হাসপাতালে রাকিবা। নিজস্ব চিত্র
ট্রেনের মহিলা কামরায় জানলার ধারে বসে মোবাইলে কথা বলছিলেন এক কলেজছাত্রী। ডাউন লক্ষ্মীকান্তপুর লোকাল স্টেশনে দাঁড়াতেই জানলার বাইরে থেকে এক ঝটকায় তাঁর ফোন ছিনিয়ে পালায় এক দুষ্কৃতী। ট্রেন থেকে নেমে ওই দুষ্কৃতীর পিছনে ছুটতেও শুরু করেছিলেন ওই কলেজছাত্রী। শেষমেষ হোঁচট খেয়ে মুখ থুবড়ে পড়ে যান তিনি। মাথা ফেটে অচৈতন্য হয়ে পড়েন। প্ল্যাটফর্মের অন্য যাত্রীরা চেঁচামেচি শুরু করলে রেল পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে। রাকিবা খাতুন নামে ওই তরুণীকে বারুইপুর সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
রবিবার রাতে সাড়ে ১১টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে বারুইপুর স্টেশনে। গো চরণের পূর্ব পাঁচগাছিয়ার বাসিন্দা রাকিবার মাথায় গুরুতর চোট রয়েছে। তিনটি সেলাই পড়েছে। তবে তাঁর অবস্থা স্থিতিশীল বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা।
রবিবার রাতের ঘটনায় প্রশ্ন উঠেছে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে। ঘটনার সময়ে ট্রেনের কামরায় অথবা স্টেশনে চত্বরে কোনও পুলিশকর্মী পাহারায় ছিলেন না বলে অভিযোগ তুলেছেন নিত্যযাত্রীদের একাংশ। ফলে চোর পালানোর পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে আসায় প্রশ্ন উঠেছে পুলিশের নজরদারি নিয়েও। রেল পুলিশ সূত্রে খবর, বারুইপুর স্টেশন চত্বরে জিআরপি থানা রয়েছে। রোজ রাত ১০টা পরে ট্রেনের প্রতিটি মহিলা কামরায় দু’জন করে জিআরপি কর্মীর পাহারায় থাকার নিয়মও রয়েছে।
আরও পড়ুন: বৃষ্টিভাগ্য ফেরাতে ভরসা নিম্নচাপই
রেল পুলিশের কর্তারা অবশ্য পুলিশি গাফিলতির সাফাই দিয়েছেন। এক রেল পুলিশকর্তার কথায়, সোনারপুর থেকে মল্লিকপুর পর্যন্ত সোনারপুর জিআরপি-র কর্মীরা মহিলা কামরায় পাহারা দেন। তার পরে বারুইপুর স্টেশন থেকে মহিলা কামরায় ফের পুলিশ ওঠে। রাত ১০টার পর থেকে শেষ ট্রেন পর্যন্ত এই ভাবেই মহিলা কামরায় পাহারা দেওয়া হয়। সে ক্ষেত্রে, রবিবার রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ ডাউন লক্ষ্মীকান্তপুর লোকাল ঢুকলে বারুইপুর স্টেশনে মহিলা কামরায় পাহারায় নিয়োজিত জিআরপি-র পুলিশকর্মীরা কোথায় ছিলেন, প্রশ্ন উঠছে তা নিয়েও।
এ ছাড়াও, জিআরপি থানা থাকা সত্ত্বেও স্টেশনে দুষ্কৃতীদের জড়ো হওয়ার অভিযোগ উঠছে। নিত্যযাত্রীদের অভিযোগ, রাতে রেল স্টেশনে পর্যাপ্ত নজরদারি থাকে না। তার ফলেই দুষ্কৃতীদের দৌরাত্ম্য অহরহ বাড়ছে। রেল পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, রবিবারের ঘটনার তদন্ত চলছে। তবে সোমবার রাত পর্য়ন্ত কেউ গ্রেফতার হয়নি।