্জনের সংখ্যা অনেক বেশি। আর ওই সব ঘাটে কাঠামো পরিষ্কারও দ্রুত সম্পন্ন করা গিয়েছে।

বাজেকদমতলা, জাজেস ঘাট, নিমতলা ঘাটের পাশাপাশি শহরের অন্য ঘাটেও বিসর্জনের সময়ে ছিল কড়া নজরদারি। সোমবার দুপুরে বাগবাজার ঘাটে গিয়ে দেখা গেল, প্রতিমা নিরঞ্জনের সঙ্গে সঙ্গেই কাঠামো তুলে ফেলা হচ্ছে। তা যাতে ভেসে চলে যেতে না পারে, সে জন্য মোতায়েন রয়েছে স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী। কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ মেনে গঙ্গাকে দূষণমুক্ত রাখতে পাড়ের এক পাশে পুজোয় ব্যবহৃত উপকরণ ফেলার সঙ্গে সঙ্গে সেগুলি তুলে ফেলার কাজও হচ্ছে দ্রুত গতিতে। কাঠামো, পুজোয় ব্যবহৃত সামগ্রী পুরসভার গাড়িতে তোলার জন্য রাখা হয়েছে পে-লোডার। ঘাট সাফাইয়ের কাজ তদারকিতে ব্যস্ত পুরসভার আধিকারিকেরা। হাজির ছিলেন মেয়র এবং মেয়র পারিষদেরাও। একই ছবি দেখা গিয়েছে কুমোরটুলি, আহিরীটোলা ঘাটেও।

Advertisement

লালবাজার সূত্রের খবর, শহরে বারোয়ারি ও বাড়ির পুজো মিলিয়ে প্রায় পাঁচ হাজার প্রতিমা রয়েছে। পুলিশের অনুমোদনপ্রাপ্ত বারোয়ারি পুজোর সংখ্যা ২৫০০। দশমীর দিনে শহরের বিভিন্ন ঘাটে সব মিলিয়ে বিসর্জন হয়েছে ২১২০টি প্রতিমা। পুলিশ সূত্রের খবর, সব প্রতিমার বিসর্জন আজ মঙ্গলবারের মধ্যেই শেষ হবে। তবে সোমবার বিসর্জনের সময়ে কলকাতার ঘাটগুলি পরিচ্ছন্ন থাকলেও গঙ্গার স্রোতে বেশ কিছু প্রতিমার কাঠামো ভেসে যেতে দেখা গিয়েছে। বাগবাজার ঘাটে এমন ছবি দেখে কর্তব্যরত কলকাতা পুলিশের এক আধিকারিক বললেন, ‘‘গঙ্গাকে দূষণ থেকে বাঁচাতে কলকাতার পাশাপাশি অন্য পুরসভা এবং পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষকেও সমান সতর্ক হতে হবে।’’

মেয়র বলেন, ‘‘কলকাতার পার্শ্ববর্তী এলাকা থেকেও অনেকে প্রতিমা বিসর্জন দিতে আসেন। সে সময়ে প্রতিটি ঘাট পরিচ্ছন্ন রাখতে পুরসভার কর্মীরা কাজ করছেন। সোমবার ছোট-বড় পুজো মিলিয়ে প্রায় তিন হাজার প্রতিমা বিসর্জন হওয়ার কথা। সেই মতো সারা রাত কাজ করবেন কর্মীরা।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন