Kolkata

Clock tower: নতুন বন্দর-পর্যটনের ভরকেন্দ্রে শতবর্ষীয় ঘড়ি মিনার

বন্দরের কর্তাদের একাংশ জানাচ্ছেন, খিদিরপুর লকগেটের প্রবেশপথে থাকা সংশ্লিষ্ট ঘড়ি মিনারের আলাদা ঐতিহাসিক গুরুত্ব রয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৯ জুলাই ২০২১ ০৭:৫০
Share:

দর্শনীয়: সংস্কারের আগে ১২২ বছরের পুরনো সেই ঘড়ি মিনার (বাঁ দিকে)। সময়কে ধরে রেখেছে ঐতিহাসিক সেই ঘড়ি (উপরে)। নিজস্ব চিত্র

পর্যটকদের জন্য খিদিরপুর ডকে নতুন ঘোরার জায়গা (হ্যাং-আউট এরিয়া) তৈরি করতে চলেছেন শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি বন্দর কর্তৃপক্ষ। আর এই বন্দর-পর্যটনের অন্যতম আকর্ষণ-কেন্দ্র হতে চলেছে ১২২ বছরের পুরনো ‘ক্লক টাওয়ার’ বা ঘড়ি মিনার।

Advertisement

ইতিমধ্যেই সেই কাজ শুরু হয়েছে। নতুন ওই ঘোরার জায়গার পাশাপাশি একটি ছোট সংগ্রহশালা তৈরির পরিকল্পনাও করা হয়েছে। ধাপে ধাপে ওই কাজ সম্পূর্ণ করা হবে বলে বন্দর সূত্রের খবর। ঘটনাপ্রবাহ বলছে, ২০১৮ সাল থেকে হেরিটেজ পর্যটন শুরু করেছিলেন বন্দর কর্তৃপক্ষ। সেই পর্যটনে ভাল সাড়াও মিলেছিল। কিন্তু করোনার কারণে বর্তমানে সেই যাত্রা বন্ধ রয়েছে। আর বন্দর কর্তৃপক্ষ এই ফাঁকা সময়কেই বেছে নিয়েছেন বন্দর-পর্যটনে নতুন মাত্রা যোগ করার জন্য।

বন্দরের কর্তাদের একাংশ জানাচ্ছেন, খিদিরপুর লকগেটের প্রবেশপথে থাকা সংশ্লিষ্ট ঘড়ি মিনারের আলাদা ঐতিহাসিক গুরুত্ব রয়েছে। বন্দরের নথি বলছে, ১৮৯৯ সালে তৈরি হয়েছিল ঘড়ি মিনারটি। তৈরির ইতিহাসও চমকপ্রদ। এখন যেমন বিভিন্ন প্রকল্পের ক্ষেত্রে ‘গ্লোবাল টেন্ডার’ আহ্বান করা হয়, যার মাধ্যমে প্রকল্প রূপায়ণের সংস্থা বেছে নেওয়া হয়, তখন কিন্তু তেমন কিছুর প্রচলন ছিল না। বন্দরের হেরিটেজ পরামর্শদাতা গৌতম চক্রবর্তীর কথায়, ‘‘ফলে ঘড়ি মিনারটি তৈরির জন্য যখন ‘গ্লোবাল টেন্ডার’ ডাকা হয়েছিল, তৎকালীন সময়ের পরিপ্রেক্ষিতে সেটা ছিল একটা উল্লেখযোগ্য ঘটনা। দরপত্রে নির্বাচিত হয়েছিল কুক অ্যান্ড কেলভি সংস্থা। সাড়ে চার হাজার টাকার বিনিময়ে তারাই ঘড়িটি তৈরি করেছিল।’’ তথ্য বলছে, সেই সময়ে কলকাতায় কুক অ্যান্ড কেলভি-র অফিসও ছিল। লন্ডন থেকে আসত ঘড়ির যন্ত্রাংশ। সেই সব এখানে একত্রিত করা হত। বন্দর ছাড়াও কুক অ্যান্ড কেলভি সংস্থার তৈরি ঘড়ি এখনও শহরের একাধিক
জায়গায় আছে।

Advertisement

এ তো গেল ঘড়ির কথা। বন্দরের নথি বলছে, মিনারের নকশা তৈরি করেছিলেন ডব্লিউ ব্যাঙ্কস গোয়াইথার। তিনি আবার মহাকরণের নির্মাণকাজেও যুক্ত ছিলেন। মিনারের নকশা তৈরির জন্য গোয়াইথার নিয়েছিলেন ১০০ টাকা। আর মিনারটি নির্মাণ করেছিল মার্টিন অ্যান্ড কোম্পানি। সংশ্লিষ্ট ঘড়ি দেখে সময় মিলিয়ে নিতেন নাবিকেরা। তখন বন্দর এলাকায় এখনকার মতো এত উঁচু উঁচু নির্মাণ গড়ে ওঠেনি। ফলে দূর থেকেই দেখা যেত ঘড়ি মিনারটি। বন্দরের এক কর্তার কথায়, ‘‘সেই সময়ে বন্দরে বিশাল কর্মকাণ্ড চলছিল। সেই কাজের হিসেব যেন ধরে রাখত ঘড়ি মিনারটি।’’

বন্দর সূত্রের খবর, ২০১১ সালের আগে ঐতিহাসিক ঘড়িটি কয়েক বছর অকেজো হয়ে পড়েছিল। অকেজো ঘড়িটি আমূল সারাই হয় ২০১১ সালে। তার পর থেকে নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ করা হচ্ছে। প্রয়োজনের ভিত্তিতে সেটি সারাইও হয়েছে একাধিক বার। সব কিছু সামলে ফের আর এক সন্ধিক্ষণের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে ঘড়ি মিনার। কারণ, আরও এক বার সংলগ্ন এলাকা নতুন ভাবে সেজে উঠতে চলেছে। তবে বন্দর কর্তৃপক্ষের বিশ্বাস, যত পরিবর্তনই হোক, বহমান সময়কে আগের মতোই ধরে রাখবে এই ‘ক্লক টাওয়ার’।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন