Human Rights Commission

মানবাধিকারের কর্তার বিরুদ্ধেই ‘অমানবিক’ কাজের অভিযোগ

করোনা সংক্রমণের সময়ে লোকাল ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকায় কমিশনের দু’জন কর্মী অফিসে আসতে পারেননি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ ডিসেম্বর ২০২০ ০৩:৩০
Share:

প্রতীকী চিত্র।

কোনও নাগরিক যাতে তাঁর প্রাপ্য অধিকার থেকে বঞ্চিত না হন, তা নিশ্চিত করার গুরুদায়িত্ব তাদের উপরে। অথচ, খোদ সেই মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধেই এ বার ভূরি ভূরি অভিযোগ।

Advertisement

করোনা সংক্রমণের সময়ে লোকাল ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকায় কমিশনের দু’জন কর্মী অফিসে আসতে পারেননি। অভিযোগ, সেই কারণে তাঁদের দু’মাসের বেতন কেটে নেওয়ার নির্দেশ দেন চেয়ারম্যান। শুধু তা-ই নয়, লকডাউন শিথিল হওয়ার পরে সরকারি ভাবে ২৫ শতাংশ হাজিরার বদলে ১০০ শতাংশ হাজিরা বাধ্যতামূলক করেছিলেন তিনি। কর্মীরা লিখিত ভাবে তার প্রতিবাদ করায় তা কমিয়ে ৫০ শতাংশ করেন চেয়ারম্যান। এ দিকে, দুই সহকর্মীর বেতন কেটে নেওয়ার নির্দেশ আসার পরে বাকি কর্মীরা বাধ্য হয়ে নিজেরাই ব্যবস্থা করে অফিসে আসতে শুরু করেন। চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে আরও অভিযোগ, কোভিড পরিস্থিতিতে অর্থ দফতরের নির্দেশ আংশিক পরিবর্তন করে তিনি ৯ জন স্টেনোগ্রাফারকে রোজ অফিসে আসতে বাধ্য করেছিলেন। এ-ও জানা গিয়েছে, কমিশনের এক কর্মী সম্প্রতি করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন। সুস্থ হয়ে কাজে যোগ দেওয়ার পরে এক দিন তিনি ফের অসুস্থ বোধ করেন। কিন্তু অভিযোগ, ওই দিনের জন্য ছুটি চাওয়ায় চেয়ারম্যান তা মঞ্জুর করেননি। উল্টে ওই কর্মীকে চাকরি থেকে বসিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেন।

এর পরেই চেয়ারম্যান গিরিশ গুপ্তের বিরুদ্ধে সরব হয়ে কর্মীরা পুরো বিষয়টি জানান রাজ্য সরকারি কর্মচারী সংগঠনের কোর কমিটিকে। একই সঙ্গে মানবাধিকার কমিশনের কর্মী সংগঠনের সম্পাদক দীপঙ্কর ঘোষাল চিঠি দিয়ে বিষয়টি মুখ্যমন্ত্রীর গোচরে আনেন। অন্য দিকে, কর্মীদের প্রতি চেয়ারম্যানের দৃষ্টিভঙ্গি অত্যন্ত অমানবিক জানিয়ে এবং অতিমারি পরিস্থিতিতে তিনি এমন কোনও নির্দেশ দিতে পারেন না বলে কোর কমিটির তরফে তাঁকে চিঠি দেওয়া হয়। তবে সেই চিঠির কোনও উত্তর চেয়ারম্যানের তরফে মেলেনি বলে জানিয়েছেন কোর কমিটির সদস্য সুজনবন্ধু ঘোষ। তিনি বলেন, ‘‘আমরা চেয়ারম্যানকে চিঠি দিয়েছিলাম। কিন্তু উত্তর পাইনি। যাঁদের উপরে সাধারণ মানুষের অধিকার রক্ষার দায়িত্ব, সেই কমিশনের চেয়ারম্যানই যদি এ ভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘন করেন, তা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক।’’

Advertisement

এতেই শেষ নয়। গিরিশবাবুর বিরুদ্ধে আরও অভিযোগ উঠেছে, কমিশনের যে সব কর্মী কর্মরত অবস্থায় মারা গিয়েছেন, তাঁদের স্ত্রী বা পরিবারের জন্য রাজ্য সরকার পেনশন, মৃত্যুকালীন সাহায্য ও স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে কিছু আর্থিক পরিষেবা দিতে প্রাথমিক অনুমোদন দিয়েছিল। কিন্তু তার চূড়ান্ত অনুমোদন বার করার জন্য চেয়ারম্যানকে বলা হলে তিনি বিষয়টিকে গুরুত্বই দেননি।

যদিও কর্মী সংগঠনের সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন গিরিশবাবু। তিনি বলেন, ‘‘কারও বেতন কাটা হয়েছে বলে আমার জানা নেই।’’ বরং কমিশনের কর্মীদের মধ্যে মাত্র ১০ শতাংশ লোক নিষ্ঠা সহকারে কাজ করেন বলে পাল্টা অভিযোগ করেছেন চেয়ারম্যান।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন