ঠাসা: ছুটির দিনের ভিড় রবীন্দ্র সদন স্টেশনে। —নিজস্ব চিত্র।
বড়দিন থেকে ইংরেজি নববর্ষ— বছরের এই ক’টা দিন শহরের উত্তর থেকে দক্ষিণে নামে দর্শকদের ঢল। অথচ শহুরে পরিবহণের যে ‘লাইফলাইন’, সেই মেট্রো এই উৎসবের মরসুমে পরিষেবা বাড়ানোর দিক থেকে শত হস্ত দূরে। প্রতি বছরের মতো এ বারও ২৫ এবং ৩১ ডিসেম্বর ছুটির দিন বলে মাত্র ১৪টি করে অতিরিক্ত ট্রেন চালানোর কথা জানিয়েই দায় সেরেছেন মেট্রো কর্তৃপক্ষ। যা দেখে যাত্রীদের কটাক্ষ, কলকাতা মেট্রো আর সাবালক হল না। অন্তত ২৫ ডিসেম্বর তাঁরা রাত ১২টা পর্যন্ত ট্রেন চালাতে পারতেন।
মেট্রোর সদর দফতর যেখানে, সেই পার্ক স্ট্রিটই বড়দিনের মূল আকর্ষণ। কয়েক লক্ষ দর্শক সারা রাত ওখানেই ঘুরে বেড়ান। ভিড় হয় সকাল থেকেই। চিড়িখানা, ভিক্টোরিয়া, গঙ্গা সংলগ্ন বিভিন্ন উদ্যানগুলিতেও আছড়ে পড়ে ভিড়। গত বছর ২৫ ডিসেম্বর শুধু চিড়িয়াখানাতেই ভিড় হয়েছিল লক্ষাধিক মানুষের। কিন্তু সব দেখেও মেট্রোকর্তারা পড়ে রয়েছেন সেই তিমিরেই। তাঁরা জানান, বড়দিন ছুটি বলে ১৭৪টি ট্রেনের জায়গায় ১৮৮টি ট্রেন চালানো হবে। কিন্তু তা চলবে রাত ১০টা ১০ পর্যন্তই। তবে ৩১ ডিসেম্বর ট্রেন চলবে রাত ১২টা পর্যন্ত।
এই শহরে রোজ শিয়ালদহ দিয়ে প্রায় ২২ লক্ষ ও হাওড়া দিয়ে প্রায় ১৪ লক্ষ লোক যাতায়াত করেন। সপ্তাহান্তে তাঁরাই শহরতলি থেকে কলকাতা আসেন ছুটির আমেজ পোয়াতে। সেই জমায়েতই বেশি হয় ডিসেম্বরের ২৫ থেকে জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত। পুলিশ জানাচ্ছে, রবিবারই শহরতলি থেকে কলকাতায় যত দর্শক এসেছেন সেটাই তাদের আশঙ্কার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
একই অবস্থা হয়েছিল এ বছর মহালয়ার পরেই। এক দিকে পুজো দেখতে আসা দর্শনার্থীদের ভিড়, অন্য দিকে নিত্যযাত্রীদের— দুইয়ে মিলে সাধারণ যাত্রীদের চূড়ান্ত দুর্ভোগ হয়েছে। কিন্তু অভিযোগ, বারবার মেট্রো কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন জানানো হলেও তাঁরা দুপুর পর্যন্ত ট্রেন বন্ধ রেখে সারা রাত ট্রেন চালানোর কথা ঘোষণা করেছেন।
যাত্রীদের প্রশ্ন, রাতে ৬ ঘণ্টা ট্রেন চালাতে হবে বলে কেন সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত তা বন্ধ রাখা হবে? পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্ব রেলও সারা রাত ট্রেন চালায়। কিন্তু তার জন্য সকালে তারা ট্রেন বন্ধ রাখে না। তাঁদের অভিযোগ, মেট্রোর কর্মসংস্কৃতি যে পাল্টাবে না, এই সব দেখেই তা পরিষ্কার।