হস্টেলের ঘরে বন্ধ করে ছাত্রীর শ্লীলতাহানির অভিযোগ খতিয়ে দেখার দায়িত্ব বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ অভিযোগ কমিটি আইসিসি-কে দিলেন যাদবপুর-কর্তৃপক্ষ। বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রদীপ ঘোষ বুধবার এ কথা জানান। যত দ্রুত সম্ভব অভিযোগ খতিয়ে দেখে কর্তৃপক্ষের কাছে রিপোর্ট জমা দিতে হবে ওই কমিটিকে।
মঙ্গলবার যাদবপুর থানায় বিশ্ববিদ্যালয়েরই এক দল ছাত্রের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ আনেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের এক ছাত্রী। তাঁর অভিযোগ, ২৮ অগস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ফেস্ট’ চলাকালীন ওই ছাত্রেরা একটি হস্টেলের ঘরে বন্ধ করে তাঁকে মারধর ও শ্লীলতাহানি করেন। বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগ জানান ছাত্রীর বাবা।
রেজিস্ট্রারের ঘর থেকে বেরিয়ে এ দিন তিনি বলেন, “কর্তৃপক্ষের কাছে সুবিচার চেয়েছি। উপাচার্য আশ্বাস দিয়েছেন, ঘটনার যথাযথ বিচার হবে। কথা বলে আমি সন্তুষ্ট।” তিনি আরও বলেন, “আমার মেয়ে মানসিক ভাবে বিধ্বস্ত। ওকে তাই বিশ্ববিদ্যালয়ে আসতে দিচ্ছি না। তবে এর মধ্যে এক দিন পরীক্ষা দিতে এসেছিল।”
বিশ্ববিদ্যালয়েরই একটি সূত্রের খবর, ছাত্রীটি ওই দিন তাঁর এক বন্ধুকে নিয়ে ক্যাম্পাসে আসেন। নেশাগ্রস্ত অবস্থায় তাঁদের দু’জনকে ঘনিষ্ঠ ভাবে বসে থাকতে দেখেন একদল ছাত্র। তাঁরাই ওই দু’জনকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ওল্ড পিজি’ হস্টেলে নিয়ে যান। সেখানে ছাত্রীর বন্ধু, বহিরাগত ওই যুবককে মারধর ও ছাত্রীটিকে ধমকধামক দিয়ে ধাক্কাধাক্কি করা হয় বলে অভিযোগ। ২৮ অগস্ট কী ঘটেছিল, তা নিয়ে আলোচনা করতে এ দিন ক্যাম্পাসে বৈঠকে বসেন একদল ছাত্রছাত্রী।
তবে ঘটনার তদন্ত কী ভাবে এগোবে, তা নিয়ে কিছুটা ধন্দে আইসিসি-র সদস্যেরা। কারণ, অভিযোগকারী ছাত্রী কাউকে চিহ্নিত করতে পারেননি বলে বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের খবর। ছাত্রীর বাবাও জানান, তাঁরা অভিযোগে কারও নাম উল্লেখ করেননি। এই সমস্যার সমাধান করতে পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করা হতে পারে বলেও বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের খবর।
শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় মঙ্গলবারই জানিয়েছিলেন, তিনি এই ঘটনার তদন্ত করে দোষীদের কঠোরতম শাস্তি দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে। বুধবার পার্থবাবু বলেন, “প্রয়োজনে বিশ্ববিদ্যালয়ের হস্টেলগুলির নিরাপত্তা আরও বাড়াতে হবে। এ ধরনের কোনও অভিযোগ এলে তা গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করতেও বলব কর্তৃপক্ষকে।”