ফাইল চিত্র।
এ যেন অনেকটা ঘড়ি ধরে ছোটা যাচ্ছে না বুঝতে পেরে ঘড়িটাই তুলে দেওয়া! সে পথেই এ বার হাঁটতে চলেছেন কলকাতা মেট্রো রেল কর্তৃপক্ষ।
কেন এই ভাবনা? মেট্রো সূত্রের খবর, বারবার চেষ্টা করেও সময়ানুবর্তিতা ধরে রাখা সম্ভব হচ্ছে না। প্ল্যাটফর্মের ডিজিটাল ডিসপ্লে বোর্ডে যে সময় দেখাচ্ছে, অধিকাংশ ক্ষেত্রে ট্রেন আসছে তার চেয়ে দেরিতে। কেন দেরি, তার কোনও ঘোষণাও থাকছে না। ফলে দু’টি, কখনও বা তিনটি ট্রেনের ভিড় আছড়ে পড়ছে একটি ট্রেনে। ভিড়ের চাপে দরজা বন্ধ হচ্ছে না। এর সঙ্গে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর কাজের জন্য এসপ্লানেড স্টেশনে ট্রেনের গতি কমে যাওয়া বা বিভিন্ন সময়ে রেকের যান্ত্রিক ত্রুটি তো আছেই। সব মিলিয়ে দমদম থেকে কবি সুভাষ যেখানে ৪৯ মিনিটে পৌঁছে যাওয়ার কথা, সেই যাত্রা ৫৪-৫৫ মিনিটের আগে শেষ করা যাচ্ছে না। এই দেরির জের চলছে রাত পর্যন্ত।
রোজকার এই যন্ত্রণা থেকে যাত্রীদের মুক্তি দিতে ট্রেনের নির্ধারিত সময় জানানোর ঘড়িই তুলে দেওয়ার কথা ভাবছেন মেট্রো কর্তৃপক্ষ। বদলে স্টেশনের ডিসপ্লে বোর্ডে শুধু লেখা থাকবে মেট্রো পরিষেবা চালু আছে কি না। ঘড়ির বদলে বসানো হবে স্টপওয়াচের মতো টাইমার বা ‘রিয়্যাল টাইম ইন্ডিকেশন বোর্ড’। ট্রেন প্ল্যাটফর্মের কাছাকাছি এলে চালু হবে সেই বোর্ড। জানিয়ে দেবে, কত সেকেন্ড পরে ট্রেন ঢুকবে।
আরও পড়ুন: বিরল রোগের প্রচারে শহরে ম্যারাথন
মেট্রো কর্তৃপক্ষের দাবি, কত সেকেন্ড পরে ট্রেন আসছে দেখার জন্য বছরখানেক আগে টাইমার বসানো হয়েছিল। সেগুলিকেই নতুন ভাবে কার্যকর করা হচ্ছে। মেট্রোকর্তাদের বক্তব্য, প্ল্যাটফর্মে দু’ধরনের ঘড়ির অস্তিত্ব যাত্রীদের বিভ্রান্তি বাড়াচ্ছে। ট্রেন আসার সময় দেখে যাত্রীরা ঘড়ি মেলাচ্ছেন। কিন্তু সময়ে ট্রেন না আসায় সেই প্রত্যাশা ধাক্কা খাচ্ছে। ফলে বাড়ছে যাত্রীদের ক্ষোভ। যা দেখা গিয়েছে বৃহস্পতিবারও। এ দিনও বিভিন্ন সময়ে গড়ে ১০-১২ মিনিট দেরিতে চলেছে মেট্রো।
আরও পড়ুন: কোচের বরাত যেতে পারে নতুন হাতে, শঙ্কায় কর্তারা
তবে কবে থেকে নতুন এই ব্যবস্থা চালু হবে, তা জানাতে পারেননি মেট্রোর মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক ইন্দ্রাণী বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘ট্রেনের সময় জানানোর বোর্ড যাত্রী-স্বাচ্ছন্দ্যে চালু বিভিন্ন ব্যবস্থার একটি অংশ মাত্র। চেষ্টা করেও নানা কারণে সময়ে মেট্রো চালানো যাচ্ছে না। তাই ওই ব্যবস্থা কিছুটা বদলে প্রকৃত সময় জানানোর ব্যবস্থা চালু করার কথা ভাবা হচ্ছে।’’
কয়েক মাসের মধ্যেই ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর পরিষেবা চালু হতে পারে। সেখানে অবশ্য ট্রেনের সময় জানানোর বোর্ড থাকছে। স্বভাবতই প্রশ্ন উঠেছে, নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকতেই কি মেট্রো কর্তৃপক্ষ ঘড়ি তুলে দেওয়ার কথা ভাবছেন? সেই প্রশ্নের উত্তর অবশ্য পাওয়া যায়নি কোনও তরফেই।