যৌন হেনস্থার অভিযোগ, তোলপাড় পুর মহল

পুরসভা সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার প্রকল্প ও উন্নয়ন দফতরের দুই সাব-অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার মেয়র পারিষদ (নিকাশি) তারক সিংহের ঘরে গিয়ে ওই ইঞ্জিনিয়ারের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগ জানান।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৬ জুন ২০১৮ ০৩:২৮
Share:

এক ইঞ্জিনিয়ারের বিরুদ্ধে দুই মহিলা সহকর্মীকে যৌন হেনস্থার অভিযোগ ঘিরে জট কলকাতা পুরসভায়।

Advertisement

যাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার পদমর্যাদার অধিকারী। অভিযোগকারিণীরা একই দফতরের সাব-অ্যাসিসট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার। পুর প্রশাসন সূত্রের খবর, অভিযোগ ওঠার পরেই ওই ইঞ্জিনিয়ারকে দফতর থেকে বদলি করা হয়েছে। যদিও এই অভিযোগের সত্যতা নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন।

পুরসভা সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার প্রকল্প ও উন্নয়ন দফতরের দুই সাব-অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার মেয়র পারিষদ (নিকাশি) তারক সিংহের ঘরে গিয়ে ওই ইঞ্জিনিয়ারের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগ জানান। তারকবাবু শুক্রবার জানান, এর পরে সংশ্লিষ্ট বিভাগের ডি জি, এক পদস্থ ইঞ্জিনিয়ার এবং অভিযুক্তকে ডাকা হয়। তাঁদের সামনেই ওই মহিলারা অশালীন আচরণ এবং মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ জানান। সবটা শোনার পরেও ওই ইঞ্জিনিয়ার কোনও কথা বলেননি বলে দাবি তারকবাবুর।

Advertisement

তবে যে দফতরের ইঞ্জিনিয়ারদের মধ্যে সমস্যা, তা মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়ের অধীনে। তারকবাবুর দফতর নয়। তা হলে ওই দুই মহিলার অভিযোগ শুনে অন্য দফতরের ডি জি পদমর্যাদার অফিসারকে ডেকে তিনি কেন তদন্তে নামলেন, প্রশ্ন উঠছে তা নিয়ে। তাঁর কাছে অভিযোগ এলেও তিনি তা সরাসরি পুর কমিশনারের কাছে কেন পাঠালেন না, সে প্রশ্নও উঠছে। তারকবাবুর বক্তব্য, ‘‘দুই মহিলা এসে কান্নাকাটি করে যৌন হেনস্থার অভিযোগ জানালেন। মেয়র পারিষদ হিসেবে চুপ থাকতে পারিনি।’’ মেয়র পারিষদ জানিয়েছেন, শুক্রবার ওই মহিলারা তাঁর কাছে যৌন হেনস্থা ও মানসিক নির্যাতনের লিখিত অভিযোগও দায়ের করেন। এর পরেই ওই ইঞ্জিনিয়ারের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য পুর কমিশনারকে জানান তিনি। ইতিমধ্যেই খবর আসে, অভিযুক্ত ইঞ্জিনিয়ারকে বদলি করা হয়েছে। কিন্তু কে সেই নির্দেশ দিল, তা নিয়ে শুরু হয়েছে জল্পনা। তারকবাবুর বক্তব্য, ‘‘ওই মহিলারা জানিয়েছেন, মেয়রের ঘরেও তাঁরা অভিযোগ জানাতে গিয়েছিলেন। মেয়র না থাকায় তাঁর ওএসডি-কে জানিয়েছিলেন। এর পরেই বদলির নির্দেশ বলে শুনেছি।’’ এ বিষয়ে মেয়রের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। ওই ওএসডি কিছু জানেন না বলে দাবি।

এ দিকে, বদলির খবরে ক্ষোভ বাড়ে পুরভবনে। একাংশের পাল্টা অভিযোগ, ওই মহিলারা সময়ে অফিস না আসায় হাজিরা খাতায় তা তুলে দেন অভিযুক্ত ইঞ্জিনিয়ার। সেটিই সূত্রপাত। ঘটনার প্রকৃত তদন্তের দাবি উঠেছে। বিষয়টি কর্মক্ষেত্রে যৌন হেনস্থার অভিযোগ জানানোর জন্য গঠিত বিশাখা কমিটিতেও গিয়েছে। কিন্তু পুরনো কমিটির কার্যকাল শেষ হয়েছে দিন দুই আগে। তাই কেউ এ নিয়ে মন্তব্য করতে চাননি। এক পুরকর্তা জানান, অভিযোগ এলে প্রথমেই দফতর থেকে সরানো হয়। এ ক্ষেত্রেও তা হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন